পোস্টস

গল্প

অশরীরী ধর্ষণ

১৬ জুন ২০২৪

মোস্তাফা শিবলী

মূল লেখক মোস্তাফা শিবলী

 

বাসর ঘরে ঢুকেই দেখি স্ত্রীর অন্যের সাথে শারীরিক সম্পর্কের চিহ্ন স্পষ্ট ফুটে আছে। রুমে ঢুকে দেখি ফুলের বাসরে ফুলগুলো দু-একটা ছিড়ে শাড়িটা খোলা অবস্থায় শুয়ে আছে আর তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে কারো তার চিহ্ন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। বাসর ঘরে প্রবেশ করে আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল আমি কেমন মেয়ে বিয়ে করে এনেছি যে আমার সাথে বিয়ে করে আসার পরে অন্য কারো সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। বিয়ের প্রথম রাতে একটা ছেলের সাথে যদি এমন ঘটনা ঘটে কতটা মারাত্মক কষ্ট আর মানসম্মানের ব্যাপার সেটা শুধুমাত্র একটা ছেলে ভালো জানে। ওর নাম তাসমিন পরিবারের জোরাজুরিতে হুট করে সাত দিনের মাঝে ওর সাথে আমার বিয়ে হয়ে যায় আর আমি হলাম তামিম। রুমের মাঝে কেউ নেই খাটের উপর বসে আছে তাসনিমের দাদি যে কিনা আমাদের সাথে আমাদের বাড়িতে এসেছে। আশ্চর্য ব্যাপার তাসনিমের দাদি এগুলো দেখছে কিন্তু উনার মাঝে রকম কোনো খারাপ লাগা কাজ করছেনা। আর উনি হয়তো কিছু বুঝতে পারছে না কারণ উনি বয়সের ভারে নুয়ে পরেছেন হয়তো বোঝার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছেন। বাইরে কাউকে কিছু বললে মান-সম্মান যাবে তাই আমি দাদিকে বললাম দাদি আপনি বাইরে যান আর সুয়ে পড়ুন । উনি বাইরে চলে গেলেন।

আমি তাসনিমকে ডেকে তুললাম শুনুন উঠুন। আমার ডাক শুনে তাসনিম উঠলো উঠে তাড়াতাড়ি শাড়ি ঠিক করে কোমরে জড়িয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো। আমি বললাম যে এতটা নির্লজ্জ না হলেও পারতেন আপনার যদি কোথাও সম্পর্ক থেকে থাকে সেটা আপনি আপনার ফ্যামিলিতে জানাতে পারতেন কিন্তু আপনি সেটা না করে আমার সাথে বিয়ে করে এসে আমার ঘরের আমার সাথে সাজানো বাসর ঘরে আপনি অন্যের সাথে বাসর করলেন। তাসনিম আমার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে বলল একি আমার সাথে তো আপনি ছিলেন আর আপনি আমাকে এখন অপবাদ দিচ্ছেন। তাসনিম আমার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে আপনার কি আমাকে পছন্দ হয়নি আপনার যদি আমাকে পছন্দ না হয় তাহলে বলুন আমি চলে যাচ্ছি প্লিজ এভাবে আমাকে অপবাদ দেবেন না,,, আমার সতীত্বের উপর আঙ্গুল তুলবেন না। আপনি তো আমার কাছে এলেন আমাকে স্পর্শ করলেন নিজে আমার হাতে একটা আংটি পরিয়ে দিলেন। আমার সাথে শারীরিক মিলন করলেন আর এখন আপনি আমাকে অপবাদ দিচ্ছেন যেগুলো আপনি করেননি আমি অন্য কারো সাথে করেছি। আমি অবাক হয়ে তাসনিমের হাতে তাকিয়ে দেখি সত্যিই একটি আংটি আছে আশ্চর্য ব্যাপার এই আংটিতে তো আমিই তাসনিম এর জন্য বানিয়ে এনেছিলাম বাসরঘরে ওকে উপহার দেবে বলে এটা ওর আঙ্গুল কিভাবে গেল? আমি আমার পকেটে হাত দিয়ে দেখি আন্টির বক্সটা আছে দ্রুত আংটির বক্সটা খুলে দেখি ভিতর আংটি নেই। এখন এটা যদি পরিবারের মানুষকে বলতে যায় দোষারোপ সবাই আমাকে করবে কারণ ওই আংটিটা তো তাসনিমের হাতেই আছে। তাসনিম আমার পায়ের কাছে বসে আমার পা জড়িয়ে ধরে বলে প্লিজ আমাকে এত বড় অপবাদ দিয়ে তাড়িয়ে দেবেন না। আমি বুঝতে পারলাম আমার অজান্তে তাসনিমের সাথে কিছু একটা হয়েছে হয়তো বাড়িতে বিয়ে বাড়িতে অনেক মানুষ আছে তাদের মাঝে থেকে কেউ তাকে ধর্ষণ করে চলে গেছে কিন্তু সেটা বুঝতে পারিনি। যেহেতু আমার বাড়িতে এসে তার সাথে এমন ঘটনা ঘটেছে তাই তার কোন দোষ নেই আমি ব্যাপারটা বুঝতে দিলাম না। বললাম আরে আমি তো আমি মজা করেছি আমি ছিলাম তোমার সাথে।

কিন্তু কেউ ধর্ষণ করবে এমন কে আছে বাড়িতে কেউ তো উপরেই আসেনি। সারাক্ষণ তো সবাই নিচে ছিল ঘটনাটা কি ঘটেছে আমাকে বের করতে হবে। তাসনিম আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল প্লিজ এমন মজা আমার সাথে করবেন না আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আর আপনি আমার সাথে এমন হিংস্র জানোয়ারের মতো আচরণ আর করবেন না,,, তখন আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল আপনি নির্যাতন করছেন আমার সাথে কিন্তু আপনি আমার স্বামী বলে আমি কোনো প্রতিবাদ করতে পারছিলাম না। দেখুন এখন ও আমার শরীরে কত আঘাতের চিহ্ন। আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম তাসনিমের শরীরের বিভিন্ন অংশে নখের আচর বিভিন্ন চিহ্ন। আমি বুঝতে পারছি কোন জানোয়ার হায়েনা তাসনিমকে অত্যন্ত কষ্ট দিয়েছে কিন্তু কিভাবে বোঝাবো তাসনিম আমি তোমার স্বামী আমি অতটা জানোয়ার না। আমি তাসনিমকে বললাম আচ্ছা কিছুক্ষণ আগে আমি তোমার সাথে কি কি করেছিলাম তোমার কি মনে আছে। তাসনিম বলল হ্যাঁ মনে আছে আমি বললাম বলতো কি কি করেছিলাম তাসনিম বলল আপনি রুমে প্রবেশ করার আগে তো রুমের লাইটটা বন্ধ করে দিলেন। তারপর আমার কাছে আসলেন আমি আপনাকে সালাম করলাম কিন্তু আপনার পাদুটো এত ঠান্ডা বরফের মত ছিল আমি তো হাত দিয়ে চমকে গিয়েছিলাম,,, তারপর আপনি আমাকে বললেন ভয় পেয়ো না আমার পা এরকম ঠান্ডাই থাকে সবসময়। আর আপনি আপনার আন্টি আমার আঙুলে পরিয়ে দিলেন। জোরে ধাক্কা দিয়ে খাটের উপর ফেলে দিয়ে একটানে আপনি আমার শাড়ি খুলে নিয়ে আমার সাথে অত্যন্ত বাজে ধরনের ব্যবহার করেছেন অনেক অত্যাচার করেছেন যেটা আমি সহ্য করতে পারছিলাম না,, অনেক কাঁন্না পাচ্ছিল একটা সময় আমার জ্ঞান হারিয়ে যায়। তারপর জ্ঞান ফেরার পর দেখি আমার দাদি পাশে বসে আছে।

আমি আর রাতে কথা বাড়ালাম না কথা না বাড়িয়ে তাসনিমকে নিয়ে শুয়ে পড়লাম। মাঝরাতে তাজনিমের গায়ে হাত পড়তেই দেখি তাসনিমের পুরো শরীরে ঠান্ডা বরফের মতো আমিতো ভয় পেয়ে গেলাম তাসনিম কি মারা গেল নাকি। ওর শরীর এতটা ঠান্ডা বরফের মত হয়েছে কেন? এর কিছুক্ষণ পরেই আমি খেয়াল করি তাসনিম চিৎকার করছে প্লিজ আপনি আমাকে ছাড়ুন,, এরকম করলে আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে প্লিজ আর না আমি আর পারছি না। আমি অবাক হয়ে গেলাম তাসনিম এমন চিৎকার করছে কেন ঘুমের মাঝে কোন দুঃস্বপ্ন দেখছে। সন্ধ্যার ঘটনার জন্য আমার কাছে মনে হলো হয়তো সন্ধ্যায় যা কিছু হয়েছে তাই দুঃস্বপ্ন দেখছে আমি ডাকছি তাসনিম তাসনিম।

তাসনিম বলছে প্লিজ আমায় ছাড়ুন। হাত-পা ছোড়াছুড়ি করছে কিছুক্ষনের মাঝেই দেখলাম তাসনিমের হাত পা অবশ মত হয়ে আছে কিন্তু ওর মুখের অদল অনেক কষ্ট প্রকাশ করছে। হাত পা মনে হচ্ছে কেউ চেপে ধরে আছে,,, মুখভঙ্গি কিন্তু এখনো আগের মতই আছে প্লিজ আপনি আমাকে আর কষ্ট দেবেন না আপনি আমার স্বামী তাহলে আপনি আমাকে কেনো ধর্ষণের মতো অত্যাচার করছেন। আমার প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে। আমি খেয়াল করলাম গলায় একটা নখের আচড় বসিয়ে দিলো কেউ।সাথে সাথে রক্ত গড়িয়ে পড়লো।তাসনিমের ফর্সা হাতে কারো আঙুলের চিহ্ন ফুটে উঠছে।আমার চোখের সামনে এমন অশ্চর্য ঘটনা দেখে আমি ভয় পেয়ে গেলাম।

#চলবে