Posts

প্রবন্ধ

" নগ্নতা ও সভ্যতা এবং পোশাক "

July 7, 2024

রেজওয়ান আহম্মেদ

94
View


নগ্নতা ও সভ্যতা একে অপরের বিপরীত হলেও একটি শব্দের থেকে আরেকটি শব্দের যে বিবর্তন, তার পরিধি ব্যাপক। নগ্নতা তো আমরা সবাই বুঝি কিন্তুু সভ্যতা?

সভ্যতা বলতে শুধু আগুন আবিষ্কার কে বোঝায় না, সভ্যতা বোঝায় দিনে দিনে মানুষের চিন্তাধারা ও মননের ব্যাপকতা। যা মানুষকে আদিম ও বর্বর থেকে করেছে সুশীল, সুন্দর এবং সমৃদ্ধশালী।
সভ্যতার এক বড় নির্দশন হচ্ছে পোশাক।
মানুষ বিবর্তিত হয়েছে, বিবর্তিত হয়েছে তার পোশাক। পোশাক মানুষের লজ্জা নিবারণ করেছে মানুষকে করেছে সৌন্দর্য মন্ডিত। 
কিন্তুু বর্তমান সমাজে আমরা অনেকেই এমন পোশাকে নিজেকে আবৃত করি যা অত্যান্ত লজ্জাজনক এবং পোশাকের নামান্তর মাত্র।
পোশাক ব্যক্তিত্ব, আভিজাত্য, লজ্জাশীলতা ও সভ্যতার পরিচায়ক। মানুষ পোশাক পরিধানের তাগিদ অনুভব করেছিলো সেই আদিম কাল থেকেই।
মানুষ বিবস্ত্র হয়ে জন্মগ্রহন করে কিন্তুু নগ্নতার চাদর ছুড়ে ফেলে খুব শিগ্রই মানুষ নিজেকে পোশাকের আবরণে ঢেকে ফেলে।
⭕ মানুষের এ চেতনাবোধ স্বভাবজাত। ইসলাম মানুষের স্বভাজাত ধর্ম।

#ইসলামে_পোশাক_পরিধানের_ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। 
⭕ফিকাহশাস্ত্রের সুপ্রসিদ্ধ গ্রন্থ - রদ্দুল মোতাহারে বলা হয়েছে - পোশাক তাকেই বলা হয় যা লজ্জাস্থান কে ঢেকে রাখে। নূন্যতম এতটুকু পরিমান পোশাক পরিধান করা ফরজ। 
আল কোরআনে বলা হয়েছে - এ পোশাক তোমাদের লজ্জাস্থান আচ্ছাদিত করে ফেলে 
( সুরা আরাফ: আয়াত ২৬)
যে পোশাক লজ্জাস্থানকে পুরোপুরি আবৃত করে না কিংবা এতই সুক্ষ্ম, মসৃন, পাতলা ও সংকীর্ণ হয় যে এর ফলে ঢেকে রাখার অঙ্গ দৃশ্যমান হয়, ইসলাম এমন বস্ত্রকে পোশাক বলেই স্বীকৃতি দেয় না। 
ইসলাম পোশাকের যে সীমারেখা নির্ধারণ করেছে কিছুতেই এর ব্যত্যয় ঘটানো যাবেনা।

#ইসলামে_পোষাকের_বৈশিষ্ট্য 
ইসলাম সম্মত পোশাক বলতে সেই পোশাককে বোঝায় - যা লজ্জাস্থান আবৃতকারী, মানানসই, সাদৃশ্যবর্জিত, ব্যাক্তিত্বের সাথে সংগতিপূর্ণ, বিলাসিতা বিহীন, অহংকারমুক্ত এবং পরিচ্ছন্ন হতে হবে।
#ইসলামে_পুরুষের_পোশাক
পুরুষের বেলায় পোশাক লাল, জাফরান, উসফুর ( এক ধরনের গুল্ম যা থেকে হলুদ রং পাওয়া যায়) এ রং এর হতে পারবে না।
#ইসলামসম্মত_পোশাকের_রুপরেখা
১: পোশাকটি সতর আবৃতকারী হতে হবে।
২: কাপড় এমন মসৃন ও পাতলা হওয়া যাবে না যাতে পোশাকের অভ্যন্তরেরর অঙ্গ দেখা যায়।
৩: কাপড় ঢিলেঢালা হওয়া উচিত। ( শর্টকাট, আঁটসাঁট পোষাক বিবস্ত্রতার নামান্তর)
৪: পোশাক শালীন, সৌজন্যের পরিচায়ক ও সৌন্দর্যমন্ডিত হওয়া চাই।
৫: পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে অন্যের সাদৃশ্য বর্জন করা। ( তিনটি বিষয়ে সাদৃশ্য বর্জন করতে বলা হয়েছে - কাফির, মুশরিকদের পোশাক গ্রহন করা যাবে না।
- ফাসেক-পাপাচারীদের মত পোশাক পরিধান করা যাবে না।
⭕ #বিপরীত_লিঙ্গের_পোশাক_পরিধান_করা_যাবে_না অর্থাৎ পুরুষের পোশাক নারী এবং নারীর পোশাক পুরুষ পরিধান করতে পারবে না। এটা ইসলামে জায়েয নয়।
৬: রেশমি কাপড় পরিধান করা যাবে না ( পুরুষদের জন্য)
#রাসুলুল্লাহ_(সা:) ইরশাদ করেন - পুরুষদের জন্য রেশমি কাপড় এবং স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম। ( তিরমিজি, হাদিস:১৭২০)
৭: বিলাসিতা পরিহার করতে হবে।
৮: পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে অপচয় ও অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
৯: অপচয় যেমন নিন্দনীয় তেমনি কৃপণতাও নিন্দনীয় এবং বর্জনীয়। তাই নিজের ব্যাক্তিত্ব ও সামর্থ্য অনুযায়ী পোশাক পরিধান করা উচিত।
#রাসুলুল্লাহ_(সা:)_বলেছেন - আল্লাহ বান্দা কে যে নিয়ামত দিয়ে সিক্ত করেছেন তার প্রভাব-প্রতিরুপ তিনি বান্দার মাঝে দেখতে ভালোবাসেন।
তাই আসুন নারী এবং পুরুষ উভয়ে নিজেদের কে সুন্দর ও সাবলীল পোশাকে আবৃত করি।

Comments

    Please login to post comment. Login