পোস্টস

বাংলা সাহিত্য

বার্তা

৮ আগস্ট ২০২৪

আযাহা সুলতান

মূল লেখক আযাহা সুলতান

বার্তা

সরকারের পতন কোনো বড় বিষয়ও নয় এবং লজ্জার বিষয়ও নয়। এটা একটা সচরাচর বিষয়। একেকটি সরকার-পতনে থাকে একেকটি সরকারের জন্যে বার্তা। কিন্তু একটি সরকার সেখান থেকে কতটুকুইবা শিক্ষা অর্জন করতে পারে? এটা একটা বড় বিষয়। তবে কেউ শিক্ষা নিলেও বেশি দিন টিকায় না। রাজত্ব পাওয়ার পর সেটা আর কারও মনে থাকে না। রাষ্ট্রপরিচালনার ধারাবাহিকতায় বলো কিংবা মোহতায় বলো আস্তে আস্তে সেটা মুছে যায় বা ভুলে যায়। কিন্তু ভুলে গেলে যে চলে না তার প্রমাণ হাসিনার পদত্যাগ। কঠোরতার রাজত্ব যারা কায়েম করবে তাদের পরিণতি অবশ্য কঠিন হবে। এটার ফয়সালা আসমানে হয়। যেটা মানুষ বুঝতে পারে না। দীর্ঘদিন একটা সরকার শাসনব্যবস্থায় থাকলে একঘেয়েমির একটা ভাব বোধহয় এমনিতেই চলে আসে, যা এরশাদ-সরকারের আমলেও দেখা গেল এবং হাসিনা-সরকারের শেষের দিকেও দেখা গেল। কেউ কেউ তাকে স্বৈরাচারের আখ্যা দিলেও স্বৈরাচারী মনোভাব তার মধ্যে কতটুকু ছিল পরিষ্কার বলা মুশকিল। স্বৈরাচার একটি কঠিন বিষয়। স্বৈরাচারের রাজত্বে জনগণের কোনো শান্তি নেই। এরশাদ এরাজত্ব কায়েম করলে জনগণ তার থেকে চিরতরে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এই একটা বাস্তবতা আমাদের সকলের জানা। যাইহোক, স্বৈরাচারীভাব থাকলেও থাকুক না থাকলেও নেই। যে চলে গেছে তার বিরুদ্ধে কথা বলার কোনো যৌক্তিকতা নেই। দীর্ঘদিন একটা জায়গায় বসবাস করলে ওটা এমনিতেই নিজের মনে হয়। হোক সেটা সরকার অথবা জনসাধারণ। 

 

`যে যা করবে সে তা ভোগে যাবে’ এটা দুনিয়ার রীতি। সরকারও তো মানুষ। মানুষের ভুল হবেই। এরশাদ সাহেবের পর থেকে লম্বা সময় ধরে দেখে আসছি আমরা, আওয়ামিলিগ গেলে বিএনপি—বিএনপি গেলে আওয়ামিলিগ। এই দুই দলের দৌরাত্ম্য-রাজত্বে আমরা সাধারণ জনগণ অনেক অতিষ্ঠ। অনেকের মনে একজন আন্তরিক, সৎ ও ন্যায়পরায়ণ পুরুষ-সরকারের প্রার্থনা থাকলেও বিধাতা তা শুনেননি। খালেদা সাহেবা দীর্ঘদিন রাজত্ব করলে একসময় মানুষ হাঁপিয়ে ওঠে। তারপর ভালো মনে করল হাসিনা সাহেবার সরকার। এবার হাসিনা দীর্ঘদিন রাজত্ব করলে মনে হলো ভীষণ উপদ্রব। এই উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে তাকেও ছাত্রজনতা মিলে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে আর সে পদছেড়ে নয় শুধু, দেশছেড়েও চলে যায়। আনন্দের কথা হলেও কাল সবাই ভুলে যাবে সব। আরেকজনকে নিয়ে চলবে আনন্দ ও দৌড়লাফ। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলেনি, এদেশে দুটো দল ছাড়া আর কোনো ফেরেশতার আশ্রয় নেই। তাই আমাদের ঘুরেফিরে মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত ছাড়া অন্যোপায় ছিল না। সত্যকথা বলতে, আসমান থেকে কোনো ফেরেশতা এদেশের শাসনভার গ্রহণ করতে আসবে না কখন। তাই আমরা পয়সার এপিঠ-ওপিঠ বারবার ঘুরেফিরে দেখেছি আর মনকে সান্ত্বনা দিয়েছি, নাই মামার চেয়ে কানাই ভালো। কিন্ত ছাত্ররা, তোমরা কানার মতো কোনো কানার দলে সামিল হইয়ো না। তোমরা কামনা কর নতুন সূর্যের। মেঘের আড়ালে সূর্য আছে। বিয়োগ দুই হতে বিয়োগ এক—বাকির পুরাতন খাতা আর উলটিয়ো না। চেষ্টা করো নতুন আশ্রম তৈরি করার। আশ্রম বেশি পুরাতন হলে সেটা জরাজীর্ণ হয়, তার তলে বসবাসে যেয়ো না; ভেঙে পড়ার আশঙ্কা বেশি। যদি তা হয়, তা হলে তোমাদের এই অর্জন পুরাই বিসর্জন। 

 

তোমাদের ওপর জাতির প্রত্যাশা অনেক। দেশের জনগণের যেই আস্থা তোমরা অর্জন করেছ সেটা পৃথিবীতে বিরল। কারও ভালোবাসা তো সহজে অর্জন করা যায় তবে ধরে রাখাটাই হলো আসল কথা। সময়ের পরিক্রমায় অনেক কিছু উলটপালট হয়। স্বার্থ ও হিংসার রাজনীতি যেদেশে থাকবে সেদেশের উন্নতি নেই। উন্নতির জোয়ারে ও ক্ষমতার মোহে বেশির ভাগ মানুষ বদলে যায়। খুব কম জনে পারে অর্থ ও ক্ষমতার লোভ সামলাতে। স্বার্থ ত্যাগ দিতে সকলে পারে না। তবে ভুলে গেলে চলবে না, রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্বে যারা আসবে তারা দেশের কর্তার চেয়ে জনগণের সেবক বনা জরুরি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ভাত, কাপড় ও বাসস্থান এই পাঁচটি জিনিস প্রত্যেকটি দেশের মৌলিক অধিকার। এই চাহিদাগুলোর পূরণে যেই সরকার এগিয়ে থাকবে সেই সরকারই জনগণের দায়িত্ববান্ধব সরকার। তাদের পতন ঘটানো বোকামি। যেই জনগণ তাদের পতন ঘটায় তারা পতনের শেষসীমায় না শুধু, ধ্বংসের দোরগোড়ায়। প্রত্যেক দেশের জনগণ ও সরকারের বেলায় একথা প্রযোজ্য। 

 

আমাদের এদেশে সমন্বয় থেকে হিংসার রাজনীতি বেশি। তাই আমাদের এত অধঃপতন। দল যার যেটা ভালো লাগে সে সেটা করবে আর কেউ না করলেও কোনো ক্ষতি নেই কার। দেশ দেশের মতো চলুক। সব দলের লোক হিংসা ভুলে একে-অপরে হাত মিলিয়ে সমন্বয় সৃষ্টি করে চলুক। সরকার যেকেউ আসুক—একজন তো দরকার আছেই—মিলেমিশে থাকুক। জনগণ দেশের ভালোদিক চিন্তা করুক আর সরকার জনগণের ভালোদিক বিবেচনা করুক। এমন হলে দেশে অশান্তি কখনো সৃষ্টি হতে পারে না। সারকথা হলো, ওপর থেকে নিচে অর্থাৎ সরকার থেকে ঝাড়ুদার পর্যন্ত আমরা কেউই প্রকৃত দেশপ্রেমিক নই। সকলে নিজনিজ স্বার্থ নিয়ে ভাবি আর নিজের স্বার্থোদ্ধারে বসে থাকি। কোনোমতে পদ একটা পেলেই হয়, সেটার ফায়দা লুঠতে শুরু করি। এমন দেশে উন্নতি থাক, শান্তিও কি আসতে পারে? কার থেকে কে বড় হতে পারি আর কার থেকে কে আগে যেতে পারি এই প্রতিযোগিতা যেখানে চলবে সেখানে ভালো কিছু আশা করা যাবে? 

 

হাসিনা দেশছেড়ে চলে গেছে, তার এদেশে না এলেও চলে। কিন্তু আমাদের থাকতে হবে সেই কালো হোক বা সাদা—কোনেকটি আশ্রয়ের আশ্রমে। আমরা থেকে যাব হয়তো প্রজন্ম-পর-প্রজন্ম এভাবে ইঁদুর-বিড়ালের দৌড়ে। আমাদের থাকতে হবেই আর কোনো উপায় নেই। এখন কথা হলো, আমরা সাধারণ জনগণ কতটুকু ভালো মানুষ হতে পারলাম কিবা হব। সভ্য তো আমরা নয়ই। একজন সরকার (হতে পারে ফ্যাসিবাদ) পতন করে যেদেশের জনগণ মনে করে স্বাধীনতা অর্জন, সেদেশের জনগণের মনোভাবনা আর কতটুকুইবা উন্নতি হবে। স্বাধীনতা কোনো হাতুরির বারি নয় যে, এক বারিতে অর্জন করে ফেললাম। স্বাধীনতার মহত্ত্ব ব্যাপক তদ্রূপ বিশালতাও অনেকবেশি। এটা মুখে যেভাবে সাধারণভাবে উচ্চারণ করা সহজ অর্জনে যদি সেভাবে সহজ হতো, তা হলে স্বাধীনতার জন্যে পৃথিবীতে এত এত কাঠখড় পোহাতে হতো না। তার পেছনে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানী হতো না। পাঁচ-দশ বা একশ জনের প্রাণ দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করা যায় না, করা যায় তো অধিকার আদায়। এটার জন্যেও ইতিহাস হয় তবে হয় না চর্চা। মুখে মুখেও কেউ কেউ স্বাধীনতা অর্জন করে তবে সেখানে অতটুকু মহত্ত্ব থাকে না। আমাদের আবার মার থেকে একটু মাসির দরদ বেশি। স্বার্থের জিকিরে কিন্তু পকেট খালি হলেও চেপে ধরতে হুঁশ রাখি। 

 

যেদেশের মানুষ কথায় কথায় নিজের সম্পদের ক্ষতি করে সেদেশ হলেইবা কতটুকু উন্নত হতে পারে? বৈঠকে বসে সমস্যার সমাধান না খুঁজে, সমস্যায় সমস্যায় বলে বেড়াই আরও সমস্যা বাড়াই একটুতেই জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেশের সম্পদ ছাই করি—আমরা কোন বুঝদার জাতি? এই জাতির উন্নতি কোথায়? যেদেশে পঞ্চাশ ভাগ মানুষ অজ্ঞ আর পঞ্চাশ ভাগ মানুষ বিজ্ঞ বা বুঝদার সেদেশের উন্নতি আছে। কারণ ওই পঞ্চাশ ভাগ মানুষের দ্বারা ভালো কিছু করা সম্ভম এবং আশা করাও যায়। যেদেশে আশি-নব্বই ভাগ মানুষ অজ্ঞ আর দশ-বিশ ভাগ মানুষ বিজ্ঞ বা কিছু বুঝলেও নীরবতা পালন করে সেদেশ থাকবে পেছনে তো অনেক পেছনে। কারণ তারা জানে দশ দিয়ে নব্বইকে সমন্বয় করা অসম্ভব। এটা সত্য, আমরা মানুষ হিসাবে পিছে হলেও বোঝার জাতি হিসাবে অনেক আগে। 

 

একটা দেশের সরকার যখন দেশত্যাগ করে চলে যায় তখন তার সমস্ত সম্পদ হয় দেশের। এটা পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে শিক্ষারও বিষয় হয় এবং দেখারও বিষয় হয়। এখন আমরা এমন এক মানুষ ক্রোধের তাড়নায় ও আবেগের ঠেলায় তা ধ্বংস করতে পিছ পা হই না বা একবার ভাবি না—করছি কী এবং করতে যাচ্ছি কী! এই দেশ কার? দেশের সম্পদ কার? এটা নষ্ট করে তো আবার আমাকেই পূরণ করতে হবে। এতটুকু বুদ্ধিবিবেক যেদেশের জনগণের মধ্যে থাকবে না সেদেশ কোনো দিন উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে না। 

 

আমরা অনেক দেশের অনেক সরকারের পতন দেখেছি তবে পতনের পর এমন উপদ্রব দেখিনি। আজকে হাসিনা-সরকার চলে গেছে, রেখে গেছে কী? পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে দেশ গড়ার শিক্ষা। তার সমস্ত জিনিসপত্র ও সম্পদাদি দেশের কাজে আসবে এবং এ প্রজন্মের ও পরবর্তী প্রজন্মের কাজে আসবে—দর্শনীয় স্থান হবে। দেশবিদেশের দর্শনার্থীরা দেখতে আসবে। দেশের একটা সুনাম-সৌন্দর্য বাড়বে, ঐতিহ্য বর্ধন হবে। সেগুলো নষ্ট করে বা লুঠপাট করে কোন ক্ষোভ প্রকাশ করছি আমরা? যারা চলে গেছে তারা তো আর কোনো কিছুর বিনিময়েও ফিরে আসবে না। তা হলে? শেখ হাসিনার সমস্ত সম্পদ যদি আন্দোলনকারীদের যারা নিহত হয়েছে কিবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের পরিবারের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়, তা হলেও কারও কোনো অভিযোগ থাকবে না বা থাকার কথা নয়। গোটা দেশের সম্পদ দিয়েও একটা প্রাণের ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব না। তবে? কী মনমানসিকতা নিয়ে আমরা পথ চলি! আন্দোলনের নিহত-পরিবারের কোনো সদস্যও হাসিনার শাড়ি-ব্রা টানাটানি করতে আসেনি এখানে—না এসেছে তাদের কোনো আত্মীয়স্বজন। তা হলে এরা কারা? বহির্বিশ্বে একটা জাতির সম্মান ধুলিতে এনে মিশিয়েছে? একাজ কি মাননীয় ও মানবীয় হয়েছে? কেউ কি মনে করেন না? বিশ্বের কোথাও-না-কোথাও কোনো দিন-না-কোনো দিন এটার সমালোচনা হবে না? ইতিহাস বিকৃত করে রচনা করা যায় তবে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া মন ও মস্তিষ্কে ধারণ করা দৃশ্যাবলি নয়। সমন্বয়টমন্বয় আমরা বুঝি না, আন্দোলনকারীদের প্রথম সারিতে ছাত্ররা আর সেনাবাহিনিদের বেশ সদস্যেরও উপস্থিতি দেখা গেছে! তাদের কি কোনোই লজ্জাবোধ হয়নি এখানে? এমন একটি নিচু কাজের কাজি হতে তাদের বিবেকে কি একটুও বাধল না? নাকি আনন্দের মোহে তারাও ভুলে গিয়েছে আত্মমর্যাদা? সবকিছুর আগে রাখতে হবে দেশের সম্মান। পৃথিবীতে যত যুদ্ধ হয়েছে একমাত্র দেশ বাঁচাতে আর দেশের সম্মান বাঁচাতে। ঘর থাকলে ঘরের মালিকের দাম। ঘর না থাকলে একজন মানুষের সম্মানইবা কি, স্থানইবা কোথায়? তাদের দায়িত্ব ছিল দেশের এতটুকু সম্মান রক্ষা করা। এই গ্লানি জাতি আজীবন বহন করতে হবে। 

ছিঃ, কত উল্লাসে শাড়ি আর ব্রা করছে প্রদর্শন! মাছ-মুরগি-হাঁস-ছাগল যে যা পারছে কত আনন্দের সঙ্গে লুঠের মাল নিয়ে বাড়ি ফিরছে আর কিছু নির্বোধ ভিডিও করে করে মজার মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে দেখাচ্ছে! কেউ কিছু না পেয়ে দেখা গেল গাছের একটা চারা হলেও নিয়ে যাচ্ছে! এদের বিবেকবোধ ও লজ্জাবোধ কোথায় গেল? এই ক্ষুদ্র মনমানিকতার এত নিচুমনা জাতি পৃথিবীর আর কোথাও আছে? আমার জানা নেই। এমন মানসিকতার মানুষ তোমরা বের হয়েছ আজ দেশের নেতৃত্ব দিতে আর দেশপরিচালনা করতে? এখানে অনেকে যুক্তি দেখাবে, এটা টোকাইরা করছে—করুক। শেষ, দায়ভার শেষ হয়ে গেল। কারণ, প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে যার মধ্যে হিতাহিত জ্ঞান না থাকে ও আত্মমর্যাদাবোধ না থাকে সে এমন করে বলতে পারবে বা বলবে। সৎ, চরিত্রবান, আত্মমর্যাদাশীল ও বংশীয় একজন মানুষ তা বলতে পারবে না। সে মনে মনে খুব লজ্জিত হবে এবং ঘৃণিত কাজকে ঘৃণার নজরে দেখবে। শুধু টাকা দিয়ে সম্মান অর্জন করা যায় না, কাজেকামে ও আচার-আচরণেও সম্মান অর্জন করা যায়। 

 

অন্যায়কে যারা অন্যায় বলে না তারা কোন বিবেকসম্পন্ন মানুষ? তাদের কাছে জাতি ভালো কী আশা করতে পারে? হাসিনার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ভাঙছ—ভাঙো—ভালো কথা তবে জুতার মালা পরিয়ে প্রস্রাব করিয়ে এত হীনমন্য কাজ কি কোনো বিবেকসম্পন্ন মানুষ করতে পারে? হয়তো করতে পারে। কারণ, একটা জাতি যত শিক্ষিত হবে তত বিবেকসম্পন্ন হবে। আমাদের তো এখানে ঘাটতি। একটি নিষ্প্রাণ মূর্তিকে জুতা দিয়ে পেটালেইবা কি আর কুড়াল দিয়ে কোপালেইবা কি? তার তো কিছু হওয়ার নয় কিন্তু যে করছে এবং করাচ্ছে তার বহু ছোট হওয়ার আছে। এটা ছোটলোকির পরিচয়। এই আচরণ তাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যায় সে কি জানে? জানে না। শেখ মুজিব আমার কোনো আত্মীয় নয়, না দেশের কারও স্বজন কিন্তু এরচেয়েও বড় দেশের একজন স্থপতি—এত সহজে ভুলে গেলে তোমরা? জেনে রেখো, এই বর্বরতা সেই বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এটা আরেক ইতিহাস হয়েছে। এই ইতিহাস তোমাদের একদিন ধিক্কার জানাবেই জানাবে। একটা সরকারের কালো অধ্যায় শেষ করতে গিয়ে আরেকটা কলঙ্কিত অধ্যায় তোমরা রচনা করেছ। শেখ মুজিবের কী অপরাধ ছিল? জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছে এটাই ছিল তার অপরাধ? সন্তানের দোষ বাবাকে ভোগতে হবে, বাবার দোষ সন্তানকে বহন করতে হবে একোন নীতি তোমাদের? একজন মানুষকে তোমরা লাঞ্ছিত করেছ হোকবা সে দোষী অথচ মানুষটি পৃথিবীতেও নেই। মনে রেখো, খোদায়ী-বিচার বলে একটা কথা আছে। স্রষ্টা অন্যায়কে ছেড়ে দেয় মনে করছ? হারামও না, ঠিকই একদিন ভোগতে হয় এবং ভোগে যাবে।