🍂 অজ্ঞাত এক ছায়ামূর্তি 🍂

একদিন হটাৎ বৃষ্টি নেমেছে, জোঁছনা রাতের বৃষ্টি;
পূর্ণিমার আলোয় বৃষ্টির ফোঁটা গুলো বড় অদ্ভুত দেখাচ্ছে। জানালা দিয়ে বাহিরে তাকাতেই হটাৎ চোখ পড়লো ; সামনের দোতালা বাড়িটার ছাদে কেউ একজন হাঁটছে! জোঁছনার ঝাপসা আলোয় বুঝতে পারলাম একটি নারীর অবয়ব!

            হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির সাথে খেলা করছে।
আমি অনুমান করলাম তার মুখের মিষ্টি হাসি, 
বৃষ্টির চঞ্চলতার মতই তার রুপ! 

এলো কেশ গুলো বাতাসের তরঙ্গে অপরুপ!

জল না চাইতেই যেমন বৃষ্টি, তেমনি জোঁছনার মাঝে ছায়া মূর্তি। হটাৎ ছায়াটা আমার দিকে তাকিয়ে শূণ্যে হারিয়ে গেলো! 

প্রতিদিন দোতালা বাড়িটার ছাদে চোখ রেখেছি;
কিন্তুু কেউ নেই, শূণ্য চারপাশ। আজ পেয়ারা গাছের পাতার ফাঁকে, জোঁছনার চাঁদ স্পন্দন জাগাবার মত। হঠাৎ মনে হলো কেউ আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে! তাকিয়ে দেখলাম সেই ছায়া মূর্তি; আমার দিকে তাকিয়ে আছে। 

আমি অবাক হলাম একটা শব্দ শুনে!

             অতন্দ্রিলা.....  আমি অতন্দ্রিলা.... 
ছায়া মূর্তি আমাকে বলছে সেও আমার মত জোঁছনা ভালোবাসে। আমি অনুমান করলাম তার মিষ্টি হাসি বাঁ পাশের মুখে ঠিক ঠোঁটের নিচেই কালো তিল। তার সৌন্দর্যে জোঁছনার আলো ঝিলমিল। সে উজ্জ্বল নয়, কিন্তুু মায়াবতী। 

           কেমন স্থির হয়ে আছে পৃথিবীর গতি।
আমি অতি সন্তর্পণে তাকিয়ে আছি ময়াবতী দর্পনে। চাঁদের সৌন্দর্যে কলঙ্ক আছে
কিন্তুু এ নারীর সৌন্দর্যে কোনো কলঙ্ক নেই।
আজ বাতাস স্তব্দ, তবু মনের আনাচে কোনাচে তরঙ্গ খেলে। সে আমাকে কিছু একটা বলে; 

কিন্তুু আমি বুঝতে পারি না।

                হটাৎ সে অদৃশ্য হয়ে যায়।

একদিন চাঁদের আলোয় কুয়াশা ভরা পথে হাঁটছি,
কিছুক্ষন পর আধো আধো উঞ্চতা অনুভব করি! 
ছায়া মূর্তিটা আমার সাথেই কুয়াশা ভরা পথে হাঁটছে, আমি অনুভব করলাম অতন্দ্রিলার আজ মন খারাপ। আমি আরো অনুভব করলাম
মেয়েটি যখন বিষণ আবেগে কাঁদে ; 
তখন তার জোড়া ভ্রুর টানা চোখ ছলছল করে জ্বলে, শব্দ করে কাঁদতে পারে না বলে ;

ঠোঁট জুগল কম্পিত হয় অগচরে। নিত্যান্ত সাধারণ তার চোখের ভাষা, কখনো হয়তো স্বপ্নে হবে যাওয়া আসা। হয়তো সে গান গাইতে পারে
তার কন্ঠ স্বর মিষ্টতার আবেশে জড়ায়; 
হৃদয়ের বিষাদ ভরা খড়ায়। আজ অনেক গুলো সময় কেটে গেছে, কত শত জোঁছনা রাত, সময়ের কক্ষপথে ভেসে গেছে ;

হাজার বছরের রাত, হাজার বছরের জোঁছনা, 

ঠিক অতন্দ্রিলার মতই অজ্ঞাত
    যার ছায়া দেখা যায়, অনুভব করা যায়
                কিন্তুু তাকে স্পর্শ করা যায় না।