পোস্টস

গল্প

পীড়ন।

৭ মে ২০২৪

Shoaib ahmed

মূল লেখক শোয়াইব আহমেদ।

এক বছর পরে আবার তোমাকে দেখলাম অপেক্ষার বেঞ্চে। অনেক সুন্দর লাগছিল তোমায়। ঠিক আগের মত। মানুষ বলে, সময়ের ছাপ চামড়ায় পরে তবে তোমার পরেনি। যেমন গতবছর ছিল এখনও তেমনই। চেহারা জুড়ে প্রাণবন্ত সে ভাব, ডাগর ডাগর চোখে হালকা কাজল, কপালে ছোট্ট কালো টিপ্, পরিপাটি করে ছাঁট দেয়া চুল। সব আগের মতোই। শুধু তোমার ভিতর আমার ছাপ ঝাপসা হয়েছে। তোমার জগৎ উৎসর্গযোগ্য ডাগর চোখে আমার আর দেখা মেলে না। সাদা, লাল মেলানো গোলাপি হৃদয়ে আমার নামের জপ হয় না।

স্থীর হয়ে বসা তুমি। মনে হচ্ছে কোন তাড়া নেই। শহরের ব্যস্ততা প্রভাবিত করছে না। আচ্ছা, তুমি কী প্রভাবিত হওয়ার ঊর্ধ্বে? দূর হতে দেখছিলাম তোমায়, ইচ্ছে করছিল হালকা করে ছুঁয়ে যাই। আরেকবার তোমার পরিপাটি চুলের প্রশংসা করি। আলোকবর্ষের দূরত্ব মুছে দিই মুহূর্তে। কিন্তু কী জানো! আমার সে ক্ষমতা আর নেই। তুমি আমার হয়েও কত বিস্তর তফাৎ।

পাশে বসে তোমার ভেঙে পরা, স্বর চেপে ঠোঁট কাপানো, বুক ভরা শ্বাসের থেমে থেমে বের হওয়া, পরমুহূর্তের অঝর কান্না, কত শত অভিযোগ, সব আজও বাজে আমার কানে। যদি আমাদের হাত ধরা আরও দীর্ঘ হত। আমাদের পথ আরেকটু প্রসারিত হত। তাতে সর্বনাশা কী ছিল?

জানো! শুধু তোমার জন্য আমার অস্তিত্ব আজও বিদ্যমান। আমার অবিনাশী জগতের নিয়ম হল, একজন অস্তি ততন্নত জীবন ব্যবস্থা পাবে, বিনাশী জগতের লোকেরা তাঁকে যত গভীরভাবে মনে রাখবে। সে হিসেবে এখন আমার করুণ অবস্থা। তুমি আসো, সমাধি পাশে স্থীর হয়ে দাড়াও, কাঁপা হাতে সাদা গোলাপ ছেটাও, আমার বড্ড ঋণী লাগে। এই মহানুভবে ফিরে পাই উন্নত জীবন ব্যবস্থা আর আবদ্ধ হই তোমার অনুরাগে। জানো! মাঝে মাঝে বড্ড রাগ হয়। তুমি ভুলে গেলেই মুক্ত হয়ে যাই আমি। কেন তোমার এত অনুরাগ?

সুহাসিনী! ভুলে যাও আমায়। মুক্ত করে দাও নিজেকে এই যন্ত্রণা থেকে।

-ভাই…ভাআআই…চেপে বসেন একটু।

-জি, ভাই। বসেন। সরে বসে আড়চোখে লোকটিকে দেখার চেষ্টা করলাম। লোকটি খাবার হাতে বসে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। চোখ নামিয়ে এমন ভাব নিলাম, আমার তার প্রতি কোন আগ্রহই নেই। খাবার শেষের পত্রিকা টুকরো ছুড়ে ফেলল আমার সামনে। লোকটি কী আমাকে সহ্য করছে না? নাক ছিটকে দোকানিকে বলল, কী পাগল ছাগল দোকানে বসতে দেন। এভাবে তো ব্যবসা ডুববে। এখন আর এগুলোয় মন মন্দ হয় না। কিছু না বলে চোখ নামিয়ে নিলাম। চোখ আটকে গেল পত্রিকার ছোট শিরোনামে। ছাপা- ‘সাত বছরের প্রেমে আমি ব্যর্থ হতে চাই না’ চিরকুট লেখে কিশোরীর আত্মহত্যা।’ আরেহ! এই মেয়েরও তো চোখে হালকা করে কাজল!!!