পৃথিবীর আদিমতায় আমাদের প্রাণের উৎস সঞ্চারিত হতে হতে ঠিক নীরবতায় থেমে আসে একদিন। এক সন্ধ্যের বিমুগ্ধ চাঁদের নীচে ইতস্তত বোধ সাথে নিয়ে রাস্তার পাশের সস্তা খাবার গিলে খেয়ে ফেলে আমাদের— আবার মাকতুব পেরোনো জীবনে ফিরে যাবার শূন্যতা আঁকড়ে ধরে চিরকালের জন্য। ভুলে যেতে চাইতে চাইতে একদিন ঠিক ভুলে যেতে পারার সক্ষমতা অর্জন করে ফেলি আমরা সকলেই, শুধু এটিও ভুলে যাই বলে মনে রাখি না কিছুই। এসব প্রভাব আর অনুপ্রেরণা বাঁচানোর চাইতে যখন ভাবাবে বেশী— তখন চিন্তক মানুষের খোলসের আবরণে আর থাকা হয় না আমাদের। মানুষ আমাদের নিয়ে যা ভাবে আমরা তার চেয়ে একটু বেশী বা একটু কম হতে পারি ঠিকই — কিন্তু, যে যা ভাবে তা কিসের প্রতিচ্ছবি আদতে তা জানার ইচ্ছে আমাদের ম’রে গ্যাছে বহুদিন আগে। তৌফিকের বাইরে প্রাপ্তিসাধ্য আমাদের অনেক কিছুই থাকে। এই যেমন ইচ্ছের আবদার মেটাতে জীবন্ত মানুষের মতো ভণিতা করে বেড়ানো আমাদের অনেকেরই প্রিয়। নিজের মন’কে মানিয়ে আমরা জীবন্ত এখানে। প্রাণ তো কেবল উপলব্ধি মাত্র। যা কিছু প্রতীয়মান তা আমাদের ধারণা আর অভিজ্ঞতা কেবল। একটি স্বপ্ন আর ঘুমঘুম চোখের রাতে এলাচির স্বাদে কফির অদ্ভুত মোহে ভালোবাসা জড়িয়ে ধরে আমাদের ঠাণ্ডা বাতাসে। প্রত্যাশা রাখি যা হবে ভালো হবে, কিন্তু আমাদের উন্মাদনা আত্মোন্নতি’তে ভূমিকা রাখে আদ্যোপান্ত। নেহাত মন্দ নয়— এ’কথা বলে অস্বীকৃত উত্তর নিজের ভেতর কবর দিয়ে দূরে চলে আসি। প্রেমিকার শোকপ্রশমন ক্ষমতা কমে আসে আমাদের আয়ুর মতো। মেনে না নিলেও ধৈর্যের অফুরন্ত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়াটুকুই অবধারিত আমাদের জন্যে। কিছুক্ষণ শব্দহীন আর একা থেকে আবার কোলাহলে ফিরে আসার মতো যন্ত্রনা কেবল মানুষের ভাগ্যেই জুটে। হৃদসঙ্গমে আমাদের ভালোবাসার সাথে জোড়া লাগে জীবনের।