পোস্টস

গল্প

শে ষ হয়ে ও হইল না শে ষ

৬ অক্টোবর ২০২৪

আবির হাসান অন্তর

কত বিশাদ আর দুঃখ কষ্ট নিয়ে জন্ম। ঘরে খাবার নাই পরনে বস্ত্র। নেই মাথা গুজানোর নির্দিষ্ট ঠিকানা। ধর্ম কর্মের তো কোন খবর নেই । আছে শুধু ত্যাগ, উদ্যম, আত্নপ্রত্যয়। নিজেকে মুক্তির এক প্রয়াস। ঠিক সেই সময় ঘরে নতুন অথিতি। যাকে পালন করার ইচ্ছা শক্তি বিন্দু মাত্র আছে বলে মায়ের মনে হয় না বুক ছিঁড়লেও যেন সামান্য খাদ্য তাঁর মুখে তুলে দেওয়া যায় না। 

 

ঠিক এভাবেই জীবনের প্রস্থান লগ্ন উম্নোচিত হয় । পরিবারে হাঁ হাঁ-কার । পূর্ণ সময়ে অজয়ের বেড়ে ওঠা শুরু। সে দেখেছে কীভাবে তাঁর মাতা একটি পরিবার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই সংগ্রাম করে গেছে। একটি ঘর তৈরির অসীম চেষ্টা। কানে থাকা স্বর্ণ কিবা রৌপ্যালংকার পর্যন্ত বিক্রি করেছে। অজয় যেন সব কিছু জয় করার লক্ষ্যে বিমূর্তের মতো গড়ে ওঠেছে। কখনো বয়সের সাথে নিজেকে উড়িয়ে মেলে ধরার মতো সুযোগ তাঁর হয় নি। পিতা তাঁর হাতের আঙ্গুলে কালি দিয়ে স্বাক্ষর করলেও অজয় দ্বারা জয় করেতে চেয়েছেন বিশ্ব ।সেই থেকেই শুরু জয় করার তাগিদ। পড়া লেখা শিখিয়ে ওক মস্ত স্যার ছেলেকে বানাতে চায়। খুব ছোট থেকেই যেন নিজের জীবনকে উপলব্ধ করতে শিখেছিল। মাত্র তিন বছর বয়সে বিদ্যা গ্রহনে বিদ্যালয়ে তার প্রথম যাত্রা।

 

শিক্ষা যেন তার জীবনের অসীম ঐশ্বর্যকে স্বাদরে গ্রহণ করতে সাহায্য করে।

 

সময় গুলো যেন এক ঘুমের মাধ্যমে অতিবাহিত হয়ে গেল। এখন অজয়ের বয়স ২৪ বছর। দেশকে তাঁর প্রায় জয় করার অন্তীম প্রান্তে। আজ তাঁর পরিবার ঠিক আগের দিনের মতো নেই, যেখানে বর্ষার রাতে ঘরের ছাউনি বেয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় মুখ হয়ে মুখ গহ্বরে পৌছাতো। আজ ও হয় অর্থ বিত্তের প্রাচুর্য গড়তে না পারলেও সমাজে একটি পরিবারে পরিনিত হয়েছে। অজয়ই নয় তার মতো করে তাঁর আরও দুই ভাই এক ছোট্ট বোন পর্যন্ত পড়াশোনা করছে। কিন্তু তাঁর আফসোসের কারণ হলো তাঁর মায়ের কানে এখনও পর্যন্ত অলংকার দুটো ওঠেনি। অজয় যখন মাত্র ক্লাস ফোর এ পড়ত তখন থেকেই তাঁর স্বপ্ন যখন প্রথম উপার্জন সে করতে সক্ষম হবে তখন সর্বপ্রথম মায়ের কানে অলংকার কিনে দিবে।

 

অজয়ের দেশ জয়ের পর বিদেশের মাটিতে পড়ার সুযোগ হয়। কিছু শিক্ষা বৃত্তি পর্যন্ত অর্জন করে। অজয় গায়ের রক্ত বে-আইনি ভাবে খাওয়া মশাকে পর্যন্ত কখনোই তাড়ায়নি। এক ভিন্ন ধর্মী মানুষ ছিল। আনন্দের সাথে বৃত্তির টাকা ঠিক যে কথা সেই কাজ মায়ের অলংকার নিয়ে বিদেশী শিক্ষাও শেষ করে হাজির মায়ের কোলে ।

 

মায়ের মুখের হাসি যেন অসীমের প্রান্ত ছুয়েছে এক অবকাশ। অজয়ের যেন বিশ্ব জয়ের পর মুখের হাসি বন্ধ করতেই পারছে না। আনন্দটাকে আরও বৃদ্ধি করেছে তাঁর ছোট্ট বেলার স্বপ্ন। সেদিন অজয় নিজেকে মুক্ত করেছিল নিজের থেকে। ঠিক এখন শুধু সমাজ থেকে লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, অপমানের বদলে সম্মান , ক্ষমতা আর উচু স্থানে অধিন হওয়া। কত না কষ্ট সে এবং তাঁর পরিবার করেছে।

 

প্রিয় ঘুম যেন অঙ্কে বেশি মুক্তি দিয়েছে তাঁর সম্পুর্ন পরিবারটিকে। কত স্বপ্নের সাধ আজ নিদ্রায় ইতি টেনে চির বিদায় নিয়ে হারিয়ে গেল । নিদ্রাকে যেন শবদেহ কর‍্তে সাহায্য করেছে । সাহায্য করেছে কষ্ট হীন লোকান্তরে পোছাতে।