আল্লাহর এই সৃষ্টি জগতে ভালোবাসাই হলো প্রথম সম্পাদিত ক্রিয়া বা কর্ম। ভালোবাসা মৌলিক মানবীয় গুণাবলির একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ গুণ। মানবীয় গুণাবলি বিকাশে বা উত্তম চরিত্রের উৎকর্ষ সাধন ও সুকুমারবৃত্তি অর্জনের মূলে রয়েছে বিশ্বাস, আশা ও ভালোবাসা।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত আল্লাহ বলেন, (আমি ছিলাম গোপন ভান্ডার; ভালোবাসলাম প্রকাশ হতে, আর সৃষ্টি করলাম সমুদয় সৃষ্টি) ভালোবাসা পবিত্র
কোরআনে ৭টি পর্বে ৬৩ বার উল্লেখ হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রায়ই এই দোয়া করতেন- হে আল্লাহ, আপনার ভালোবাসা চাই আপনার ভালোবাসার জনের ভালোবাসা চাই, আর সে আমল করার তৌফিক চাই; যে আমল করলে আপনার ভালোবাসা লাভ করা যায়।
আল্লাহ সৎ কর্মশীলদের ভালোবাসেন, আল্লাহ পবিত্রদের ভালোবাসেন, আল্লাহ তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন, আল্লাহ মুত্তাকীদের ভালোবাসেন, আল্লাহ ধৈযর্শীলদের ভালোবাসেন, আল্লাহ তাঁর ওপর নীর্ভর কারীদের ভালোবাসেন, আল্লাহ ন্যায়নিষ্ঠদের ভালোবাসেন,
আল্লাহ মুজাহিদদের ভালোবাসেন,
নিজিস্ব মতামত:
”আমার মতে ভালোবাসা একটা ছায়া মূর্তির মতো, আলোর প্রতিফলনেই যার অস্তিত্ব টিকে থাকে”
”ভালোবাসা মায়া নয়, মায়ায় আবদ্ধ যে ভালোবাসা তা স্বার্থে আঘাত লাগা মাত্রই ছাঁই হয়ে যায়”
”ভালোবাসা যদি জৈবিক হয় তাহলে তা পশু ধর্ম, ভালোবাসার ধর্ম ভালোবাসা”
”শরীরের প্রতি শরীরের আকর্ষনকে প্রেম বলা যেতে পারে, আর এ আকর্ষন প্রকৃতির তৈরী, যাতে প্রকৃতির সৃষ্টি বজায় থাকে। যদি আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু শরীর হয়ে থাকে তাহলে শরীর যেহেতু নশ্বর সেহেতু প্রেমও নশ্বর”
”ভালোবাসা এমন একটা শিকল যে শিকলে অনুভূতি, বিশ্বাস, সম্মান এবং বিবেক এক সুত্রে গাঁথা”
”প্রতিদানের উর্দ্ধে যার অবস্থান তা হচ্ছে ভালোবাসা”
”চিরস্থায়ী অনুভূতির নাম ভালোবাসা”
”মহাজগতৎ এর সবচেয়ে স্বচ্ছ জিনিস হচ্ছে ভালোবাসা”
”ভালোবাসা হচ্ছে সৃষ্টির মূল উপাদান “
ভালোবাসার সর্বকৃষ্ট উপমা হচ্ছে ”মা”
”দুটো আলাদা অস্তিত্ব থেকে একটি অস্তিত্বে বিরাজ করাকে ভালোবাসা বলে। ভালোবাসায় এতটা বিশ্বাস বিরাজমান থাকে যে আর একটা ভিন্ন অস্তিত্বের ভালো-মন্দ কে নিজের ভিতর নিয়ে বাঁচা।ভালোবাসায় ত্যাগ শব্দটি অনেক বড় একটি অংশ। দৈহিক চাহিদা ভালোবাসার ছোট একটা অংশ মাত্র। ভালোবাসা হচ্ছে কোনো কিছুর ওপর তীব্র আকাঙ্খা। ভালোবাসা হচ্ছে দুটি অস্তিত্বের বোঝাপড়া।
”ভালোবাসা হচ্ছে কারো কাছে সুখ না চেয়ে তাকে সুখে রাখা”
কিন্তু বর্তমান দুনিয়া বা সমাজে ভালোবাসার দুটো রুপ দেখা যায়-
১. ভালোবাসা।
২. নমুনা ভালোবাসা।
ভালোবাসার কারণে প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ গ্রহন করা অন্যায় (ইউসুফ:৮)
এখন মানুষ ভালোবাসে শখের বসে।
সত্য ভালোবাসা ব্যাপার টা এখন নেই। সবাই শরীরের চাহিদায় ভালোবাসা হারিয়েছে বিনিময়ে পেয়েছে মাংসপিন্ডের সুখ। যে সুখে তলিয়ে গেছে হাজারো সংসার, হাজারো পথে-ঘাটে গড়ে উঠা ঠুনকো ভালোবাসা। নিজেকে বুঝতে চেষ্টা করুন, কী চাচ্ছেন আর কী পাচ্ছেন। ভালোবাসায় অশ্লিলতা বর্জণ করুন, দেখবেন আপনি সম্মানিত হবেন। আমরা বলি সভ্য যুগে বাস করছি কিন্তু এ সভ্যতার যুগেও আমরা নগ্নতা আর অশ্লিলতা কে পরিহার করতে পারছি না তাহলে আমরা কোথায় সভ্য হলাম। এ সমাজে নারী এবং পুরুষ এখন সমান প্রতিযোগীতায় এগিয়ে যাচ্ছে এতে ক্ষতির পাল্লাটা নারীদের ক্ষেত্রেই বেশি। একজন নারীর সম্মান অনেক বেশি তাই নিজেদের সম্মান বজায় রাখুন। ভালোবাসার নামে নিজেদের শরীর বিলিয়ে দিবেন না, এতে ক্ষতি আপনারই। সমাজ এবং পুরুষদের বুঝতে চেষ্টা করুন এতে আপনারই মঙ্গল। আর পুরুষেরা নারীদের সম্মান দেবার চেষ্টা করুন, যেমন সম্মান করেন আপনার মা এবং বোনকে, তাদেরকে খেলনার বস্তু বানাবেন নাহ।
ভালোবাসা একবারই হয় আর সেটা ঈশ্বরের ক্ষেত্রেই হোক, সন্তানের প্রতি পিতা-মাতারই হোক আর একজন নারীর প্রতি একজন পুরুষেরই হোক। বিশ্বাস অর্জন করুন, আর একজন মানুষকে মূল্যায়ন করুন এবং অশ্লিলতা বর্জন করুন তাহলেই আপনি প্রকৃত মানুষ। নয়তো পশু আর আপনার মাঝে তফাত টা কোথায়।চর্ম চক্ষু নয় সমাজ এবং নিজেকে অন্তর চক্ষু দিয়ে দেখার চেষ্টা করুন।