Posts

গল্প

মজার ঘটনা ৫

June 13, 2024

মাসুদ হোসেন

Original Author মাসুদ হোসেন

ছোট মামার বিয়েটা ঠিক হয়ে গেছে। কোরবানী ঈদের ৪ দিন পর। খবর পেয়েই খুশি খুশি লাগছিলো আমার। এক তো মামার বিয়ে অন্যদিকে অনেকদিন পর নানাবাড়ি যাব।
যাব আমরা ৫ জন। বাবা, মা, ভাই, বোন আর আমি। বাবা ৪টা টিকিট কাটলেন (আমি পিচ্চি ছিলাম বলে কথা!! rasras)। ঈদের পরেরদিন আমরা মামাবাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। গিয়ে দেখলাম আন্টি আংকেল সবাই চলে এসেছে। এত সময় থাকতে আমরা আর কি করি! খালাতো ভাইদের ছোট দলটাকে নিয়ে খেলা লাগিয়ে দিলাম। বড় ভাই ও বোনেরা অনুস্থান সংক্রান্ত কাজ করতে ব্যাস্ত। দুইদিন মজা আর ফুর্তিতে চলে গেল। একই সাথে মামার গায়ে হলুদের দিন এসে গেল। ওই দিন আমার স্টেজে লেখা ছিল ( a) এর হলুদ সন্ধা।rasras
অনুষ্ঠান শুরু হলো রাত নয়টাই। কিন্তু স্টেইজে সন্ধ্যা লিখা হলো কোন দুঃখে তা বুজলাম না। হলুদ রাত লিখলেই তো হতো....! অনুষ্ঠান শেষ হলো রাত ১ টা বাজে। আমার মনে হয় গ্রামে এটা আমার সর্বোচ্চ রাত জাগা। নাহয় গ্রামে আমি ৮ টাই ঘুমিয়ে পড়তাম। (সেই কাল এখন শেষ। এখন রাত দেড়টা নাহলে চোখের পাতা বন্ধ হয় না)
অনুষ্ঠান শেষে যে যার জায়গায় শুয়ার জন্য গেল।ছোট একটা দল বাদে সবার ঘুমানোর জায়গা হয়ে গেল। ছোট দলটার মাজে আমিও পড়ে গেলাম। আমাদের কে পাঠিয়ে দেওয়া হলো মেজো আন্টির বাড়িতে।মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা। সেখানে আরামে একটা ঘুম দিলাম
ভাগ্যিস মামাবাড়িতে থাকলে চাপাচাপি করে থাকতে হতো!
ঘুম থেকে উঠেই মনে পড়ল আজ মামার বিয়ে।গোসল সেরে চলে এলাম বাড়িতে।এখান থেকে বরযাত্রী মানে আমরা যাব। মামাকে এক খালাতো ভাইয়ের সাথে কথা বলতে দেখলাম।
গতকাল দেখেছিলাম মামার মুখে চাপদাড়ি। আর আজ ক্লিন শেপ...!

আমাদের খালাতো ভাইদের পিচ্চি দলটাকে একটা গাড়িতে উঠাল বড় মামা। খালাতো ভাই ব্যাতিত আরও দুইজন আমাদের সাথে আছে। টুকু ও জুকু (ছদ্মনাম)। তারা মামার প্রতিবেশীর ছেলে। তবে কথা একটাই সবগুলাই এখানে পিচ্চি!
একটা কথা চিরন্তন সত্য যে গাড়িতে উঠলে (অনলি রিকশা ব্যাতিত) আমার বমি বমি ভাব হয়।লাস্ট যখন উঠেছি তখনও বমি করেছিলাম।
আলহামদুলিল্লাহ যাওয়ার পথে কোনো অঘটন ঘটে নাই। গিয়ে খাওয়া দাওয়া করলাম....! rasras বিয়েটাও হয়ে গেল। তারপর আমরা কয়েকজন মিলে ঘুরাঘুরি করতে লাগলাম।

বড় মামা আবার আমাদের জমায়েত করে এক আপু আর ভাইয়ের সাথে পাঠিয়ে দিলেন। ভাগ্যিস আর মিনিট দশেক থাকলে বৃষ্টিতে ভিজতে হতো।

গন্তব্যে পৌছাতে আর আর আধ সেকেন্ড বাকি।তখন জুকু বমি করে দিল। তার দেখাদেখি আরও কয়েকজন।বমিটা বোধহয় সংক্রামক তাই দেখলেই বমি এসে যায়। তখন আরও কয়েকজনের হলো।আমি প্রাণপনে চেষ্টা করছি আটকে রাখার জন্য যখম গাড়িটা থামল তখন আর আটকে রাখতে পারলাম না।একেবারে গাড়ির দরজায়। কিছুক্ষণ আগে থেকেই আমার মন যেন বলছিল,"দে বমি বাইরে ফালাইয়া!"

গাড়ির ভিতরে থাকা দু-তিন জন বাদে সবাই বমি করল। যারা করেনি তাদেরকে নোবেল প্রাইজ দেওয়া উচিত। দরজা খোলার সাথে সাথে আমরা এক লাফে গাড়ি থেকে বেড়িয়ে এলাম। বাইরে গিয়ে পেটের ভিতর অবশিষ্ট অংশটুকু বের করতে ভুললাম না... মানে বের হয়ে গেল আর কি! রাস্তায় যারা ছিল তারা আমাদের এই অবস্থা দেখে হাসছিল.... হাসাটাই স্বাভাবিক!
পিছনে একটা মসজিদ ছিল। সেখান থেকে হাত মুখ ধুয়ে হাসাহাসি করতে করতে বাড়িতে এলাম।
পরে জানতে পারলাম ড্রাইভারের নাকি আধ ঘন্টা লেগেছে গাড়ি পরিষ্কার করতে। ১৫ মিনিটের মধ্যেই বাকি যারা ছিল তারা সবাই এসে যায়।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~
প্রায় আড়াই বছর আগের কাহিনি! সেই দিনের কথা মনে হলে আজও আমার হাসি পায়....gjgjgj:laught::laught:

~~~~~~~~~`~~~~~~~~~
গল্প পড়ে কারও কান্না আসলে (বিশেষ করে বোকা হৃদয় ভাইয়া) টিস্যু ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো। আর না হয় কনুই আবৃত কাপড় দিয়ে চোখ মুছে নিতে পারেন। কিংবা কাপরের ( গেঞ্জি/শার্ট)নিম্ন অংশ দিয়ে। তারপরেও না হলে রুমের থাকা পাপুষ (শুদ্ধ শব্দটা জানি না) দিয়ে চোখ আলতো করে মুছে নিবেন! কেমন??

Comments

    Please login to post comment. Login