"দ্য ফ্রিজ"
-খালা ফ্রিজ থেকে মাছের পুটলাটা দিবেন?
-তোদের কবে যে আক্কেল জ্ঞান হইব!
বারবার ফ্রিজ খুললে কারেন্ট টানে বেশি জানস না?
রায়হান অসহায়ের মত খালার দিকে তাকিয়ে রইল।তিনি ভ্রু কুঞ্চিত করে এ ঘর ও ঘর করছেন।এটা ধরেন ওটা নাড়েন;ফ্রিজ খোলার নামটিও করছেন না।ওর কেমন লজ্জা লজ্জা লাগছে।
পড়শী খালা না,আপন খালা।
-খালা আমার অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে;মাছ নিয়ে গেলে আম্মা রান্না করবেন;অফিসে লাঞ্চ নিয়ে যাব।
খালা খটাস করে ফ্রিজ খুলে মাছের পুটলাটা রায়হানের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে
ঠাশ করে ফ্রিজের দরজা লাগিয়ে দিলেন!
লজ্জায় রায়হানের মরে যাওয়ার অবস্থা।
মাছের পুটলাটা হাতে নিয়ে অবশ দেহ টেনে টেনে বাসায় ফিরছে সে।
স্পষ্ট শুনতে পেল খালা বলছেন-'ঘোড়া দেখলে খোঁড়া বাড়ে'!
১৯৮৮ সালের প্রথম দিকের ঘটনা এটি।
রায়হানের তখনো বিয়ে হয়নি।
ফ্রিজ তখন অনেক দামী ও বিলাসী একটি পণ্য;অথচ এটি একটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হওয়া উচিৎ ছিল।
গরীবের একান্ত বন্ধু এই ফ্রিজ।খাবার নষ্ট হয়না,যাদের বিভিন্ন পদের ব্যাঞ্জন কিংবা দিনে একাধিকবার রান্নার সামর্থ্য নেই তারাই বুঝে ফ্রিজের মর্ম।
রায়হানদের এলাকায় হাতেগোনা যে দু'চার ঘরে ফ্রিজ আছে তাদের মধ্যে এই খালা একজন।
মাসে দেড় হাজার টাকা বেতনে কেরানীর চাকরি করা রায়হানের ফ্রিজ কেনার চিন্তা করাও এক আকাশ কুসুম কল্পনা।
এটি একটি প্রিমিয়াম পোস্ট।