Posts

চিন্তা

আত্মজৈবনিক নক্ষত্র ও ইলেকট্রনের দূরত্ব—

October 6, 2024

Muntaka Azmain Muhi

Original Author মুনতাকা আজমাইন মুহী

164
View

নেহাত এভাবে বেঁচে থাকা’টুকুকে কেবল মনে হয় নাক্ষত্রিক ইলেকট্রনের মতো। অনেক কিছু বলার ছিল, করার ছিল— ঠিক এসব ভেবে ফুরিয়ে যাবার নামই হচ্ছে জীবন। তবু আশা রাখি একদিন সুদিন ফিরবে বলে। আমার নক্ষত্র ইলেকট্রনের মতো একা আটকে আছে কোথাও।

মানুষ হয়ে জন্মানোর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে না চাইলেও অনেক কিছু সহ্য করে যেতে হয়। এই সহনশীলতা একদিন আমার মৃত্যুর কারণ হবে। এক এক সময় খুব মনে হতো যে বেঁচে থাকা কেবল নিশ্বাসের অপচয়। সবকিছুতে দর্শন খোঁজা আমার এক বদঅভ্যাস। জীবন, মৃত্যু, সময়, ক্ষয়, প্রেম সবই তো দর্শনের মধ্যেই পড়ে। মাঝেমাঝে ভাবি— যা লিখেছি তা কেবল কিছু প্রিয় শব্দের পুনরাবৃত্তি। আমার যাবতীয় অবস্থার মূলে কোনো মেয়ে, প্রেম বা ভালোবাসা জড়িত নয়; বরং নিজের এই করুণ জীবন কেবল নিজের জন্যই, যেমন একটি দীর্ঘ রাত গড়িয়ে সকাল হয়, তেমনি অনন্তকাল ধরে চলতে থাকুক এই লেখা।

মরে যাওয়ার বাসনা আছে বলেই সুন্দরভাবে বেঁচে থাকা’কে আশীর্বাদের মতো মনে হয়, না হয়, অনেক আগেই ঐ নক্ষত্রের মতো আকাশে ঘুরে বেড়াতাম।
আত্মজৈবনিক লেখার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো চাইলেই নিজেকে নিয়ে যা ইচ্ছে লেখা যায়, এমনকি যা হবার নয় তাও। এমন সৌন্দর্যের কথা ভেবেই এ লেখার দিকে একটু একটু করে এগিয়ে যাওয়া।

এই ব্যর্থ মনোরথ বয়ে চলার নাম কোনোভাবেই জীবন হতে পারে না। খুব করেই তো চেয়েছিলাম, তবুও সাংসারিক হতে পারিনি তো। একটিই তো ভয় কেবল— অন্যের দায়িত্ব নেবো কিভাবে? এটি স্বার্থপরতা নয়, নিজের প্রতি অন্যরকম এক ভালোবাসা বলা যেতে পারে। নিজেকে সামলানোর মতো জটিল কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখে অন্যের জন্য নিজেকে দায়বদ্ধ রাখা আমার বিষয় নয়। হয়তো এ কারণেই আমি সবসময় বিবাহ থেকে নিজেকে দূরে রাখবো।

এই সময় আমার চিরকালের ক্লান্তি— এক বোধ, যার অন্তরালে পড়ে আছে শুধু অর্থহীন বাসনা। সময়ের কাছে নতজানু হয়ে পড়ে আছি অবাক করুণা হয়ে। করুণার মতো ভালোবাসা কখনো আমার ছিল না। এখানে আমি আছি— চিরকালের মতো অস্তিত্বহীন এক আত্মার সাথে, আত্মজৈবনিক নক্ষত্র থেকে ইলেকট্রনের দূরত্বে।

Comments

    Please login to post comment. Login