পোস্টস

পোস্ট

আমার বন্ধু আবির

৩ জুলাই ২০২৪

Madhab Debnath

আজ অনেকদিন পর আবিরের সাথে দেখা হল, আবির আমার কাছের বন্ধুদের একজন। আবির ঢা.বির একজন তুখোর মেধাবী ও দেখতে অসম্ভব সুদর্শন ছাত্র ছিল। জন্মে মকর রাশির জাতক হলেও ওকে সেই রকম মেয়ে খোর বলা ভুল হবে কারণ আমি দেখেছি মেয়েরাই ওর পিছন ছাড়ত না। অবশ্য মেয়েরা পঙ্গপালের মত ওর জীবনে যেভাবে ঝাঁকে ঝাঁকে এসেছে আবার কিছুদিন বিচরণ করে ওর জমানো মধু নিয়ে আবার উড়েও গেছে। সংসারের চিরাচরিত নিয়মের মত স্থায়ী হয় নি কিছুই, বড় অগোছালো সব। যদিও না ছাড়ার পিছনে বিশেষ কারণ ছিল, ৯০এর দশকে বাড়ি থেকে মাসে ৫০০০ টাকা নিবার পরও তিনটি টিউশনি হতে মাসে হাতে আসত ১২০০০, সব মিলিয়ে ১৭০০০ টাকা যার অধিকাংশ ব্যয় করত মেয়েদের পিছনে। ঐ সময়ে গুটি কয়েক জনের মত ওর কাছেও মোবাইল ছিল। পড়া - লেখা বাদ দিয়ে সারা দিন রাতের ওর প্রধান কাজ হয়ে দাড়াঁলো মোবাইলে মেয়েদের সাথে কথা বলা মানে সারা দিনরাত মোবাইলে গুজুর গুজুর, ফুসুর ফুসুর। ওর মোবাইলে মেয়েদের সাথে কথা বলতে দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে পাশের রুমের উত্তরবঙ্গের সিনিয়র অজয়দা ও একটা মোবাইল কিনে কিন্তুু অজয়দার মোবাইলে সারা দিনরাতে একটি ফোন না আসার কারণে তুমুল মারামারি ......মারামারির সুত্রপাত হয়, আবিরের সারা দিন রাত মোবাইলে কথা অজয়দা বিশ্বাস করত না। অজয়দা ক্যাম্পাসে বলে বেড়াতে লাগল যে, আবির যে মোবাইলে কথা বলে তা ভুয়া ও শুধু কানে মোবাইল নিয়ে শুধু ভাব করে। এই কথা এ কান, ও কান হয়ে আবিরের কানে আসে। একদিন আবির ফোনে কথা বলছে, এই দেখে অজয়দা আবিরের মোবাইলে ফোন দেয় যাচাই করার জন্য যে সে কথা বলছে কিনা, এ নিয়েই ঝগড়ার সুত্রপাত। মূল কথায় আসি, এই মেয়েদের নিয়েই যত কাহিনী আর আজ আবিরের এই দুর্দশা আজ আবির পথের ফকির।

আবির প্রত্যেক মেয়েদের সাথে সম্পর্কের কথা ডায়েরিতে লিখে রাখত আর মাঝে দুই একটা ঘটনা আমার সাথে বলত। অনার্স পড়াকালীন সময়ে ৩৫০ এর অধিক মেয়ের সাথে সম্পর্ক পার করার কথা শুনেছিলাম। কোথাও বেড়াতে গেলে একজন না একজন সাথে থাকতই। যে আবির মাসে কমপক্ষে চারবার মেয়ে বান্ধবীসহ সিলেট নয়ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বেড়াতে যেত আর আজ সে নাকি নিজের সন্তানের খাবার যোগাড় করতে পারে না, কি নির্মম বাস্তবতা!

প্রথমে আসি রিপা প্রসঙ্গে, রিপা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মেধাবী ছাত্রী। শ্যামবর্ণা, দীঘল চুলের অধীকারী। আবিরের সিনিয়র রতন ভাইয়ের মাধ্যমে আবিরের সাথে পরিচয় হয় রিপার। বছর খানেক চুটিয়ে প্রেম চলার পর এক পর্যায়ে রিপার চাপে, রিপার দেয়া টাকায় কোর্ট ম্যারিজ করতে বাধ্য হয় আবির। যদিও ওদের বিবাহিত জীবনের ইতি ঐ রাতেই, অজানা কারনে! আবিরের সাথে আর রিপার আর কোন দিনই দেখা হয় নি। আবির কয়েকবার চেষ্টা করেছিলো রিপার সাথে দেখা করতে কিন্তুু কেন জানি রিপা ওর সাথে আর দেখা করেনি।