১.
বোর্ডিং পাস নিয়েছি। চেকিং ফেকিং শেষ। প্লেনে ওঠার অপেক্ষায় বসে আছি। পাশে একজন বয়স্ক মহিলা বসা, খেয়াল করিনি।
-'কিসে যাবেন'? আমাকে এই প্রশ্ন করার পর উনার দিকে তাকাই।
-'বিমানে'! আমি ছোট করে উত্তর দিই।
-'সে তো দেখতেই পাচ্ছি। এখান থেকে তো বাস ছাড়ে না। কোন বিমানে যাবেন'?
উনার কথায় বেশ ঝাল। ইদানিং কাচা মরিচে ঝাল নেই, ঝাল কাচা মরিচের দামে। এই মহিলার কথাতেও বেশ ঝালের তেজ পাচ্ছি।
আমি আবার উনার দিকে তাকাই।
-'বাংলাদেশ বিমানে'।
আস্তে করে উত্তর দিয়ে চুপ করে থাকি।
২.
মিসড কল এসেছিলো। খেয়াল করিনি। দেখতে পেয়ে কল ব্যাক করলাম। কিন্তু উনি বুঝতে পারছেন না। আমি বললাল, একটু আগে আপনার ওপাশ থেকে কল এসেছিলো, ভাই। এ এপর্যন্ত বলার পরই দেখি ফোনের লাইন কেটে গেছে।
একটা প্রোগ্রাম থেকে ফিরছিলাম। সাথে সাফিয়া ও সাফিন। সাফিয়া বলল, আব্বু তোমাকে না পেয়ে এক ফাকে এক আন্টির মোবাইল থেকে কল দিছিলাম। তুমি উনাকে ভাই ডাকলে কেন?
মোবাইলে উনার কন্ঠ শুনে এতটুকু বোন মনে হয়নি। পুরাই ভাই ভাই লেগেছে। আর সেটা মুখে আনতেই খটাশ করে ফোন কেটে যায়।
৩.
এটাও একটা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এখনও বছর গড়ায়নি। ঢাকা থেকে সৈয়দপুরে ফিরছিলাম। সিট পড়েছে এক মেয়ের পাশে। মেয়েদের পাশে বসার অনেক হ্যাপা। কথা কম বলেন বা বেশি। দুই ক্ষেত্রেই অস্বস্তি তৈরি হতে পারে।
তবে এই মেয়েটি বেশ ব্যতিক্রম। আমরা একই জেলার বাসিন্দা। বাড়ির অবস্থানে এলাকাতো শ্যালিকা ধরে নেয়া যায়। কথায় কথায় জানলাম। কথা বার্তায় বেশ সপ্রতিভ। আপনারা যারা জানেন, তারা জানেন। আমার একটা ইন্জিনিয়ারিং সার্টিফিকেট আছে। আর সেই মেয়ে মানব দেহের মেইন্টেন্যান্স ইন্জিনিয়ার। মানে পেশায় ডাক্তার। তার আরও একটা পরিচয় আছে। সেটা বিশদ বললাম না।
বিয়ে করার জন্য কেমন ছেলে খুঁজছে। কথার কথায় সেটাও জানলাম।
বর্তমানে দেশের যে অবস্থা। নিশ্চিত সেই মেয়ে এখন গা ঢাকা দিয়ে আছে। বিয়ের জন্য হন্য হয়ে যেমন ছেলে খুজছিলো, সেই গ্রুপও বর্তমানে পলাতক।
সেখানেই সাত পাকে বাধা পড়লো কি না, জানতে পারিনি।