পোস্টস

গল্প

অন্ধকারের বিচার

১১ জুন ২০২৪

জারিফ মাহমুদ

মূল লেখক জারিফ মাহমুদ

অনুবাদক জারিফ মাহমুদ

রাতের নির্জনতা ভেদ করে আইনজীবী শাহানের ফোন বেজে উঠল। ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত বারোটা। অপরিচিত নম্বর দেখে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত হলেও, শাহান ফোনটি ধরলেন। ওপার থেকে কাঁপা কণ্ঠে একজন নারী বললেন, "স্যার, আমার নাম মৌমিতা। আমি একটা সমস্যায় আছি, আপনার সাহায্য দরকার।
শাহান তৎক্ষণাৎ গাড়ি নিয়ে বের হলেন। মৌমিতা’র ঠিকানা পেয়ে সেখানে পৌঁছাতে খুব বেশি সময় লাগল না। একটানা বৃষ্টির মধ্যে, পুরনো একটি বাড়ির সামনে গিয়ে থামলেন। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কাঁপতে থাকা মৌমিতাকে দেখে শাহান কিছুটা চিন্তিত হলেন।
"বলেন, কী সমস্যা?" শাহান জিজ্ঞাসা করলেন। 
মৌমিতা ধীরে ধীরে তার কথা শুরু করলেন, "স্যার, আমার স্বামী মিহাদ একজন বড় ব্যবসায়ী। কিন্তু তার ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে চাচ্ছে। ওরা বলেছে, মিহাদ ঘুষ খেয়েছে এবং বেআইনীভাবে সম্পত্তি অর্জন করেছে।"
শাহান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, "আপনার স্বামীর প্রকৃত অবস্থা কী?" 
মৌমিতা চোখ মুছতে মুছতে বললেন, "স্যার, মিহাদ কিছুই করেনি। সে সৎ এবং ন্যায়পরায়ণ। কিন্তু ওরা প্রমাণ তৈরি করে দিয়েছে। পুলিশও তাদের পক্ষে।"
শাহান ভাবতে লাগলেন। তিনি জানতেন, এমন অনেক মিথ্যা মামলায় মানুষের জীবন নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু তিনি আশ্বাস দিলেন, "আমি সব ব্যবস্থা করবো। আপনার স্বামীর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবো।"
পরদিন, শাহান আদালতে হাজির হলেন। তার প্রমাণ সংগ্রহ এবং সাক্ষ্যদানের দক্ষতা দিয়ে তিনি বিচারকের সামনে তুলে ধরলেন মিহাদের পক্ষে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ। তিনি দেখিয়ে দিলেন, মিহাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা।
বিচারক সবকিছু শুনে বললেন, "আদালত প্রমাণ পেয়েছে যে, মিহাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আদালত মিহাদকে মুক্তি প্রদান করছে।"
মৌমিতা এবং মিহাদের চোখে আনন্দাশ্রু। তারা শাহানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। শাহান হাসিমুখে বললেন, "এই তো আমার কাজ। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে সেই হচ্ছে আমার পুরস্কার।"
অন্ধকারের মধ্যেও আলোর ঝলকানি দেখা দিল। ন্যায়বিচার আবারো তার জায়গা করে নিল।