পোস্টস

উপন্যাস

ক্লিপ্টোম্যানিয়াক (২)

২০ জুন ২০২৪

রাজিয়া সুলতানা জেনি

আগের পর্ব

 

 

ছেলেটা হ্যাভারস্যাকটা কাঁধে নিয়ে বেশ স্মার্টলি বেরিয়ে গেল। দরজার কাছে যাওয়া পর্যন্ত ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ভেবেছিলাম, একবারের জন্য ফিরে তাকাবে। তাকালো না। ইগ্নোর করল? সেদিনের মতোই কি ব্যাপারটা আত্মসম্মানে লাগলো? নট সিওর।

তবে ছেলেটার সাথে আলাপ করতে পারলে খারাপ হত না। চুরি করার ব্যপারটা না ঘটলে কি করতাম জানি না, কিন্তু ওর এই ক্লিপ্টোম্যানিয়ার জন্য হঠাৎ করে ভেতর থেকে একটা আকর্ষণ ফিল করলাম। আচ্ছা, ছেলেটা কি এখানে প্রায়ই আসে? মনে হয় না। প্রতিদিন, একই জায়গায় এসে চুরি করা রিস্কি। আই থিংক… কি যা তা ভাবছি।

ঘড়ির দিকে তাকালাম। সাড়ে চারটা। আমার হাতে এখন দুটো অপশান। ওয়েটার মশাইকে জানিয়ে দেয়া, এই টেবিল আসলে আমাদের জন্যই রিজার্ভড। এরপরে ভদ্রতার খাতিরে একটা কফি অর্ডার করা অ্যান্ড ছ’টা পর্যন্ত ওয়েট করা। আর নয়তো…। দ্বিতীয়টাই বেটার হবে।

উঠে দাঁড়ালাম। এদিক ওদিক তাকালাম। নাহ, কেউ আমাকে লক্ষ্য করছে না। ওয়েটারগুলো নিজেরা গল্প করছে। ধীরে ধীরে কফি হাউজ থেকে বেরিয়ে আসলাম। ধানমন্ডির এই এলাকাটায় রাস্তার এক ধার দিয়ে বেশ কিছু দোকান। খাবার দাবারের, কসমেটিকসের, গিফট আইটেমের। টাইম পাসের জন্য গিফট আইটেমের দোকান বেস্ট হলেও এই মুহূর্তে মন চাইছে কোন বুটিকে ঢুকতে।

একটু এগিয়ে গেলে প্রায় প্রতিটা গলিতেই বেশ কিছু বুটিক আছে। আমার আবার কোন দোকানে ঢুকলেই একটা মধ্যবিত্ত সেন্টিমেন্ট কাজ করে। বেচারারা এতো কষ্ট করে ড্রেস দেখাচ্ছে, কিছু না কিনে বেরোই কি করে? না, ব্যাগ ভর্তি টাকা আছে এমন না, আবার একেবারে ফাঁকা, তা ও না। মোটামুটি টাইপের একটা ড্রেস কেনার টাকা আছে ব্যাগে।

তবে এই মুহূর্তে আমার প্রাইমারি ডিসিসান হচ্ছে, কিচ্ছু কিনব না। পুরোপুরি উইন্ডো না হলেও, ‘এই কালারের উপর অন্য ডিজাইন আছে?’ টাইপ শপিংও না। কোন ড্রেস দেখাতে বলব না। জাস্ট ঘুরে ঘুরে কালেকশানগুলো দেখব। আর… খুব পছন্দ হয়ে গেলে আর বাজেটে কুলালে…

শাড়ি পড়ে এসেছি। সো লম্বা সময় হাঁটা যাবে না। আর রিক্সা করে আর যা ই হোক বুটিক বুটিক ঘোরা যায় না। ঠিক করলাম প্রথম যে বুটিকটা চোখে পড়বে, সেটায় ঢুকে পড়ব।

রাস্তার পাশে ব্ল্যাক টি শার্ট পড়ে একটা ছেলে সিগারেট খাচ্ছে। একবারের জন্য মনে হয়েছিল, ঐ ছেলেটা নাকি? আরেকটু এগিয়ে গেলে চেহারাটা স্পষ্ট দেখা গেল। ঐ ব্যাটা না। কিন্তু ব্ল্যাক টিশার্ট আবার চোখের সামনে ভেসে উঠল। শুরু হল গেস ওয়ার্ক। চুরিটা কি ওর প্রফেশান? না সর্ট অফ ব্যাড হ্যাবিট? ভদ্র ফ্যামিলিরই তো মনে হল। একটা ফর্ক আর নাইফ কেনার মত পয়সা নিশ্চয়ই আছে। তাহলে? না কি ড্রাগ ট্রাগ নেয়? এসব বেচে… দূর কি সব ভাবছি।

আসলে ওর স্মাইলটা ভোগাচ্ছে। একদম ফটোকপি। সেই বাঁ গালে টোল। চোখে দুষ্টুমি।

সামনের দিকে তাকালাম। কিছুটা দুরে, ফুটপাথে একটা পুতুলকে ড্রেস পড়ানো আছে।  টিপিক্যাল বুটিক না। তারপরও, কাজ চলবে। আমার কেন জানি এধরনের দোকানে ঢুকতে ইচ্ছে করে না। একটু গলির ভেতরে, ছোট্ট, ঘরোয়া স্টাইলের বুটিকগুলো ভাল লাগে। অ্যাটলিস্ট আনকমন হওয়া গ্যারান্টেড। মাঝে মাঝে অদ্ভুত সুন্দর সব কালেকশান পাওয়া যায় এদের কাছে। সেটাও আবার একটা বা দুটো পিস।

এটা মনে হয় না সেরকম। যতদূর চোখ যাচ্ছে, সামনে আর কোন ড্রেসের দোকান দেখা যাচ্ছে না। তাই এগিয়ে গেলাম। দোকানটার কাছে এসে হতাশ হলাম। খুব কোয়ালিটি মনে হচ্ছে না। বাট আর হাঁটতে ভাল লাগছে না। তাছাড়া ঘণ্টা খানেকের ভেতর ফিরতেও হবে।

নামটা পড়লাম। মনামি। এটাতেই ঢুকব ঠিক করলাম। দোকানটা একটা টার্নিং এর মুখে। ঢুকতে যাব এমন সময় ব্যানারটা চোখে পড়ল। ‘প্রমি ফ্যাশান’। একটা বাড়ির সামনে ব্যানারটা টাঙ্গানো আছে। মনে হচ্ছে ঐ বাড়িটাতেই রয়েছে বুটিকটা।

 

বুকটা ধড়ফড় শুরু করে দিয়েছে। ‘প্রমি' শব্দটার জন্য। প্রেম হওয়ার পরে আমার নাম রেখেছিল প্রলয়। প্রমির পুরোটা হচ্ছে 'প্রলয়ের মিনু’। আমাদের দুজনের নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে তৈরি।

এমন না যে ‘প্রমি' শব্দটা আগে কখনও দেখিনি। কিন্তু আজ বোধহয় সব অঘটন ঘটার দিন। একটু আগে সেই স্মাইলের দেখা পেলাম আর এখন ‘প্রমি'। হ্যাঁচকা একটা টান আমাকে নয় বছর পেছনে নিয়ে গেল।

ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ার। হাওয়ায় উড়ে চলা জীবন। ক্লাস থাকুক আর না থাকুক, নেশার মত প্রতিদিন ইউনিভার্সিটি যাওয়া। ক্লাস ফাঁকি দেয়া। ক্যান্টিনে আড্ডা। রাস্তার ফুটপাথে বসে… কি জীবন ছিল! যত না পড়াশোনা করতাম তার চেয়ে বেশি চলতো অ্যানালাইসিস। কে কটা প্রেমের প্রস্তাব পেল থেকে শুরু করে কে কার সাথে প্রেম করে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করছে, এসব। আর কিছুটা অবসর হলে হয়তো হাফিজ স্যারের নোট ফটোকপি করা।

এর মাঝেই মেয়ে ক্লাসমেটরা একজন দুজন করে প্রেমে সাড়া দিচ্ছে। আমি তখনো কাউকে ‘হ্যাঁ' বলিনি। আসলে প্রস্তাবগুলোর কোনটাই মনে ধরেনি। দারুণ পাত্রের আশায় বসে আছি, ব্যাপারটা এমন না। আসলে আমি নিজেই জানতাম না আমি কি চাই। শুধু জানতাম, এমন একজন যার দিকে তাকিয়ে কিছু একটা অনুভূতি হবে। মনে হবে এ ছেলে আমার জন্যই তৈরি হয়েছে। টু রোমান্টিক অ্যা থট, আই নো। বাট বয়সটাও তো রোমান্স করার!

এভাবেই চলছিল। আমি ঠিক ঠোঁটকাটা টাইপ ছিলাম না, তবে লাজুকও ছিলাম না। বিভিন্ন বন্ধু বাধব মারফত আমার জন্য আসা অফারগুলোর ভেতরে অনেকগুলোকে যদিও সরাসরি ‘না' বলে দিয়েছিলাম, তবে কিছু কিছুকে ‘ভেবে দেখি’ বলে ঝুলিয়ে রাখছিলাম। আসলে প্রায় সবগুলোই, একেবারে এলেবেলে টাইপ ছিল। একেবারেই পাতে দেয়া যায় না। কেউ কেউ তো আবার প্রফেশনাল। এদের কাজই হচ্ছে ফার্স্ট ইয়ারের মেয়েদের জন্য অপেক্ষায় থাকা। আর প্রপোজ করা।

যাইহোক, ইউনিভার্সিটি লাইফ তখন অনেকটাই একঘেয়ে লাগতে শুরু করেছে। ক্লোজ বান্ধবীরা প্রেম করার পরে কেমন যেন পর হয়ে যাচ্ছে। সুযোগ পেলেই প্রেমিকের সাথে বেরিয়ে পড়ছে, একা একা গল্প করতে। আমরা কজন, যাদের এখনও প্রেম হয়নি, তারা কেমন যেন ওদের হিংসে করা শুরু করে দিয়েছি। এমন সময় একদিন ঘটল সেই ঘটনা।

সেদিন ক্যান্টিনে বসে চা খাচ্ছিলাম। বলা নেই কওয়া নেই, কোথা থেকে প্রলয় এসে দাঁড়াল আমাদের টেবিলের সামনে। সবাই আমরা উৎসুক হয়ে তাকালাম। ছেলেটাকে চিনি। চিনি, মানে রাস্তায় দেখেছি। কবিতা টবিতা লেখে। পাঞ্জাবি পড়ে ঘুরে বেড়ায়। ঘাড়ে একটা শান্তিনিকেতনি ব্যাগ থাকে। সেই কবে থেকে যে কবিদের এই কমন গেটাপ কে জানে?

কখনও একবারের বেশি দুবার তাকাবার প্রয়োজন মনে হয়নি। কেমন কবিতা লেখে তা জানবার শখও কখনও হয়নি। বাট ওয়ান থিং আই মাস্ট কনফেস, এই ব্যাটাকে কবির গেটাপটায় পারফেক্ট মানায়। এধরনের ছেলেগুলোকে দেখলেই মনে হয়, এখনি পঞ্চাশ টাকা ধার চাইবে। কিংবা আবেগে গদগদ হয়ে বলবে, ‘ঐখানে যেয়ো নাকো তুমি…'

সবাই আমরা তাকিয়ে আছি। প্রথমে ভেবেছিলাম আমাদের গ্রুপের কোন ছেলের কাছে কিছু চায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভুলটা ভাঙল। ছেলেটা সোজাসুজি আমার দিকে তাকিয়ে। কেমন হাসি পাচ্ছিল। তারপরও নিজেকে সামলে রেখেছিলাম।

— তোমার নাম মিনু?

সিওর হলাম। আমাকেই বলছে। উত্তরে ‘হ্যাঁ' বলেছিলাম, না মাথা নড করেছিলাম ঠিক মনে নেই, তবে পরের প্রশ্নটা মনে আছে।

— তোমার বাড়ী খুলনা?

খুব অল্প সময়ের জন্য চিন্তাটা মাথায় এসেছিল। এখানে এলাকা ভিত্তিক সমিতি আছে। সেখানেই হয়তো ইনক্লুড করতে চাইছে। তবে উনার ইনফর্মেশানে কিছুটা ভুল আছে। আমরা ঢাকায় আছি বছর ত্রিশেক। দেশের বাড়ী বলতে যদি কোন জেলা ধরতে হয়, তবে সেটা রাজশাহী। যথারীতি মাথা নেড়ে না বোঝালাম।

— আচ্ছা, থাকো।

কথাটা বলে মিষ্টি করে একটা স্মাইল দিল। এমন বোহেমিয়ান টাইপ ছেলের যে এতো চমৎকার একটা স্মাইল হতে পারে, কখনও ভাবিনি।

কথাগুলো বলে যেভাবে এসেছিল, সেভাবেই ফিরে গেল। দূরের আরেকটা টেবিলে ওদের ফ্রেন্ডগ্রুপ আড্ডা দিচ্ছিল। সেখানে গিয়ে একটা চেয়ারে বসল। ওখান থেকে আমাকে সরাসরি দেখা যাচ্ছে। সেজন্যই হয়তো বসল।

এমন সময় আমাদের টেবিলে সবার ভেতরে হাসির রোল পড়ে গেল। ‘কি পাগল রে বাবা?’ টাইপ অ্যাটিচুড সবার। আমি নিজেও বেশ অবাক হয়েছিলাম। তবে মাথায় ঘুরছিল অন্য একটা ব্যাপার। ‘কেন?' কাজটা কেন করল ছেলেটা? পরিচিত হতে চাওয়া? মনে তো হচ্ছে না। বন্ধুদের সাথে বাজি লেগেছে? পসিবল।

পাশে হিমেল বসে ছিল। জিজ্ঞেস করলাম

— চিনিস?

— কাকে? প্রলয় দাকে?

— উনার নাম প্রলয়?

— আসল নাম জানি না, ঐ নামে কবিতা লেখে।

— কেমন লেখে?

হিমেল বেশ শার্লক হোমস দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাল। এই দৃষ্টির মানে আমি জানি। এটাও বুঝতে পারছি এ ব্যাপারে প্রশ্ন চালিয়ে যাওয়ার কনসিকোয়েন্স। ধরে নেয়া হবে, এটা আমার তরফের গ্রিন সিগন্যাল। তারপরও নিজেকে রেজিস্ট করতে পারলাম না। প্রশ্নটা আবার করলাম

— বল না

হিমেল এবার বেশ শীতল দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাল। ওর চোখে একটা নোটিশ টাঙ্গানো। ‘তোর পিলিজ লাগে, আর যার সাথে কর, এই পাগলের সাথে প্রেম করিস না।' মুখে ছোট্ট করে শুধু বলল

— একটা পড়েছিলাম, কিছু বুঝিনি। তুই ও বুঝবি না। মহা আঁতেল কবি। তার উপর লেফটিস্ট। একেবারে কার্ল মার্ক্সের খালাতো ভাই।

কথাগুলো চুপচাপ শুনলাম। আড্ডা তখনো পুরদমে চলছে। আমি কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে গেছি। ব্যাপারটা হিমেল লক্ষ করল। এরপরে কিছুটা দয়া করেই কি না জানি না, নিজে থেকেই আরও কিছু তথ্য দিল

— তুই বুঝতে পারছিস না, মাথা কতোটা খারাপ হলে নিজের নতুন করে নাম রাখে। ছদ্মনাম না, রীতিমত এফিডেবিট করে নাম পাল্টিয়ে রেখেছে ‘প্রলয়'। উনি কবিতা লিখে প্রলয় আনবে, আর সেই প্রলয় শ্রেণীশত্রুদের ভাসিয়ে নিয়ে চলে যাবে।

— বই টই বেরিয়েছে?

— তুই কি সিরিয়াস নাকি?

— আরে বাবা বল না।

— পাগল? প্রকাশক মরবে? লিটিল ম্যাগে লেখে টেখে।

— আই সি

হিমেল কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকল। এরপরে বলল

— তোর হাবভাব কিন্তু সুবিধার লাগছে না।

উত্তরে কিছু না বলে কেবল কপট রাগ দেখানো ভঙ্গিমা করলাম। এর মাঝে বেশ কবার সামনের টেবিলের দিকে তাকিয়েছি। নিজের আমেজে গল্প করে যাচ্ছে বন্ধুদের সাথে। একবারও এই টেবিলের দিকে তাকাচ্ছে না। কেমন যেন মেজাজ গরম হচ্ছে।

— পড়বি? ওর ব্যাগ হাতড়ালে মনে হয় দু একটা কবিতা পাওয়া যাবে। যাবো খুঁজতে?

শেষের কথাটা খোঁচা। উত্তরে ‘হ্যাঁ' বলতে ইচ্ছে করলেও বললাম না। চুপ করে গেলাম। শেষবারের মত সামনের টেবিলের দিকে তাকালাম। নাহ, এদিকে তাকাবার কোন লক্ষণ নেই। নেক্সট ক্লাসের এখনও অনেক দেরী। আরও মিনিট পনেরো অনায়াসেই আড্ডা মারা যায়। কিন্তু আমার তখন অসহ্য লাগতে শুরু করেছে। ব্যাগটা ঘাড়ে নিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। সবাই এক বাক্যে ‘কি হল?’ বলে উঠল। শুধু হিমেল আমার দিকে নরম করে তাকিয়ে আলতো করে জানতে চাইল

— তুই কি ইন্টেরেস্টেড?

কপট একটা রাগ দেখাতে পারতাম। করলাম না। বরং হিমেলের দিকে বেশ নরম করে তাকালাম। ছোট্ট করে শুধু বললাম

— না। তবে মানুষটাকে ইন্টেরেস্টিং লাগছে।

— ঘোড়ার ডিম ইন্টেরেস্টিং। আমার ধারণা বন্ধুদের সাথে বাজি লেগেছে, তোর সাথে কথা বলতে হবে, তাই এসব ঢং করল

হিমেলের শেষের কথাটার সাথে আমিও একমত। এমনই কিছু হবে। সেটা নিয়ে আমার তেমন কোন আপত্তি নেই। রাগটা হচ্ছে অন্য কারণে।

শেষ বারের মত প্রলয়দের টেবিলের দিকে তাকালাম। এদিকে তাকাচ্ছে না। কেমন যেন আত্মসম্মানে লাগল।

দুম করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। আজ আর ক্লাস করব না। দাঁড়িয়েই ছিলাম এবার শুধু সবার দিকে তাকিয়ে কথাটা জানালাম।

— আমি বাসায় যাচ্ছি। আজ আর ক্লাস করব না।

সবাই ঠোঁট টিপে হাসল। তবে কেউ বাধা দিল না।

— মনে হচ্ছে আরেকটা উইকেট পড়বে।

হিমেল খুব নিচু স্বরে সবার উদ্দেশ্যে কথাটা বললেও আসল উদ্দেশ্য ছিল আমাকে শোনানো

এগিয়ে যেতে গিয়েও থেমে গেলাম। ধীরে ধীরে পিছনে ফিরে এলাম। হিমেল কিছুটা অ্যাপোলজির ভঙ্গিতে আমার দিকে তাকাল। ভেবেছিল গালি টালি দিব। সেটা না করে সুন্দর একটা স্মাইল দিয়ে শুধু বললাম

— পড়বে না, পড়ে গেছে।

 

চলবে