Posts

চিন্তা

শিক্ষা ক্রমে একটা নতুন বিষয় হিসেবে ‘নতুন কোন ভাষা শিক্ষা’যোগ করা হোক

June 20, 2024

Tania Haque


 

শিক্ষা ক্রমে একটা নতুন বিষয় হিসেবে ‘নতুন কোন ভাষা শিক্ষা’যোগ করা হোক


 

পৃথিবীর অন্যান্য দেশের স্কুলের দিকে যদি আমরা তাকায় তাহলে দেখা যাবে যে ছোটবেলা থেকেই তাদের শিক্ষাক্রমে তাদের নিজেদের দেশের ভাষায় শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন ভাষা শেখার সুযোগ থাকে। 

এই সুযোগ থাকার সবচাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে একজন ছাত্র বা ছাত্রী ক্লাস ওয়ান থেকে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত অর্থাৎ দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বা কখনো কখনো তার চাইতেও আরো বেশি সময়, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়েও একটা ভাষা শিখতে পারছে। যেটা ভবিষ্যতে ওই ছাত্র-ছাত্রী যখন অন্য কোন দেশে যাচ্ছে বা নিজ দেশে থেকেই যখন অন্য ভাষায় কোন কাজ করতে চাচ্ছে তখন খুব সহজেই তাদের যে ভাষাটা ইতোমধ্যে শেখা হয়েছে সেই ভাষা শেখার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অনেক নতুন নতুন কাজ পেতে সাহায্য করছে। 

অপরদিকে বাংলাদেশের শিক্ষা ক্রমের দিকে তাকালে দেখা যাবে যে আমাদের শিক্ষাক্রমে এ ধরনের কোন সুযোগ অতীতেও ছিল না, এখনো নেই, ভবিষ্যতেও আছে কিনা সেটাও আমাদের অজানা। 

অন্যদিকে যারা নিজ উদ্যোগে নতুন কোন ভাষা শিখতে চান তারা জীবনের এমন একটা সময়ে এসে নতুন ভাষা শেখাটা শুরু করেন যখন তাদের হাতে খুব বেশি সময় থাকে না। সাধারণত দেখা যায় যে অধিকাংশ বাংলাদেশী তিন থেকে ছয় মাস বা এক বছরের মধ্যে একটা ভাষা শিখে কোন একটা দেশে চলে যেতে চান। সে ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ঐ ভাষাটা কোনভাবেই ভালোভাবে শেখা বা ওই ভাষায় দক্ষতা অর্জন সম্ভব হয় না এত সীমিত সময়ে। এই কারণেই বাংলাদেশীরা তাদের কাঙ্খিত দেশে গিয়ে এই স্বল্প সময়ে শেখা ভাষা জ্ঞান দিয়ে ভালো কোন কাজেরও সুযোগ পায় না। 

অতীতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েরাই দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে যেত কিন্তু এখনকার চিত্র অন্যরকম। বাংলাদেশের চিত্র এখন বদলে গেছে। এখন মধ্যবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানেরাও বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি পেয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পড়াশোনা করতে যাচ্ছে। এছাড়াও কর্মী হিসেবেও অনেক বাংলাদেশী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রতিনিয়ত যাচ্ছে। আর এই ক্ষেত্রে তারা প্রথমে গিয়েই সবচেয়ে বড় যে অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকে সেটা হচ্ছে ভাষা জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা । ভাষা বাদে অন্য সব দক্ষতা থাকার পরও শুধুমাত্র সেই দেশের ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার কারণে তাদেরকে খুব কম মজুরীর কাজ করতে হয়। বড় কোন পোস্টে সাধারণত প্রাথমিক অবস্থায় তারা কাজ পায় না। অনেক সময় দেখা যায় যে অনেক কাজেই সরাসরি স্থানীয় জনগণের সাথে কথা বলার ব্যাপার থাকে  সুতরাং সেই দেশের ভাষা না জানা থাকলে ওই কাজে নিয়োগ দেওয়াও কর্তৃপক্ষের পক্ষে সম্ভব হয় না।


কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, বিষয়টাকে আমলে নিয়ে শিক্ষা ক্রমে নতুন ভাষা শেখানোর পাঠক্রম যোগ করার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি দরকার সেই ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। সবার আগে মাতৃভাষার শিক্ষাদানের পাশাপাশি নতুন ভাষা শেখানোর জন্য দক্ষ শিক্ষক গড়ে তুলুন। তারপরে একটা সর্বোত্তম ভাষা শেখানোর কোর্স  তৈরি করুন এবং শিক্ষাক্রমে সংযুক্ত করুন। 


 

Comments

    Please login to post comment. Login