নাম তার সানোয়ার। ছেনি দিয়ে মানুষ মারে, তাই লোকে বলে ছেইন্না। কেউ নাম জিজ্ঞেস করলে সে বলে সানু। আর লেখার সময় লেখে ছানু। লিখতে কেবল নিজের নামটাই শিখেছে, আর কিছু না। অবশ্য আর কিছু লেখার দরকারও হয় না। পড়ারও না। হাতে নিলেই বুঝতে পারে কোনটা ক’টাকার নোট। দেখলে যে কেউ বলবে সানু একজন রাখাল, বা কৃষক, বা জেলে, বা মাঝি। আন্দাজটাকে একটু বাড়িয়ে নাচনি বাজারের চা-দোকানদারও ভাবা যেতে পারে। কোনোভাবেই এর বেশি না। এতটাই দীর্ঘদেহী যে, তুমুল ভিড়ের মধ্যেও সানুকে আলাদা করে চিনে নেওয়া যায়।
সানুকে প্রথম দেখে আমি ট্রাক ড্রাইভার ভেবেছিলাম। আমার মাথাতেই ছিল না বিশাল নলুয়ার হাওরের মাঝখানের এই বাজারে ট্রাক তো দূরের কথা, একটা রিকশাও যে নেই। নৌকাই এখানকার একমাত্র বাহন। আর আছে সাইকেল। তা-ও এখন অকেজো। হাওরে এখন উজানি ঢল, তলিয়ে আছে রাস্তা-ঘাট, সাইকেল চালাবে কোথায়? ফাল্গুন-চৈত্র মাসে, সূর্য যখন শুষে নেয় হাওরের সবটুকু জল, তখন সাইকেলের দরকার হয়।