পোস্টস

সমালোচনা

" শিক্ষা ব্যবস্থা এবং হতাশাগ্রস্ত ছাত্র সমাজ "

৫ জুলাই ২০২৪

রেজওয়ান আহম্মেদ

এইযে প্রগতিশীল প্রগতিশীল বলে কিছু মানুষ দিনরাত মাথা খুঁড়ে মরে আসলে কোথায় প্রগতি? 
প্রগতি হিসেবে আমি দেখতে পাচ্ছি ২৫ লাখের অধিক বেকার জনগোষ্ঠী, প্রগতি হিসেবে দেখতে পাচ্ছি  বাংলাদেশে স্নাতক পাশ বেকারের সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ, মোট বেকারের ১২ শতাংশ  উচ্চ শিক্ষিত, যাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তাদের বেকারত্বের হার মাত্র ১.০৭ শতাংশ। প্রতি বছর বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থী গ্রাজুয়েট হচ্ছে বিপরীতে কতজন চাকরি প্রার্থী চাকরির আসন পাচ্ছে?  
সরকারি /বেসরকারি শূণ্যপদের আসন সংখ্যা থেকে চাকরি প্রার্থীদের সংখ্যা প্রতি বছরই দ্বিগুণ/তিনগুণ হারে বাড়ছে! বেসামাল চাকরি বাজার।

দেশে অনেক গ্রাজুয়েট তৈরী হচ্ছে ; কিন্তু কোনো
কর্মী তৈরী হচ্ছে না।

কারণ আমাদের পড়াশোনার যে ধরণ তা আমাদের শেখায় কেমন করে কেবল ফার্স্ট হওয়া যায়, কেমন করে শুধু ডাক্তার/ ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায়, কেমন করে শুধু তিন চার বছর বিসিএস এর পেছনে সময় ব্যায় করা যায়।

" আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ছাত্র সমাজের Potentiality বা সম্ভবনা নষ্ট করে দিচ্ছে। হতাশাগ্রস্ত একটি জাতি তৈরী করছে আমাদের এই শিক্ষাব্যবস্থা "

একটু ভেবে দেখুন তো দুই থেকে আড়াই হাজার শূণ্য পদের জন্য বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে চার থেকে পাঁচ লক্ষ প্রার্থী। অর্থাৎ একটি আসনের বিপরীতে গড়ে প্রায় ২২০ জন পরীক্ষা দিচ্ছেন! চূড়ান্ত বাছাই পর্বে ২০০০-২৫০০ হাজার প্রার্থী চাকরির জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হবেন বাকি ৪৯৮০০০ হাজার শিক্ষার্থীদের কাছে দুটো অপশন :
☞ হয় পুনরায় বিসিএসের জন্য আরো একটি বছর প্রস্তুতি নিবেন।
☞ নয়তো যারা বিসিএস বিসিএস করে তিন-চার বছর এবং চাকরির বয়স হারিয়েছেন তারা নামমাত্র কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা অথবা ব্যর্থতা বরণ করে সমাজে নিষ্পেষিত হওয়া।

স্নাতক অথবা স্নাতকোত্তর শেষ করে কোনো ফ্রেশার যদি চাকরি বাজারে নামেন তাহলে তার কপালে চাকরি জুটছে নাহ কারণ জনগনের টাকা মেরে খাওয়া বড় বড় এইসব কোম্পানি দুই/তিন বছরের যোগ্যতা ছাড়া চাকরিতে নিয়োগ দিচ্ছে না। সেই ফ্রেশাররাই চাকরি পাচ্ছে যাদের উচ্চ মহলে সংযোগ আছে অথবা নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয়ের  লোগো আছে। 
শিক্ষিত সমাজের বড় একটি অংশ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, নিষ্পেষিত হচ্ছে শিক্ষার অনৈতিক অকার্যকর মূল্যায়ন ব্যবস্থার কারণে। 
উচ্চবিত্ত সমাজ আর নিম্নবিত্ত সমাজের মানুষ তো বেঁচে যাচ্ছে শিক্ষা এবং চাকরির এই অসামঞ্জস্য পূর্ণ অবস্থা থেকে কিন্তুু মধ্যবিত্ত শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পিষ্ট হচ্ছে শিক্ষার এই অনৈতিক দিক থেকে।

" শুনতে অবাক লাগলেও সত্য হচ্ছে শিক্ষা এবং চিকিৎসা যখন পুঁজিবাদী বিশ্বে পুঁজিবাদীদের ব্যবসার খোরাক  তখন আর যাই হোক শিক্ষা এবং চিকিৎসা নৈতিক হতে পারে নাহ অথবা ছাত্র সমাজে নৈতিক মূল্যবোধ তৈরী করতে পারে না "

পরিবার, সরকার এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচিত ছাত্রদের  মাঝে শুধু  হতাশার বীজ বপন না করে কিভাবে পড়াশোনার পাশাপাশি আত্ম উন্নয়ন করা যায়, কিভাবে আত্মকর্মসংস্থান মুখী ছাত্র সমাজ গঠন করা যায়, কিভাবে পড়াশোনার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা বাড়ানো যায় এসব দিকে দৃষ্টি দেওয়া।
শুধু ডাক্তার / ইঞ্জিনিয়ার/ বিসিএস/ সরকারি চাকুরী পেছনে ছুটলে দেশে আর যাইহোক আত্মনির্ভরশীল সমাজ গড়ে উঠবে নাহ, বেকারত্বের হার কমবে নাহ, ছাত্র সমাজের হাত ধরে যে অপার সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ রয়েছে তা উজ্জ্বল হবে নাহ।

" দেশে বস্তা ভর্তি শুধু  ডাক্তার/ ইঞ্জিনিয়ার আর ক্যাডার তৈরী হচ্ছে কিন্তুু দূর্নীতি কমছে না। 
ছাত্র সমাজের সম্ভবনা গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে 
অসুস্থ এই প্রতিযোগিতার মাঝে "