আমরা যারা প্রকৃতির নিঃসঙ্গ সন্তান এবং স্বাভাবিক অর্থে আমাদের বেঁচে থাকার উপকরণে যেসকল বিষয় অস্তিত্ব রাখে তা কেবল নিজের, নিজের এবং নিজের জন্যেই অর্থপূর্ণ। সকলের জীবন সকলের মতো হতে পারে না, এতটুকু সহজ কথা কারো বোধগম্য নয় বলেই যে আমাদের বিচ্ছিন্নতাবোধে ফেলে রাখবে তা খুবই মর্মান্তিক। মানুষের জীবনযাপন আর জীবনযাত্রায় যা কিছু আছে তা আমাদের নিজেদের ভালো রাখারই একটি পন্থা। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই নিজেদের ভালো রাখার চেষ্টায় পুরো মানবজীবন ব্যয় করে। বরং, আমরা সারাজীবন ধরে যা করে থাকি, তা কেবল নিজেদের ভালো রাখার জন্যে এক ধরণের স্বার্থান্বেষী ভ্রমণ।
ভিন্ন চোখে পৃথিবীকে দেখার স্বাদ সকলেই আস্বাদন করতে পারে না। আমাদের জীবন ক্ষয়ে আসে না বা আমাদের জীবনের অপচয় হয় না; এমনকি আমাদের জীবন ফুরিয়েও আসে না। নিজেকে কেউ সুখী মনে করতে পারলেই নিজ জীবন অর্থবহ। জগতের বাকী মানুষের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থাকতেই পারে। একজন আরেকজনের জীবনে হস্তক্ষেপ করা আমাদের সময়ের সবচেয়ে খারাপ ব্যামোর একটি। নিজ জীবনের অসন্তুষ্টির কারণে, আমরা কারো ভালো থাকা নষ্ট করার অধিকার অন্তত রাখি না।
আমরা যারা প্রকৃতির নিঃসঙ্গ সন্তান এবং আমরা যারা নিজেদের জীবনে সব ধরণের আদিখ্যেতা বাদ দিয়ে বেঁচে আছি তা কেবল অনন্তের শূন্যতায় কিছুটা ভূমিকা রাখার অনুপ্রাস মাত্র। জীবন, ভালোবাসা, বাঁচা— এসবের অন্তরালে আমাদের যা কিছু আছে তা দায়বদ্ধতা নয়। নিজেকে অনেক দূরে নিয়ে যাওয়ার চেয়ে নিজের গন্তব্যে ফিরে আসার মধ্যেই প্রকৃত সার্থকতা। এই ভ্রমণ হোক শুধুমাত্র নিজের কাছে নিজের ফিরে আসার। পিছুটান অতিক্রম করে। ভালোবাসার পথ ধরে। বেঁচে থাকার সুবাদে।