Posts

পোস্ট

কায়রোর নীলচিঠি ও অন্যান্য .২

February 7, 2024

মুয়ায আবদুল্লাহ

Original Author মুয়ায আবদুল্লাহ

373
View
জ্বরপোড়া শরীর নিয়ে বিছানায় থ্যাবড়া মেরে থাকতে অসহ্য লাগে আজকাল। অষুধেও অনীহা বহুত। তাই পাথরচাপার মতো আফ্রিকান ঠান্ডা বুকে জমে থাকে। কিন্তু যাযাবরী হাওয়া একবার যাকে পেয়েছে—ঘর কখনো তার গন্তব্য হয়ে থাকেনি। দিনে দিনে পৃথিবীর আশ্চর্য সুন্দরের রহস্যই তার ঠিকানা হয়ে উঠেছে। 

চোখ বন্ধ করে ভাবেন—একটা শহর, যেটার প্রশাসনিক বয়স ১হাজার ৫৪ বছর। আরও পুবের দিকে এগিয়ে গেলে দেখবেন—প্রাচীন মিশরীয় ব্যাবিলন শহরটা কাছাকাছি কোথাও বয়স বাড়াচ্ছে। পশ্চিমে গেলে পাবেন ফারাও সাম্রাজ্যের রাজধানী—মেমফিস। মাঝ দিয়ে সরলস্রোতে বয়ে যাচ্ছে ইতিহাসের অগণিত উপাখ্যানের সাক্ষী—নীল নদ, যেটা বিশ্বের দীর্ঘতম নদ হিশেবে স্বীকৃত। 

চোখটা বন্ধই রাখেন। এতো দিক ঘুরে এখন যে শহরের দালানবাড়ি দেখছেন—এটাই কায়রো। দিনে লাগবে যে, ধুলাময়লায় কষ মেরে আছে, রাত নামলেই দেখবেন কী অদ্ভুত প্যানারোমা তৈরি হচ্ছে সোনালী আলোর ফ্রেমে। চোখ ধাঁধিয়ে নিবে অপেরা হাউসের ক্যারিশমেটিক আলোকসজ্জা। মিশর ভাবলেই শুধু পিরামিড চোখে ভাসে তো, এবার একটু ভিন্ন দৃষ্টিই দেন!

সংস্কৃতির প্রাচীনতম চর্চায়  থিয়েটার ছিলো মিশরীয়দের ব্যাপক আগ্রহের জায়গা। গ্রিকদের থেকে পাওয়া ক্লাসিক থিয়েটারের আধুনিক রূপায়ণ হয়েছিলো তাওফিক হাকিমের হাতে। আর আফ্রিকার সর্বপ্রাচীন থিয়েটার হলো সেই কায়রো অপেরা হাউস। এটারই আলো-সাজের দিকে পথ ভুলে তাকিয়ে থেকেছিলাম কতখন! 

কসরে নীল ধরে হেঁটে যেতেই দেখতে পাবেন অনেক ঘোড়ার গাড়ি। যুগলেরা হাসিহাসি মুখ নিয়ে পার হয়ে যাচ্ছে, কেউ বা লুকাতে চাইছে বয়সের ভাঁজ। তাহরীর স্কয়ারে অলস হাই তুলছে এক গাড়ি কালো পুলিশ। কে বলবে—একযুগ আগে এখানেই ঘটেছিলো হোসনি মোবারকের বিরুদ্ধে গণবিপ্লব! 

এতখন বন্ধ-চোখের কল্পনায় আমার সাথে ঘুরতে পারলেন? অনেক কিছু কিন্তু বাকি এখনও। এক নীল নদের পাড় ধরেই তো গড়ে উঠেছিলো প্রাচীন-আধুনিক মিশরীয় সভ্যতা। ১০০ বছরাধিক পুরোনো জাদুঘর, পাতাল মেট্রো, আতাবা'র একটুকরা  নীলক্ষেত বইপত্তর—সব তবে তোলা থাকলো অন্য কোনো সন্ধ্যার জন্য।

২১|১|২৪
কায়রো

Comments

    Please login to post comment. Login