পোস্টস

প্রবন্ধ

আধুনিক জীবনে কম্পিউটারের গুরুত্ব

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাসুদ হোসেন

অনুবাদক মাসুদ হোসেন

কম্পিউটার আধুনিক বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কার আবিষ্কার। এযন্ত্রটিকে ঘিরেবিশ্বের বুকেএকনীরবপ্রযুক্তি বিপ্লবসংঘটিতহয়েছে। এবিপ্লবের ঢেউলেগেছেবাংলাদেশের বুকে।তাইএদেশেকম্পিউটারের ব্যবহার ব্যাপকথেকেব্যাপকতর হচ্ছে, বিস্তৃত হচ্ছেকম্পিউটারকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য। যুগের চাহিদা অনুসারে এদেশেকম্পিউটার শিক্ষার প্রসারঘটেছে।সরকারি-বেসরকারি উভয় পর্যায়েই কম্পিউটার শিক্ষাওপ্রশিক্ষণের যথেষ্টসুযােগতৈরিহয়েছে। প্রয়ােজনীয়তা ওবাস্তবতার আলােকেআমাদেরকম্পিউটার শিক্ষাগ্রহণেআগ্রহীহতেহবে।মানসম্পন্ন কম্পিউটার শিক্ষার প্রসারছাড়াআমরাআজকেরদিনেজাতীয়উন্নতির কথাচিন্তাও করতেপারিনা।

 

কম্পিউটারের পরিচয়

গ্রিক শব্দ ‘Compute’ থেকে ‘Computer’ শব্দেরউৎপত্তি। যারআভিধানিক অর্থ- গণনাকারী বা হিসাবকারী যন্ত্র। উদ্ভাবনের শুরুতেকম্পিউটারকে গাণিতিক ওহিসাবমূলক কাজেব্যবহার করাহতােবলেএরনামরাখাহয়েছে কম্পিউটার। কিন্তু বর্তমানে কম্পিউটার প্রায়সকলকাজেইপারদর্শী। এযন্ত্রমানুষের দেওয়াযৌক্তিক উপাত্তের ভিত্তিতে অতিদ্রুতসঠিকভাবে কোনােকার্যসম্পাদন করতেপারেএবংনির্ভুল ফলাফলপ্রদানকরতেপারে।

 

কম্পিউটার আবিষ্কার ও বিবর্তন

কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি নতুন আবিষ্কার হলেওএরপিছনেদীর্ঘদিনের ইতিহাসরয়েছে। বহুকালধরেবহুজনের অবদানের ফলেআবিষ্কৃত হয়েছেকম্পিউটার। যােগ-বিয়ােগ করতে পারে এমনএকটিগণকযন্ত্র প্রথমআবিষ্কার করেনক্লেইলি প্যাসকেল ১৬৪২সালে।এরকিছুকাল পরে১৬৭১সালেগডফ্রাইডে সর্বপ্রথম গুণওভাগকরতেপারেএমনযান্ত্রিক ক্যালকুলেটর আবিষ্কার করেন।এভাবেনানাচড়াইউৎরাইপেরিয়ে কম্পিউটার ব্রিটিশ গণিতবিদ চার্লসব্যাবেজের হাতেএসেআধুনিকরূপলাভকরে।তাই চার্লস ব্যাবেজকে আধুনিককম্পিউটারের জনকবলাহয়।তিনিইসর্বপ্রথম ১৮৩৩সালেপাঁচটিঅংশেসম্পূর্ণ আধুনিক কম্পিউটারের গঠনতত্ত্ব আবিষ্কার করেন

ব্যাবেজ ধাতব যন্ত্রাংশ দিয়েকম্পিউটার তৈরিকরেছিলেন। কিন্তুতৎকালীন সময়েসূক্ষ্ম যন্ত্রাংশ তৈরিনাহওয়ায় তিনিআধুনিককম্পিউটারের পরিপূর্ণ রূপদিতেপারেননি।তবেআজআমরাযেকম্পিউটার ব্যবহার করিতাব্যাবেজের গঠনতত্ত্ব অনুযায়ী তৈরিকরাহয়েছে। চালর্সব্যাবেজের কম্পিউটারের গঠনতত্ত্বে রয়েছে পাঁচটি অংশ।যথা: স্টোরবাভাণ্ডার, মিল, কন্ট্রোল, ইনপুটওআউটপুট।

আধুনিক জীবনে কম্পিউটারের গুরুত্ব

অবশেষে ১৯৪৪ সালেবিশ্বখ্যাত হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও আইবিএম কোম্পানি যৌথউদ্যোগে ইলেকট্রো মেকানিক্যাল কম্পিউটার তৈরিকরে।তবেপ্রথমপূর্ণাঙ্গা কম্পিউটার ‘এনিয়াক’ চালু হয়েছিল ১৯৪৬সালের১৫ফেব্রুয়ারী। এরপরথেকেযন্ত্রটি দ্রুতপরিবর্তিত হয়এবংগঠনওআকৃতিতে অভিনবত্ব লাভকরে।সেইসাথেকম্পিউটারের ব্যবহারও বৃদ্ধিপেতেথাকে।

 

কম্পিউটারের প্রজন্ম

বর্তমানে নানা ধরনের কম্পিউটার আবিষ্কৃত হয়েছে।গঠনপ্রণালীর একএকটিবিশিষ্ট ধারাকেবলাহয়একএকটিপ্রজন্ম। প্রথমপূর্ণাঙ্গা কম্পিউটার এনিয়াক থেকেইকম্পিউটার প্রজন্ম শুরুহয়।ইতোমধ্যে আমরাপেয়েছিইউনিভ্যাক-১, আইসিএস-২৯০০, আইবিএম-৬৪০, সিস্টেম – ৩৬০, এডস্যাক – ৪৩০০সিরিজের মেইনফ্রেম মডেল।

 

জেনারেশন কম্পিউটার

কম্পিউটার কোনও ব্যক্তিবিশেষের আবিষ্কার নয়।বিগতদেড়শাে বছরধরেবহুমানুষের অসংখ্যআবিষ্কার ওভাবনা-চিন্তার ফলশ্রুতি এতে আছে। এদেরমধ্যেসর্বাগ্রে স্মরণীয় চার্লস ব্যাবেজের নাম।তিনি১৮৩০খ্রিস্টাব্দে ইংল্যাণ্ডের ক্যামব্রীজে একটিঅটোমেটিক-মেকানিক্যাল ক্যালকুলেটার গড়ারজন্যেসচেষ্টহন।১৯৩০খ্রিস্টাব্দের মধ্যেচেপেচাপদেওয়াবাছিদ্রকরারস্বয়ংক্রিয় যন্ত্রাদি’ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেরবড়বড়ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠানে ব্যাপকভাবে চালুহয়।

 

সেকেন্ড জেনারেশন কম্পিউটার

সেকেণ্ড জেনারেশন কম্পিউটার-এ ট্রানজিস্টার স্থানপেল, এদেরসারকিটহল ফার্স্ট জেনারেশন -এর তুলনায় অনেকছােট।এদেরপরিচালনা করতেঅপেক্ষাকৃত কমশক্তিদরকারহল।সর্বোপরি, এদেরকাছথেকেঅতিদ্রুতকাজপাওয়াগেলএবংএরাহয়েউঠলবিশেষনির্ভরযােগ্য। সেকেণ্ড জেনারেশন কম্পিউটার এরমধ্যেসর্বাধিক জনপ্রিয়তা করে আই বি এম ১৪০১

 

থার্ড জেনারেশন কম্পিউটার

থার্ড জেনারেশন কম্পিউটার-এরয়েছেইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (IC) ।এরাদামেরদিকথেকেসস্তাএবংএছাড়ানির্ভরযােগ্যতার দিকথেকেওসেকেণ্ড জেনারেশনকে ছাড়িয়ে গেছেঅনেকদূর।দ্রুতকাজকরারক্ষেত্রে এবংব্যাপকক্ষমতানিয়েকাজেলাগাবার ব্যাপারে এরাপূর্ববর্তী যুগেরকম্পিউটারদের তুলনায় আরওঅনেকউন্নত।

ফোর্থ জেনারেশন কম্পিউটার

এর প্রয়ােগ দেখাগেল১৯৭১খ্রিস্টাব্দ থেকে।নতুনযুগেরউন্নতধরনেরইলেকট্রনিক প্রযুক্তি-বিজ্ঞানের সহায়তায় এদেরকেআগেরযুগেরকম্পিউটারদের তুলনায় আরওদ্রুতএবংআরওছােটকরেতৈরিকরাসম্ভবপর হল।

ফিফথ জেনারেশন কম্পিউটার

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপরভিত্তিকরেফিফথজেনারেশন বাপঞ্চমপ্রজন্মের কম্পিউটার প্রযুক্তি যানির্মাণের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।এটিরপ্রধানবৈশিষ্ট্য হলকণ্ঠস্বর সনাক্তকরণ ওবিশ্বের সকলভাষাবুঝতেপারা।একসাথেএকাধিকপ্রোগ্রাম বাধাহীনভাবে চলতেপারে।

মাইক্রো কম্পিউটার

মাইক্রো কম্পিউটার আকারেছােট।১৯৭০খ্রিস্টাব্দ থেকেএদেরপ্রয়ােগ চলে।এশ্রেণীর কম্পিউটারের সবচেয়ে বড়সুবিধা, খুবইস্বল্পব্যয়েএদেরসংগ্রহকরাসম্ভবহল।ফলেএদেরব্যবহার বেড়েচলেঅতিদ্রুতগতিতে।কলকারখানায় অটোমেশিনের ক্ষেত্রে মাইক্রো কম্পিউটার বহুলপরিমাণে কাজেলাগতেদেখাগেল।এছাড়া,এরা ওজনে হালকাহওয়ায় খুবসহজেইএদেরএকজায়গাথেকেঅন্যজায়গায় নিয়েযাওয়াসম্ভবহল।

কম্পিউটার ও তার কার্যকারিতা

কম্পিউটার আসলে এক ধরনেরযন্ত্রমস্তিস্ক। কম্পিউটারের থাকে তিনটি সুস্পস্ট অংশ– এক : সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট, দুই : ইনপুট, তিন ; আউটপুট। যেকোনোসমস্যাসংক্রান্ত সবরকমতথ্যনিয়েকাজকরে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট। ইনপুট তথ্যসংবলিতনির্দেশ প্রদানকরেআর আউটপুট প্রকাশকরেগণনাসংবলিতফল।যেযাবতীয় তথ্যনিয়েকম্পিউটার কাজকরে, তাকেবলে প্রােগ্রাম। কম্পিউটারে তথ্যওনির্দেশ প্রদানের জন্যেযেবিশেষভাষাব্যবহার করাহয়, তাকেবলে প্রােগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। আর এসবকিছুকেএকত্রেঅভিহিতকরাহয় কম্পিউটার সফটওয়্যার বলে।এছাড়াকম্পিউটারের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণকারী একটাকাঠামাে থাকে, তাকেবলে হার্ডওয়্যার

কম্পিউটারের বড়উপযােগিতা হলতথ্যওপ্রােগ্রামের রদবদলবাসংযােজন ঘটিয়েএকইকম্পিউটারকে দিয়েনানারকমকাজকরা।কম্পিউটার যেআজকেরদিনেবিস্ময়কর ওবিশ্বস্তভাবে সবধরনের কাজেরসঙ্গেযুক্তহচ্ছেতারমূলেরয়েছেএরবিশেষকিছুবৈশিষ্ট্য। যেমনঃ

  • অত্যন্ত দ্রুতগণনারক্ষমতা
  • বিপুলপরিমাণউপাত্তকে সুসংবদ্ধভাবে যন্ত্রমগজেধরেরাখারক্ষমতা
  • তথ্যবিশ্লেষণের নির্ভুল ক্ষমতা
  • ডাটাওপ্রােগাম অনুসারে কাজকরারক্ষমতা
  •  

বাংলাদেশে কম্পিউটার

বাংলাদেশে কম্পিউটারের পদযাত্রা শুরু হয় ১৯৬৪সালেআণবিকশক্তিকমিশনে IBM – 1620 সিরিজের একটিকম্পিউটার আমদানির মাধ্যমে। আশিরদশকপর্যন্ত এদেশেকম্পিউটার বিষয়েশিক্ষার কোনােসুযােগছিলনা।নব্বইয়ের দশকেরশুরুথেকেএদেশেআনুষ্ঠানিক ওপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে কম্পিউটার শিক্ষাশুরুহয়।বিদেশিকোম্পানির মাধ্যমে কম্পিউটারের আগমনআমাদেরদেশেঘটলেওবর্তমানে তাব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক কম্পিউটার শিক্ষার সূত্রপাত হয়১৯৮৪সালেবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ওপ্রকৌশল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ।উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ১৯৯১সালেএবংমাধ্যমিক পর্যায়ে ১৯৯৪সালথেকেকম্পিউটার শিক্ষাকে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করাহয়।

 

কম্পিউটার ও আধুনিক জীবন

কম্পিউটার আধুনিক যুগে মানুষের পরমনির্ভরশীল বন্ধ।কোটিকোটিসংখ্যার অঙ্কমিলিয়ে কর্তপক্ষের হাতেঅতিঅল্পসময়েতুলেদিয়েক্যাশিয়ারকে নিশ্চিত নির্ভাবনায় ঘরমুখাে করিয়েদিতেপারে, কম্পিউটার এখনবড়বড়কল-কারখানায় বসে উৎপাদনের পরিকল্পনা আরতানিয়ন্ত্রণের খবরদারি করছে, লাভ-ক্ষতির হিসাব-নিকাশকরছে।রেলওয়ে, এয়ারলাইন্স, ব্যাংকরিসার্চ সেন্টার, ইনসিওরেন্স প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারের একচ্ছত্র আধিপত্য। পরীক্ষার ফলপ্রকাশ, অপরাধীকে খুঁজেবেরকরা, পুরােনাে মামলারনথিপত্র খুঁজেতথ্যসংগ্রহকরেদেয়া, বিজ্ঞাপন প্রচারকরাএসমস্তইএখনকরছেমানুষের সৃষ্টঐযন্ত্র-মগজ।

কম্পিউটার চালিত ‘স্ক্যারার’ খুঁজেএনেছিলআটলান্টিক মহাসাগরে ভেঙেপড়াবিমানের ব্ল্যাকবক্স। যেসবদুরূহকাজমানুষের অসাধ্য, যেসবদুর্গমস্থানমানুষের অগম্যসেখানেই কম্পিউটারের প্রয়ােগ, আরসেখানেতারঅকল্পনীয় সাফল্য। সেযানবাহন চলাচলনিয়ন্ত্রণ করছে।শিক্ষাক্ষেত্রেও কম্পিউটার নিয়েছে শিক্ষকের ভূমিকা। প্রাথমিক থেকেউচ্চশিক্ষা সবইশেখাচ্ছে নিপুণদক্ষতার সঙ্গে।দাবা, ক্রিকেট, ফুটবলসহ নানারকম ভিডিওগেমখেলছেকম্পিউটার। এসবখেলায়কম্পিউটার মানুষের সঙ্গেপ্রতিযােগিতায় অংশনিচ্ছে। মুদ্রণজগতেএকচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছেকম্পিউটার ।

ইন্টারনেটের সাহায্যে ঘরে বসে মুহূর্তেই বিশ্বের যেকোনােজায়গায় যেকোনতথ্যআদান-প্রদান করা যাচ্ছে। আধুনিকজীবনেকম্পিউটার তাইঅপরিহার্য। একইকারণেসভ্যতায় কম্পিউটারের অবদানঅনস্বীকার্য। বাংলাদেশেও কম্পিউটারের ব্যবহার জনপ্রিয় হয়েউঠেছে।এদেশেএখনমূলতমুদ্রণশিল্প, ব্যাংক-অফিস এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

আধুনিক জীবনে কম্পিউটারের ব্যবহার

কম্পিউটার ও বিজ্ঞান একসূত্রেগাথা।একেঅন্যেরপরিপূরক। বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার সাথেতালমিলিয়েকম্পিউটারের কর্মদক্ষতা বেড়েছে। সেইসাথেবেড়েছেকম্পিউটারের ব্যবহার। আধুনিক জীবনে এমনকোনশাখানেইযেযেখানেকম্পিউটারের ব্যবহার। নিচেকম্পিউটারের কয়েকটিব্যবহার উল্লেখকরাহল।

 

ব্যবসায়ক্ষেত্রে কম্পিউটার

বর্তমানে প্রায়প্রতিটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ব্যবহার করাহয়।হিসাবরাখা, কর্মীদের হিসাব, আর্থিকপ্রতিবেদন তৈরি, পণ্যেরহিসাবরাখাসহআরওঅনেককাজেব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ব্যবহার করাহচ্ছে।কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করেকর্মীদের সাথেএমনকিদেশেরবাহিরেব্যবসায়িকদের সাথেই-মেইলের মাধ্যমে দ্রুতযোগাযোগ ওফাইলআদান-প্রদান করা সম্ভবহচ্ছে।

শিক্ষাক্ষেত্রে কম্পিউটার

আমাদের জীবনেপ্রায়প্রতিটি অধ্যায়ের ন্যায়জাতীয়মেরুদন্ড শিক্ষাক্ষেত্রেও কম্পিউটারের অবাদবিচরণ।বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার করেডিজিটাল মাধ্যমে ঘরেবসেইপাঠদানচলছে।শুধুতাইনয়শিক্ষাক্ষেত্রে আরওনানাভাবে কম্পিউটার ব্যবহার করাহচ্ছে।যেমনঃ

শিক্ষাদান

কোনাে কাহিনিপড়াবাশােনারচেয়েঐকাহিনিঅবলম্বনে নির্মিত সিনেমাবাচলচ্চিত্র মানুষের মনেঅনেকবেশিরেখাপাত করে।কম্পিউটারের সাহায্যে শিক্ষাদান বাগ্রহণের ক্ষেত্রে এরসবকটিসুযােগকাজেলাগানাে যায়।নিচেরক্লাসেবর্ণপরিচয়, গল্প, ইতিহাসইত্যাদি কার্টুনের মাধ্যমে তুলেধরলেকোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের কাছেতাঅত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী হয়।ওপরেরক্লাসেও বিজ্ঞান, ভূগােল, ইতিহাসপ্রভৃতি বিষয়গুলাে রঙিনচিত্রেতুলেধরেপাঠদানকরাযায়।প্রচলিত শিক্ষাদান পদ্ধতির চেয়েকম্পিউটারের মাধ্যমে শিক্ষাদান যেঅধিককার্যকর, তাআরবলারঅপেক্ষা রাখেনা।

তথ্য সংরক্ষণ

তথ্য সংরক্ষণের একসহজওগুরুত্বপূর্ণ ভান্ডার হচ্ছেকম্পিউটার। কম্পিউটারে যেকোনাে তথ্যনিরাপদে সংরক্ষণ করাযায়।চাহিবামাত্র যেকোনাে তথ্যউদ্ধারে সক্ষমকম্পিউটারে উপাত্তগুলাে ইচ্ছামাফিক সাজিয়ে রাখাযায়।কম্পিউটারের স্মৃতিতে গােপনীয়তার সাথেসংরক্ষিত যেকোনাে তথ্যেরনিরাপত্তার পূর্ণনিশ্চয়তা থাকে।প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা কারণেকম্পিউটার দিনদিনতথ্যসংরক্ষণের অভিনবপন্থাহিসেবেবিবেচিত হচ্ছে।ফলেক্রমেইবেড়েচলছেএরউপযােগিতা।

যােগাযােগ

কম্পিউটারের বিস্ময়কর সাফল্যে বিশ্বআজমানুষের হাতেরমুঠোয়। ফলেকম্পিউটার যােগাযােগ ক্ষেত্রে এঅভিনববিপ্লবসাধনকরেছে।কম্পিউটারের মাধ্যমে কোনােশিক্ষার্থী অন্যকোনােশিক্ষক, শিক্ষার্থী বাবিশ্বের কোনঅত্যাধুনিক লাইব্রেরির সাথেঅনায়াসেই যােগাযােগ স্থাপনকরতেপারছে।ফলেসেঘরেবসেইপেয়েযাচ্ছেপ্রত্যাশিত তথ্যবাসংবাদ।বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যফিচারঅনায়াসেই একজনশিক্ষার্থী কাজেলাগাতেপারেকম্পিউটারের কল্যাণে।

পরীক্ষার ফলাফল তৈরি ও মূল্যায়ন

বর্তমানে দেশেপ্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলাে পুরােপুরি কম্পিউটারনির্ভর। পরীক্ষার খাতাদেখা, ফলাফলতৈরিওপ্রকাশকরারসমুদয়গুরুদায়িত্ব কম্পিউটারের। এক্ষেত্রে কম্পিউটারের কর্মপদ্ধতির প্রতিআস্থারেখেইদেশেচালুহয়েছেফলাফলমূল্যায়নের ক্ষেত্রে গ্রেডিং পদ্ধতি। আরএজটিলকাজটিসম্পাদন কম্পিউটার ছাড়াকল্পনাই করাযায়না।

উচ্চ শিক্ষায় কম্পিউটার

বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যল কলেজএবংবুয়েটসহ বিশ্বের অনেকদেশেইআজউচ্চশিক্ষায় কম্পিউটারের ব্যাপকব্যবহার হচ্ছে।

সংবাদ প্রচার ও প্রকাশনায়

শিক্ষার অন্যতমমাধ্যমহিসেবেবিবেচিত সংবাদপ্রচারওপ্রকাশে কম্পিউটারের অবদানঅনস্বীকার্য। টিভিরপ্রতিদিনকার সচিত্রসংবাদপরিবেশনে এবংসংবাদপত্রের প্রকাশনায় কম্পিউটার আজব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

স্বাস্থ্যসেবায় কম্পিউটার

কম্পিউটার আবিস্কারের ফলেস্বাস্থ্যসেবায় বৈপ্লবিক উন্নতিসাধিতহয়েছে।মেডিকেলে রোগীদের তথ্যসংরক্ষণ এবংরোগনির্ণয়ের কঠিনকাজসহজেইকম্পিউটারের মাধ্যমে করাহচ্ছে।শুধুতাইনয়, ল্যাবসরঞ্জাম, হার্টরেটমনিটর, এবংরক্তচাপ মনিটরএবংসর্বোপরি রোগীকেনিবিরপর্যবেক্ষণে রাখারকাজটিকম্পিউটার খুবনির্ভুলতার সাথেকরতেপারে।

সরকারী সেবায় কম্পিউটার

বিভিন্ন সরকারীবিভাগতাদেরপরিষেবার মানএবংদক্ষতাউন্নতকরতেকম্পিউটার ব্যবহার করে।উদাহরণগুলির মধ্যেরয়েছেশহরপরিকল্পনা, আইনপ্রয়োগকারী, ট্রাফিক এবংপর্যটন। কম্পিউটার তথ্যসংরক্ষণ, পরিষেবা প্রচার, অভ্যন্তরীণ এবংবাহ্যিক যোগাযোগের পাশাপাশি নিয়মিত প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে কম্পিউটার ব্যবহার করাযেতেপারে।

প্রচারণায় কম্পিউটার

কম্পিউটার জটিলডেটাবিশ্লেষণের মাধ্যমে বিপননপ্রচারনাকে আরওফলপ্রসূ করতেসাহায্য করে।ফলেঅল্পসময়েনির্দিষ্ট গ্রাহকদের কাছেপণ্যেরপ্রচারণাসহ অনলাইনচ্যাটের মাধ্যমে গ্রাহকদের সাথেসরাসরিযোগাযোগ করাসম্ভবহচ্ছে।

বিজ্ঞানশাস্ত্রে কম্পিউটার

কাজের ক্ষেত্রে কম্পিউটারকে ব্যবহার করাদলেমধ্যেপ্রথমসারিরদলহলএকজনবিজ্ঞানী। গবেষণার জন্য , স্থানীয় এবংআন্তর্জাতিকভাবে অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের সাথেতথ্যভাগকরেনেওয়ার পাশাপাশি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, শ্রেণীকরণ, বিশ্লেষণ এবংসংরক্ষণের জন্যকম্পিউটারকে কাজেলাগানোহচ্ছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থায় কম্পিউটার

স্কাইপ এবংজুমেরমতোসফ্টওয়্যার এবংভিডিওকনফারেন্সিং পরিষেবাগুলির জন্যকম্পিউটার ইন্টারনেটের মাধ্যমে রিয়েল-টাইম যোগাযোগ সহজকরেতুলেছে। পরিবারের সদস্যরা একেঅন্যেরসাথেভিডিওকলেযুক্তহতেপারে।ব্যবসায়িক অংশীদাররা ভিডিওকনফারেন্সের মাধ্যমে মিটিংকরতেপারে।

যাতায়াত ব্যবস্থায় কম্পিউটার

রাস্তার যানবাহন, ট্রেন, প্লেনএবংনৌযানকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওনিরাপদে চালানোর জন্যকম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করাহচ্ছে।

কম্পিউটার ও বেকারত্ব

বিজ্ঞানীদের চেষ্টার ফলএইযন্ত্রদানবের ক্ষমতাঅপরিসীম। তাঁদেরই আশঙ্কামানুষের সৃষ্টএইযন্ত্রদানবকে দিয়েকাজকরাতেকরাতেএমনএকসময়আসবে, যখনকাজেরক্ষুধায় উন্মত্ত দানবতারস্রষ্টা মানুষকেই করবেক্রীতদাস। কথাটাকে একটুঘুরিয়ে দেখলেইসত্যটাস্পষ্টহয়েদাঁড়ায়। কম্পিউটারের ব্যাপকপ্রয়ােগ ওব্যবহার মানুষকে করবেসাময়িক কর্মহীন। তখনমানুষের ক্রীড়নক নাহয়েমানুষহবেযন্ত্রের ক্রীড়নক। কম্পিউটার মানুষের কাছথেকেছিনিয়েনিবেঅনেককাজ।কম্পিউটারের ব্যবহারে ইতােমধ্যে অফিসে, শিল্পপ্রতিষ্ঠানে, বিভিন্ন সংস্থায় কর্মীরসংখ্যাউল্লেখযােগ্যভাবে হ্রাসপেয়েছে। অবশ্যঅপরদিকে কম্পিউটার বহুনতুননতুনকর্মওসৃষ্টিকরছে।অপারেটর, প্রােগ্রামার, হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি পদেবহুলােকেরকর্মসংস্থানও হচ্ছে।এইভাবেকোনােকোনােক্ষেত্রে কম্পিউটার সাময়িকভাবে কর্মশূন্যতা সৃষ্টিকরলেওসামগ্রিকভাবে এটিবহুলকর্মসংস্থানের সুযােগও সৃষ্টিকরবে।

কম্পিউটার ব্যবহারেরবিরুপ প্রতিক্রিয়া

কম্পিউটার আবিষ্কার এবংব্যবহারে আধুনিকবিশ্বতথামানবসমাজেকিছুবিরূপপ্রতিক্রিয়াও লক্ষকরাযায়।যুদ্ধ-বিগ্রহ, অস্ত্র নির্মাণ, আকাশদখলেরপ্রতিযােগিতা প্রভৃতির পেছনেকম্পিউটারের যথেষ্টঅবদানরয়েছে। এছাড়াকম্পিউটারের মাধ্যমে সৃষ্টইন্টারনেট, ভিডিওগেমপ্রভৃতির মাধ্যমে নানাকুরুচিপূর্ণ বিনােদন ব্যবস্থা তৈরিহয়েছে। কম্পিউটার অনেকসময়মানুষকে নেশাগ্রস্ত করেতােলে।তাছাড়া দীর্ঘসময়কম্পিউটারের সামনেবসেথাকাস্বাস্থ্যের জন্যক্ষতিকর। মাত্রাতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারে চোখেরক্ষতিহতেপারে, মাথাব্যথাসহ অন্যান্য শারীরিক উপসর্গদেখাদিতেপারে।

উপসংহার

কম্পিউটারের বিস্তৃত কর্মকাণ্ড নিয়েইআজকেরজগৎ।আজআরকল্পনাকরতেবাধানেইযে, আগামীদিনেকম্পিউটার হয়তােআরওদ্রুতকাজকরতেপারবে।হয়তােবা আরওবেশিনির্ভরকরাযাবেতারউপর।ভবিষ্যতে কম্পিউটার প্রােগ্রামিং-এরকাজওনিশ্চয় আরওসরলহবেএবংশুধুমাত্র ইংরেজির মতােভাষারমাধ্যমে নির্দেশ দিয়েনয়, মৌখিকনির্দেশের মাধ্যমেও তারসঙ্গেযােগাযােগ করাযাবে।অন্যান্য দেশেরন্যায়আমাদেরদেশেওকম্পিউটারের ব্যবহার দিনদিনবৃদ্ধিপাচ্ছে। অদূরভবিষ্যতে কম্পিউটারের ব্যবহার আরওবৃদ্ধিপাবে।আরওবেশিসংখ্যকমানুষকম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করেবিজ্ঞানের এবিস্ময়কর আবিষ্কার থেকেসুবিধাভোগকরবে।