Posts

চিন্তা

জ্ঞানের অভ্যন্তরীণ জীবন—

July 11, 2024

Muntaka Azmain Muhi

Original Author মুনতাকা আজমাইন মুহী

155
View

সকল মননশীলতা অধিবাস্তবে মিশে আছে। কত সুন্দর স্বপ্নের সেইসব রাতে ম’রেছি আমি সহস্রবার— শুধু কেউ কখনোই জানবে না জ্বলতে থাকা নক্ষত্রের রাতে কিভাবে নিভে যায় হৃদয়ের প্রজ্বলন। আমার প্রাণের সাথে খেলা করে তবু গাঢ় রক্তের এনামেলে হারায়ে যায় প্রিয়দের দল— অথচ, এ প্রলাপপাণ্ডুর নির্জনতায় আছে শূন্যতার মহীরুহ আবরণ।

এসব শূন্যতা পেরিয়ে যা একটু আধটু বেঁচে থাকার গ্লানি লাঘব হয় জীবনে, তা ক্ষণিকেয় শেষ হয়ে আসে সবসময়।

পবিত্র বাইবেলের উপদেশক অধ্যায়ে (১:১৮) আছে “জ্ঞানের সঙ্গে আসে হতাশা। যে মানুষ যত বেশী জ্ঞান লাভ করে সে তত বেশী দুঃখ পায়।”

আমাদের আছে সবকিছু জানার সক্ষমতা, তবু পরিবর্তনের ছিটেফোঁটা নেই এই হৃদয়ে। হৃদয় বোঝে বোধের অন্তর্গঠন— ধূসর দৃষ্টি কান্নাভেজা পরাজয় মেনে নেয়। এখানে কোনো অক্ষমতা নেই— সৃষ্টির প্রাণের ভুল সাথে নিয়ে আমাদের মস্তিষ্ক যে খেলা খেলে যায় তার নাম নিস্তেজতা। হাজার নির্ঘুম রাত জেগে থাকা পেঁচা তবু সকালের স্বপ্নে বুঁদ থাকে, তবু আমাদের নাক্ষত্রিক জীবন কেবল ছোট হয়ে আসে। এসব নির্ঘুমতার ক্লান্তি পেরিয়েই তো ছুটে যাওয়া অনিশ্চয়তার দিকে, যেখানে নক্ষত্রপথে মিশে আছে আকাশের অন্ধকার দীপ্তি।

বাইবেলের অনুকরণীয় জীবনানন্দ দাশের কবিতা ”এই শতাব্দী-সন্ধিতে মৃত্যু” এখানে সামঞ্জস্যতার পরিপূরক হিসেবে আছে–
“সে এক বিচ্ছিন্ন দিনে আমাদের জন্ম হয়েছিল—
তার চেয়ে অস্পষ্ট সময়ে
আমাদের মৃত্যু হয়ে যায়—
দূরে কাছে শাদা উঁচু দেয়ালের ছায়া দেখে ভয়ে
মনে ক’রে গেছি তাকে— ভালাে ভাবে মনে ক’রে নিলে—
এইখানে জ্ঞান হতে বেদনার শুরু
অথবা জ্ঞানের থেকে স্পষ্ট ছুটি নিয়ে সান্ত্বনার হিম হ্রদে একাকী লুকালে
নিস্তব্ধ স্ফটিক-স্তম্ভ খুলে ফেলে— মানুষের অভিভূত উরু
ভেঙে যাবে কোনও এক রম্য যােদ্ধা এসে
নরকেও মৃত্যু নেই— প্রীতি নেই স্বর্গের ভিতরে।
মর্ত্যে সেই স্বর্গ-নরকের প্রতি অন্ধ অবিশ্বাস
নিস্তেজ প্রতীতি নিয়ে মনীষীরা প্রচারিত করে।”

Comments

    Please login to post comment. Login