মোবাইলটা কেপে ওঠলো।
ভাইব্রেশন দেয়া। টেবিলে থাকায় মাইনাস ওয়ান রিখটার স্কেলে কাপাকাপি শুরু করলো। রিসিভ করলাম। রিসিভ করলে অন্তত কাপাকাপি বন্ধ হয়।
তবে কাপাকাপি বন্ধ করার সুযোগ পেলাম না। আমি ঠিক আমি কি না, একজন জানতে চাইলো। নাম ধাম যা বললো, তা অনুবাদ করলে আমাকেই দেখতে পাই।
তাকে নিশ্চিত করলাম, হ্যা, এই আমি সেই আমি, যাকে তানারা খুঁজছেন।
শুনেন, আরমান ভাই কথা বলবেন, সালাম দিয়ে সুন্দর করে কথা বলবেন।
ছোট-খাট একটা চাকরি করি। দিনে অনেকেই কল করে। এদের মধ্যে রথি থাকে, মহারথী থাকে, থাকে হাবাগোবা মতিও। এটা ওটা জানতে চায়। নমভদ্র হয়ে উত্তর দিই। বেয়াদবী করার প্রশ্নই আসে না।
সুন্দর করে সালাম দিলাম। ওপাশ থেকে আরমান ভাই সালামের উত্তর দেয়ার সময় পেলেন না। প্রায় হুংকার দিয়ে উঠলেন। না, এটাতো হইলো না। আমার বুঝে আসে না।
আপনি কে বলছেন? আমি জিজ্ঞেস না করে পারি না।
আমি আরমান, আন্ডারওয়ার্ল্ডের আরমান। হুংকারের স্কেল আরও বাড়লো। আর কিছুটা বাড়ালে প্রথম আকাশ ভেদ করে পরের স্তরে চলে যেতে পারে।
কোথায় যেন কিসের আন্দোলন করতে গিয়ে তার ছোটভাইয়েরা খুব আহত হয়েছে। আছে পাশের দেশে। চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা দরকার। আমাকে সাহায্য করতে হবে। করতেই হবে।
আমার নিজের ভাই হলে করতাম কি না? এমন আবেগী তীরও ছুড়লো আমার দিকে। আমার কিছুটা আবেগ কম, বেগও কম। কিছুই বলছি না দেখে আবার বলতে শুরু করে।
-আপনার বলা শেষ হয়েছে? আমি জানতে চাই।
-হ্যা। উত্তর দেন।
-আমি কিছুই করতে পারবোনা। বিশেষভাবে দুঃখিত। আরমান ভাইকে জানিয়ে দিই।
-আপনি না করলে আপনার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আমার লোক আপনার কাছে চলে যাবে? আপনি কি সেটাই চান? অমিতাভ বচ্চনের কেবিসির মত। অপশনও দিলো, পরিনতিও জানালো।
-জ্বী, লোক পাঠিয়ে দেন। আমি রাজি হয়ে যাই।
এরপর খটাশ করে ফোন কেটে দিলো। এটা আজ সকালের ঘটনা।
সেই থেকে ওদের অপেক্ষায় আছি। কেউ এলো না।