Posts

গল্প

অদ্ভুত ৪

June 12, 2024

মাসুদ হোসেন

Original Author মাসুদ হোসেন

আনন্দ ঠিক করলো এই শনিবার পলাশপুর যাবে। তাই আনন্দ তার বন্ধু শুভ্র কে বলল: বন্ধু চল কাল পলাশপুর যাই।

শুভ্রঃ শনিবার না না, শনিবার আমি কোথাও যাবো না। আর পলাশ পুরের কথা বলছিস সেখানে তো যাবোই না।

আনন্দঃ কেন পলাশপুর যাবি না কেন কি হয়েছে?

শুভ্রঃ কেন তুই জানিস না, শনিবারটা অশুভ আর পলাশ পুর বেশ ভূতের উপদ্রব রয়েছে। তাই আমি শনিবার কোথাও যাবনা। আর তোকে বলছি তুই ও যাস না।

আনন্দঃ হা..হা ভূত! তুই ভুতের বিশ্বাস করিস, তুই জানিস না ভূত বলতে কিছু নেই। আমি ঠিকই যাব শনিবার। আমি ঠিকই পলাশপুর যাব।

শুভ্রঃ আচ্ছা তুই যখন ঠিক করেছিস যাবি তাহলে যাস। মনে রাখবি গাড়ি কোথাও থামাবিনা, এবং সাবধানে যাবি।

আনন্দঃ আচ্ছা সাবধানেই যাব। তাহলে আজকের মত বিদায়।
[শুভ্র ওখান থেকে চলে যায়]

শনিবার সকাল বেলা.......

আনন্দঃ শুভ্র টাও না, ওকে বলেছিলাম আসতে ও ভূতের ভয় আসেনাই যাহোক আমি যাই।

[আনন্দ গাড়িতে উঠে রওনা দিল]

(পলাশপুর বেশ দূরের রাস্তা তাই যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে)

আনন্দঃ অনেকক্ষণ ধরে গাড়ি চালাচ্ছি বেশ ক্ষুধা ও লেগেছে এবার না খেলে মনে হয় আর গাড়ি চালাতে পারব না। চারদিকে অন্ধকার, কোথাও কোন হোটেল দেখছিনা।

কিছুক্ষণ গাড়ি চালানোর পর.....

আনন্দঃ ও সামনে আলো দেখা যাচ্ছে মনে হয় ওটা একটা হোটেলে হবে, যাই ওখানে কিছু খেয়ে নেই। তারপর গাড়ি চালাবো।

[আনন্দ হোটেলের সামনে গিয়ে গাড়ি রাখল, এবং বলল কেউ আছেন, হোটেলে কেউ আছেন, তখনই সে হোটেল থেকে বেরিয়ে আসলো একটি লোক। সে পরিচয় দিল তার নাম রাজ সেন এখানে বেশ কতদিন ধরে কাজ করছে যা হোক তার খাওয়া-দাওয়া করা শেষে।]

আনন্দঃ বেশ দারুন হয়েছে তো খাবারটা।তুমি খুবই ভালো রাধতে পারো। এখন আমার যেতে হবে।

রাজ সেনঃ স্যার আপনি কোথায় যাবেন?

আনন্দঃ এইতো পলাশ পুর যাব।

রাজ সেনঃ স্যার আজকের রাতটা আমার এখানে থেকে গেলে হয় না, কালকে সকালে যাবেন।

আনন্দঃ না রাজ সেন আজকের থাকবো না চলে যাব।

রাজ সেনঃ স্যার সাবধানে গাড়ি চালাবেন, মনে রাখবেন সামনে বালু খোলার মাঠ আছে সেখান থেকে যাবেন না।এবং সেখান থেকে গেলেও কখন গাড়ি থামাবেন না। কারণ স্যার বালু খেলার মাঠে ভুত থাকে।

{আনন্দ হাসতে হাসতে গাড়িতে উঠে যাত্রা শুরু করলো}

আনন্দ গাড়ি চালাতে চালাতে হঠাৎ দেখতে পেল, সামনে একটি সাইনবোর্ড এবং সেখানে লেখা রয়েছে বালু খেলার মাঠ দিয়ে গেলে খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছানো যাবে। আনন্দ মনে করলো শর্টকাট দিয়ে গেলে খুব তাড়াতাড়ি চলে যাব। তাই আনন্দ বালু খেলার মাঠ দিয়ে যাত্রা শুরু করলো।]

[হঠাৎই আনন্দের গাড়ি থেমে গেল]

আনন্দঃ এই সময়ে গাড়িটির আবার কি হলো? দেখি নেমে কি হয়েছে।

নিজের উপরে রাগ হচ্ছে। এই মুহূর্তে গাড়িটির পানি শেষ হয়ে গেছে, এখন পানি পাই কোথায়? যাই একটু সামনে এগিয়ে দেখি পানি পাই কিনা।

[হঠাৎই দূর থেকে ভেসে এল একটি আওয়াজ। হাউ.. মাউ ..খাউ.. মানুষের গন্ধ পাও, হাউ... মাউ.. খাউ.. মানুষের গন্ধ পাও]

আনন্দঃ কে ও খানে? পারলে সামনে আয়।

[দুইটি ভূত ছিল। তখন একটি ভূত বলল আরে রাখত এই হাউ মাউ খাউ খুব পুরনো ভাষা হয়ে গেছে। চল সামনে গিয়ে দাঁড়ায় তাহলে হয়তো ভয় পাবে]

[আনন্দ কথা বলতে না বলতেই দুটো ভূত তার সামনে এসে হাজির]
[আনন্দ কিছুটা ভয় পেল]

প্রথম ভূতঃ এই মানুষের বাচ্চা, আমি তোর ঘাড় মটকাবো। তোর ঘাড় মটকে চিবিয়ে চিবিয়ে খাবো।

দ্বিতীয় ভূতঃ এই ঘার কিন্তু আমি মটকাবো এই বলে দিলাম।

প্রথম ভূতঃ আমি থাকতে তুই কেন ঘাড় মটকাবি। তোর থেকে আমি বেশি বড় এবং আমি বেশি শক্তিশালী তাই আমি ঘাড় মটকাবো।

দ্বিতীয় ভূতঃ আমি বেশি শক্তিশালী আমি ঘাড় মটকাবো। মানুষের বাচ্চাটাকে জিগাই তো দেখি ও কি বলে।

প্রথম ভূতঃ ওই.. মানুষের বাচ্চা বলতো আমাদের দুজনের ভিতরে শক্তিশালী কে?

[আনন্দ মনে মনে ভাবল এই সুযোগ কিছু একটা করে এখান থেকে পালিয়ে যেতে হবে]


আনন্দঃ হ্যাঁ আমি পারবো তোমাদের সমস্যা দূর করতে, তোমাদের ভিতরে কে বড় এবং কে ছোট আমি বের করতে পারবো। আমি যা বলব আমার কথা শুনবে। চলো আমার এই দুইটি বোতলে যে সবার আগে পানি ভরে আনতে পারবে সেই বিজয়ী হবে এবং সেই বড়।

[দুটো ভূত হাওয়ার বেগে পানি ভরে আনলো]

প্রথম ভূতঃ এবার বল তোকে সবচেয়ে শক্তিশালী?

আনন্দঃ আমি কিছু বুঝতেই পারিনি তোমরা এই গেলে আবার এই চলে আসলে। আমি তো কিছু বুঝতেই পারিনি। চলো আর একটা কাজ করি যে আমাকে এবং আমার গাড়িকে মেইন রোডে পৌঁছে দিতে পারবে সেই বিজয়ী।

প্রথম ভূতঃ হা..হা.. এটা তুই করতে পারবি না, কারণ তুই গাড়ি চালাতে পারিস না এটা তে আমিই জিতব।

দ্বিতীয় ভূতঃ আমি গাড়ি চালাতে পারি না তো কি হয়েছে? আমার বাইক আছে, আমি বাইকে করে ওকে নিয়ে যাব আর তুই গাড়ি টাকে নিয়ে যা, দেখব কে আগে যায়। ওই মানুষের বাচ্চা আমার বাইকে উঠ।

[দুইটা ভূত আবারো একসাথে মেইন রোডে আসল।]

আনন্দঃ আমি কিছু বুঝতে পারিনি তোমরা দুজনে একসাথেই আসলে।

দ্বিতীয় ভূতঃ এবার কি করা যায়?

আনন্দঃ তোমরা মানুষের মত কিছু করে দেখাও, এই যে আমি এখানে রেখা দিয়ে দিলাম। তোমরা এখান থেকে তোমাদের বালুর মাঠ পর্যন্ত যাবে এবং সেখান থেকে আবার এখানে আসবে মনে রাখবে মানুষের মত যাবে।

[ভূত দুটো মানুষের মতো করে দৌড়ানো শুরু করলো]

আনন্দঃ এই ফাঁকে চলে যাই।

[আনন্দ ওখান থেকে চলে যায়। কিছুদিন পলাশপুরে থেকে। তার বাসায় চলে আসলো এবং সে তার বন্ধু শুভ্র কে সব জানাল।]

শুভ্রঃ সত্যিই তোর অনেক বুদ্ধি। তোর যদি বুদ্ধি না থাকতো তাহলে তুই আর আসতে পারতি না। এবার তো বিশ্বাস হল ভূত আছে। আর শনিবার কোথাও যাবি?

আনন্দঃ আমার ঘাট হয়েছে, আমি বুঝতে পেরেছি। শনিবার আর আমি কোথাও যাবো না।

Comments

    Please login to post comment. Login