পোস্টস

গল্প

উচ্চ বিদ্যালয় ৩

১২ জুন ২০২৪

মাসুদ হোসেন

মূল লেখক মাসুদ হোসেন

বাবা-মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান রাতুল। তার বয়স ছয় বছর। সে খুব শান্ত ও বিনয়ী। কয়দিন ধরে তার দু'চোখে কোন ঘুম নেই। সে এবার  নতুন বছরে, নতুন স্কুলে ভর্তি হবে। এই জন্য সে প্রতিদিন তার দাদুর কাছে জিজ্ঞাসা করে, ও দাদু! আব্বু আমাকে কবে নতুন স্কুলে ভর্তি করে দেবে? কবে কিনে দেবে নতুন স্কুল ব্যাগ, নতুন বই, খাতা আর কলম ? আমি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠে সুন্দর ভাবে সেজেগুজে স্কুলে যাব। নতুন স্কুলে গিয়ে নতুন বন্ধুবান্ধবীদের সাথে পড়ালেখার পাশাপাশি টিফিনের বিরতির সময় অনেক মজার করে খেলাধুলা করব। ক্লাস শেষে ছুটির ঘন্টা শুনে স্কুল ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমিয়ে হাসি মুখে বাড়িতে ফিরে আসব।

তখন দাদু রাতুলকে বলছে, দাদু ভাই! তোমাকে নিয়ে তোমার আব্বু, অনেক বড় স্বপ্ন মনের মাঝে পুষে রেখেছে। তোমাকে যে সুশিক্ষাই শিক্ষিত করার জন্য শহরাঞ্চলে ভালো মানের কোন একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাবে। এই জন্য তোমার আব্বু ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখেছে। এখনও যে ভালো মানের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাইনি। কেনো না, বর্তমানে শহরাঞ্চলে অলিতে গলিতে ব্যাঙের ছাতার মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠার গড়ে উঠেছে। সেই তুলনায় আজকে লেখাপড়ার মান তেমন উন্নতি হচ্ছে না। নৈতিক মূল্যবোধ তৈরি হচ্ছে না ছাত্রছাত্রীদের মাঝে।

বর্তমানে জমজমাট অর্থনৈতিক ব্যবসা গড়ে উঠেছে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে এবং ধর্মীয় শিক্ষা সম্পর্কে কোন জ্ঞান ঠিক মত সেখানে চর্চার করা হচ্ছে না। পড়ালেখার নামে শুধুই অর্থনৈতিক ফায়দা হাসিল করছে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

তবে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যে খারাপ তা নয়। কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে পড়ালেখার মান অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অনেক ভালো। যে সব প্রতিষ্ঠানগুলো ছাত্রছাত্রীদের বাংলা,অংক ,ইংরেজি বিষয়ে জ্ঞান দানের পাশাপাশি ধর্মীয় বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান দান করে থাকে। সকল ছাত্রছাত্রীদের সুশিক্ষাই শিক্ষিত করে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে।

যাহোক, আগে তোমার আব্বু বাড়িতে ফিরে আসুক। তারপর দুপুরে লাঞ্চের সময় তোমার নতুন স্কুল সম্পর্কে খাবার টেবিলে বসে তোমার আব্বু সাথে আলোচনা করা হবে। যদি ভালো মানের কোন স্কুল প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাই, তাহলে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে আমি ও তোমার আব্বু, তোমাকে অবশ্যই নতুন স্কুলে ভর্তি করে দিয়ে আসব। এদিকে দাদুর মুখে নতুন স্কুল সম্পর্কে গল্প শুনে রাতুল খুব খুশি হয়। আনন্দে নেচে উঠে তার অবুঝ মন। বিকাল বেলা খেলাধুলা করার সময় পাড়ার সব বন্ধুদের সাথে বলে বেড়ায় এবার আমি নতুন স্কুলে ভর্তি হব। সুশিক্ষাই শিক্ষিত হয়ে গবির-দুঃখী অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়াব‌। সুদ, ঘুষ আর দূর্নীতির কবল থেকে দেশকে রক্ষা করব।

এভাবে দিন যায় মাস যায় বেশ কিছুদিন খোঁজাখুঁজির পর রাতুলের আব্বু ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে মানসম্মত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সন্ধান খুঁজে পাই এবং তিনি রাতুলকে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে দেয়। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অনেক ভালো। পড়ালেখার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের শারীরিক চর্চার জন্য বিভিন্ন রকমের খেলাধুলা সেখানে করানো হয়।