পোস্টস

গল্প

রোমান্টিক ২১

১২ জুন ২০২৪

মাসুদ হোসেন

মূল লেখক মাসুদ হোসেন


শীতের সকাল। কুয়াশার চাদরেরা যেন আমাকে ঘিরে রেখেছে, যেমন ঘিরে রেখেছে খুবই সূক্ষ্ম একটা আক্ষেপ।শীতের ভোর গুলো যেমন খুব শান্ত অথচ দৃঢ় ভাবে প্রকাশ ঘটায়, তেমনি আমার মনের ভেতর হতাশা গুলো জমে আছে। এদের তাড়িয়ে দিতে মন চায় না।তাকে প্রথমবার যখন দেখেছিলাম তখনও শীতের সকাল ছিলো।কুয়াশা ছিলো কি ছিলো না সে কথা মনে নেই।তবে দিব্যি মনে আছে তাকে কিছুটা আগ্রহ ভরে দেখছিলাম।শৈশবে যেমন বিদ্যালয় থেকে পাওয়া নতুন বইদের দেখতাম। বইগুলো অবশ্য একসময় পুরনো হয়ে যেতো,আগ্রহও হারিয়ে ফেলতাম।অথচ সে আমার কাছে নিত্যই নতুন রুপে নতুনভাবে ধরা দিতো।তাকে মন ভরে দেখার সাহস কখনো হয় নি।তাই স্বপ্নের ঘোরে হারিয়ে যেতাম মাঝে মাঝে। সেখানে কোন বাঁধা ধরা নিয়ম নেই,কারো মানা নেই।তবুও আমি স্বপ্নেও কখনো তার হাত ধরিনি।ভাবনাগুলো কেমন রুপকথার মতো লাগতো।কেমন যেনো একটা মায়াবী ভালো লাগা কাজ করতো তার প্রতি।এখনও করে।ক্লান্ত দুপুর যখন মধ্যরাতের নিরবতা বহন করে নিশ্চুপ হয়ে যায় তখন, তার সাথে কাটানো কিছু খন্ড চিত্র মনের অজান্তেই চোখের সামনে ভেসে উঠে।আজ এতোটা পথ সামনে এসেও তার কথা মনে পড়ে যায়।কখনো মন ভালো করে দেয়,কখনোবা বিষাদতায় আচ্ছন্ন হয়।কোন এক সময় কিঞ্চিৎ আশার আলো জলেছিলো,জোনাকির আলোর মতন। তাকে কাছে টানবো ভেবেছিলাম। স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলাম। জোনাকির ক্ষীণ আলো হারিয়ে যাওয়ার মতো সেগুলোও হারিয়ে গেছে আমার বাস্তব বাদী কিছু আদর্শের সামনে।লোকে বলতো সে নাকি হাসতে জানতো না।আসলে সে তেমন হাসতো না।আমি সৌভাগ্যবান। আমার জন্য সে হেসেছিলো।তার হাসি এতোটা সুন্দর ছিলে যে,দেয়ালচিত্রে বাঁধিয়ে রাখার মতো।আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় ছিলো তার এই হাসি। পরিমিত শব্দে এমন নিমল হাসি শিশুদেরই দেখা যায়।আফসোস, ইস যদি আঁকিয়ে হতাম তবে তার প্রত্যেকটা হাসির চিত্র এঁকে রাখতাম।ঐ যে শীতের কথা বলছিলাম।আমার জীবনের এই অধ্যায়টা জুড়ে শীতকালই থেকে গেছে। কখনো বসন্ত আসে নি।অবশ্য মাঝে মাঝে হাওয়া বয়েছিলো।নতুন সংবাদ, নতুন পরিবেশ হয় নি বলে উচ্ছাসও আসে নি।পাতা ঝরে পড়া গাছের মতোই শ্রীহীন এই অধ্যায়।হয়তো আমিও এমন বলেই সে কখনো নির্দিষ্ট গন্ডি পার আমার কাছে আসে নি।আমি তার মাঝে হারিয়েছিলাম, তবে মনের গহীনে ঢুকতে পারিনি। এখন আর হারাতে ইচ্ছে করে না।সে অধিকার অন্য কারো জন্য রেখে দিয়েছে। আমি না হয় সেই সকালটা নিয়েই খুশি থাকি।একজন নারীর কাছ থেকে আমি সম্মান পেয়েছি, তার বিশ্বাস অর্জন করেছিলাম। এটাও কম কি?তাও প্রিয় মানুষটার কাছ থেকে৷ পরিশেষে চাইবো সে সবসময় স্বাচ্ছন্দময় থাকুক, সুস্থ থাকুক।