Posts

নন ফিকশন

উজবুক বুঝেনা মানিকের দাম!

August 24, 2024

সাজিদ রহমান

Original Author সাজিদ রহমান

67
View

১.

গণ অভ্যুত্থানের পর পর দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে। এর ফলে দেশে মাদক চোরাচালানও বৃদ্ধি পেয়েছে, বলে জানা যায়। দেশের এমন নাজুক পরিস্থিতে কোন বিবেকবান মানুষ ঘরে বসে থাকতে পারেন না। পারেন নি একজন সাবেক বিচারপতিও!

উনি সারা জীবন দেশের জন্য কাজ করে গেছেন! যেখানে অনিয়ম দেখেছেন, সেখানেই ঝাপিয়ে পড়েছেন! যোগ্য লোক যাতে সঠিক সম্মান পায় সেটা আদায়ে তিনি ছিলেন আপোষহীন। সিগনালে পুলিশ বিচারপতির গাড়ি চিনতে পারেনি, সালামও ঠুকেনি, এমন অনাচার তিনি মানতে পারেন নি। তাই সেই পুলিশকে কান ধরে ওঠবস করিয়ে গোটা বিচার বিভাগের সম্মানকে আরও উঁচুতে নিয়ে যান!

২.

সব ধর্মে বলা আছে, যোগ্য লোককে সঠিক সম্মান দিতে। তাই প্লেনের বিজনেস ক্লাশের যাত্রীদের উচিত ছিলো একজন বিচারপতিকে ইকোনমি ক্লাশের আসন থেকে নিজের আসনে বসিয়ে দেয়া। তাদের সেই জ্ঞান না থাকায় তিনি নিজে সে উদ্যোগ নেন। দেশ ও জাতিকে অপমান থেকে  উদ্ধার করতে চান। তারপরেও বেয়াদপ যাত্রী ও ক্রুরা যখন তাঁর মাহাত্ম্য বুঝতে পারেন না, তখন তিনি আকাশেই আদালতের কার্যক্রমের ঘোষনা দেন। সেও এক গিনিজ রেকর্ডীয় বিষয়, কিন্তু গিনিজ কর্তৃপক্ষও ন্যায় বিচার করেন নি। ততক্ষনে প্লেন দেশের আকাশ সীমা পার হয়ে অন্য দেশে চলে গিয়েছিলো। তিনি আদতে ভবিষ্যতে বৃহত্তর বাংলা গঠনের সূচনা করে দিয়েছিলেন! সেই বাংলা হবে বর্তমান বাংলা থেকে বহুগুন বড়। কিন্তু ফকিন্নি জাতি উনার সেই সিগনাল বুঝতে পুরাপুরি ব্যর্থ হয়েছে! উলটো তাঁর নামে কুৎসা রটানো হয়!! এমন পাপাচার ধরণী সইতে পারে না। 

৩.

দশ বছর আগের কথা। বিচার কাজের জন্য দরকার, এমন  উছিলায় হাইকোর্ট লাগোয়া একটি সরকারি দপ্তরের প্রধান কার্যালয় সরিয়ে নিতে বলেন। কোন সময় না দিয়েই। সেটা মহান জাতীয় সংসদের স্পিকার বুঝতে পারেন না! কাজটি সঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করে বসেন। এরফলে বিচারপতি সেই স্পিকারকে 'বটতলার উকিল' বলে তাঁর অবস্থানকে মনে করিয়ে দেন! তাতেও কাজ হয়না, বিচারপতির ক্ষোভ কমে না। স্পিকার যখন মহামান্য রাস্ট্রপতি হন, সেই বিচারপতিকে আপিল বিভাগে প্রোমোশন দিয়ে নিজের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেন!

তিনি ছিলেন টিভি টকশোর প্রাণ! শুধু প্রাণ বললে অন্যায় হবে, তিনি ছিলেন প্রাণপুরুষ! বিরক্তিকর টকশোকে তিনি দিয়েছিলেন থ্রিল মুভি দেখার উত্তেজনা। অমিতাভ বচ্চন জনপ্রিয় হয়েছিলেন এন্টি হিরোর চরিত্র করে। সেখানে হিরো ভিলেনের ন্যায় কাজ করলেও আসলে তিনিই হিরো। বিচারপতিও নেমেছিলেন সেই কায়দায়! যারে তারে 'তুই রাজাকার', রাজাকারের বাচ্চা' বলে জাতির নার্ভ টেস্ট করছিলেন! কিন্তু সেই একই কাহিনী। মূর্খ জাতি এন্টিহিরোর সেই রোল বুঝতে চরম ভাবে ব্যর্থ হয়!!

৪.

এতকিছুর পরেও তিনি দমে যান নি। তিনি দমার পাত্র নন। বর্তমান পরিস্থিতে চারিদিকে চলছে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের জাল। তিনি সেই জাল ছিঁড়তে চান,  দেশের সীমান্ত রক্ষায় ঝাপিয়ে পড়েন। শুরুতে সীমানা পেরিয়ে ওপাশের অবস্থা দেখে নেন। এরপর গুপ্তচরের মত সীমান্তের জঙ্গলে কলাপাতা বিছিয়ে সীমান্তে ঘটা অন্যায় কাজ কর্ম অবলোকন করতে থাকেন। তালাশ, 360 ডিগ্রি, ঘটনার অন্তরালেসহ কোন গোয়েন্দা বাহিনী পারে নি। তিনি তা করে দেখান, তিনি একজন বাপের বেটা। অনৈতিক কাজের দায়ে তিনি কয়েক জন বিজিবির সদস্যকে পাকড়াও করেন। তাদের জেরা করে পুরা ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে চান।

কিন্তু বিধিবাম! পুরা জাতি অন্ধকারে ডুবে আছে! পুরাই আইয়ামে জাহেলিয়াত!!! ভালো মন্দ বুঝতে পারে না। এই জাতিকে শুধু ছিছি জানিয়েও লাভ নেই!! এবারও তাঁর এমন মহৎ কর্ম বিজিবির সদস্যরা বুঝতে পারেন না!

উল্টো তাঁকে এরেস্ট করেন। নরাধমরা মহামান্যের হাতে, গলায় দড়ি পরান! ভয়ভীতির এক পর্যায়ে নিজের নাম মানিক্কা বলে ফেলেন।

বাংলা বিহার উড়িষ্যার আকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা। এমন ঘোরতর অন্যায় মেনে নেয়া হবে না!! জনতা জেগে উঠছে!! মানিক্কার কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে!!

Comments

    Please login to post comment. Login