চেতনা কে লালন করে আপনি একজন দেশপ্রেমিক হয়ে উঠবেন ঠিকই কিন্তুু ইসলাম কে লালন করে যদি আপনি খাঁটি মুসলিম হতে না পারেন তবে আপনার চেয়ে দূর্ভাগা আর কে হতে পারে?
বাঙ্গালী জাতি বড় কঠিন জিনিস!
জাতির দিক থেকে আমরা সংকর জাতি, আচরণগত দিক থেকেও যে আমরা সংকর জাতি তার প্রমাণ রেখেছি । লক্ষ্য যদি একও হয়, হাজার প্রচেষ্টা করলেও হয়তো আমরা বাঙালীরা কখনো একটি সিন্ধান্তে অথবা একটি মতামতে অধিষ্ঠিত হতে পারবো না। দলাদলি, মতের বিরোধ, মারামারি-হানাহানি, যুদ্ধ-বিগ্রহ এইসব আমাদের মাঝে বিরাজ করবেই।
বেশকিছু দিন ধরে এবং বর্তমানে সামাজিক গণমাধ্যমে এবং সংবাদপত্রে ইন্ডিয়ার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কে নিয়ে বাংলাদেশের মুসলিম সমাজ এবং রাজনৈতিক সমাজের মাঝে যে দ্বন্দ্ব পরিলক্ষিত হচ্ছে তার প্রেক্ষাপট টেনে কিছু কথা বলতে চাই -
শান্তিপূর্ণ আন্দোলন থেকে হঠাৎ বায়তুল মোকাররম মসজিদে একদল ষড়যন্ত্রকারী মুসলিম ভাইদের উপর আক্রমণ করলে সৃষ্টি হয়ে যায় এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তারপর ব্রাহ্মণ বাড়িয়া জেলা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মোটামুটি সব জায়গায় আপামর মুসলিম জনতা বিশেষ করে মাদ্রাসার ভায়েরা রাজপথে নেমেছেন নিজের দ্বীনের দাবী প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
হঠাৎ করেই একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম; যখনই আমাদের মুসলিম ভায়েরা অথবা মাদ্রাসা লাইনের টুপি পাঞ্জাবি পরা ভায়েরা দীনের দাবী প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজপথে নেমেছেন ঠিক তখনই কিছু শিক্ষিত জনগোষ্ঠী অথবা আরও ভালো করে বলতে গেলে যারা নিজেদের কে শিক্ষিত এবং মর্ডান বলে দাবি করেন এই জনগোষ্ঠী হঠাৎ করেই সোচ্চার হয়ে উঠেন, হঠাৎ করেই মানবতার আদলে মানবিক হয়ে উঠেন। অথচ দেশে যখন সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা লুটপাট চালায়, রক্তাক্ত করে রাজপথ, ভাংচুর করে জনগণের সম্পদ তখন ঐ যে তথাকথিত শিক্ষিত ভায়েরা চুপ করে দর্শক সেজে দৃশ্যপট দেখেন। তখন তাদের মানবতা জাগ্রত হয়না।
কিছু সাংস্কৃতিক মুক্তমনা ভাই-বোনেরা এবং সরকার দলীয় নেতা-কর্মী ভায়েরা এবং কিছু তথাকথিত শিক্ষিত পাবলিক ফেসবুক, মাই ডে ভাসিয়ে ফেলেন নানা রকম মানবতার পোষ্ট দিয়ে। অনেকে আবার ঘেঁটে ঘেঁটে তাদের সুবিধা অনুযায়ী কোরআন-হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে জনগণ কে বিভ্রান্তিতে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তুু এই পাবলিক গুলোই নিশ্চুপ থাকে যখন কিনা বাংলাদেশে অথবা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে মুসলিম ভাই-বোনেরা নিপীড়িত এবং গণহত্যার শিকার হয়। তখন এই তথাকথিত শিক্ষিত ভাই-বোন, সাংস্কৃতিক মুক্তমনা এবং সাধারণ পাবলিকের মানবতা খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। আসল সমস্যা হচ্ছে উপরোক্ত ভাই-বোনদের চুলকানি অথবা মানবিকতা জেগে উঠে যখন কিনা টুপি পাঞ্জাবি পরা ভায়েরা দীন প্রতিষ্ঠা করার জন্য আওয়াজ তোলে।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে স্কুলের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আন্দোলন করলে সেটা ভালো লেগেছে, মাদরাসার অল্প বয়সী ছাত্ররা আন্দোলন করলে আপনার সহ্য হচ্ছে না!
গুলি করে মানুষ মারা হচ্ছে এটা নিয়ে আপনার প্রতিবাদ নাই, রাস্তায় কেনো আগুন দেওয়া হলো এটা নিয়ে আপনি খুব চেতেছেন!
মসজিদে হামলা হলে আপনি পুলকিত হন, অথচ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সামনে আগুন দিলে আপনার কলিজা ছিড়ে যায়!
আমার ভাই-বোনদের বলছি... কোনো দল-জাতি-গোষ্ঠি-সম্প্রদায় আপনাকে জান্নাতে নিতে পারবে না তবে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দিলেও দিতে পারে।
ভায়েরা আমার ধর্মে নয়; কর্মেও মুসলিম হও।