আজকে আম্মুর সাথে কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছিলো। যে মানুষটা প্রতিটা দিন শুরু করেন আমাদের খবর নিয়ে, আমরা কী খাবো না খাবো, আমরা কখন স্কুল কলেজে অফিসে যাবো। আমাদের সকালের নাস্তা, আমাদের দুপুরের খাবার, রাতের খাবার, থালাবাসন, কাপড়চোপড় থেকে আরও জানি কতো কিছু, সেই মানুষটার খবর আমরা কখনো নিয়েছি কি? আমাদের এক এক দিন কতো ব্যস্ততায়, কতো ঝামেলায় কাটে। কলেজে যাই, যাতায়াত, খানাদানা, পড়াশোনা, টিচার, পরীক্ষা, বন্ধুবান্ধবদের সাথে মনোমালিন্য, প্রেমবিরহ, জীবনের কতো জটিলতা। আম্মুকে তো সারাদিন বাসায়ই দেখি। বাসায় আর কী সমস্যা। তারও কি কোনো দু:খকষ্ট, প্রতিদিনের জীবনযাপনের যাতনা আছে? ঘরে থাকা একজন মানুষের মনের খবর নেওয়ার প্রয়োজন কি আমরা অনুভব করি? সেটার দরকারও কি আছে? শোনার চেয়ে না শোনাটাই কি বেশি রহস্যময়?
আমি আম্মুকে জিজ্ঞেস করলাম,
‘আম্মু তোমার কোনো কষ্ট আছে, এই যে বাসায় থাকো, চাকরিবাকরি করে ক্যারিয়ার গড়োনি, মাস্টার্স পাশ করেও সংসারধর্ম করে গেছো, ভেতরে কোনো কষ্ট, দীর্ঘশ্বাস কি চাপা পড়ে আছে?'
আম্মু হাসলেন। আমার এই কথার জবাব দিলেন না। বুকশেলফ থেকে নিয়ে আসলেন কাহলিল জিবরানের বই ‘দ্য প্রফেট’। আচ্ছা, আম্মুও তবে কাহলিলে মজেছেন! আম্মু পড়লেন ‘On the Joy and Sorrow’:
‘এক নারী সবিনয় অনুরোধ করলো, 'আমাদেরকে সুখ-দুঃখ নিয়ে কিছু বলুন।’