পোস্টস

গল্প

নিশুতি।

১৪ মে ২০২৪

Shoaib ahmed

মূল লেখক শোয়াইব আহমেদ।

এখন ঘরের দরজা বন্ধই থাকে। কিছুদিনের পরিশ্রমেই সে সবার থেকে আলাদা হয়ে গেছে। এখন আর করো সাথে মন খুলে কথা বলে না বা বলা চলে কথাই  বলে না। দিত্বীয় পদক্ষেপ হল, তাকে আমার দলে পোক্ত অবস্থান প্রদান করা। ফলে তার কানে কানে বলা শুরু করলাম, কী দেখছিস সিলিং এর দিকে। এটাই মুক্তি। ঝুলে পড়। দেখবি সবকিছু থেকে মুক্তি পেয়ে যাবি।
—কিন্তু আমার সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ আছে।
—কে বলল? অবস্থা দেখছিস নিজের, পরিবারের? আছে কোনো সম্ভাবনা?
—নেই। তবে আমার পরিবার…আমার পরিবারের কী হবে?
—তোর মনে হয় তাদের কিছু হবে? তারা তো তোর সাথে কথাও বলে না। উল্টো তুই না থাকলে তাদের ভাল। তুই-ই দেখ, তোকে ছাড়া তারা কত পরিপূর্ণ। তুই উটকো ঝামেলা। তোর দ্বারা কারো কিছু হবে না। তুই এমন বোঝা যা তাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও বহন করতে হচ্ছে….।

আমার কথা শুনে নিশ্চুপ বসে থাকলো সে। বেশি চিন্তা করতে দেয়া যাবে না তাকে। যত চিন্তা তত আমার পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার সম্ভাবনা। তাই বিলম্ব না করে আবারো বলতে লাগলাম, ঝুলে পড় এত কী ভাবছিস? এই নে ওড়না।

দৃঢ় হাতে ওড়না নিলো সে। নেমে গিয়ে পড়ার টেবিলের চেয়ার খাটের উপর সেট করল। উদ্দেশ্য প্রায় সফল। তবে আগেই প্রফুল্ল হওয়া যাবে না। আগে শুভকাজ সম্পন্ন হোক।

ধারাবাহিক অশ্রু পড়ছে তার চোখ দিয়ে। ন্যাকা। ঢঙ দেখলে গাঁ ঘিণ ঘিণ করে। নেমে গিয়ে কাগজ কলম নিলো। কতশত অভিযোগ তার মাথায় কিন্তু তার কলম দিয়ে তা বের হতে দেয়া যাবে না। ‘এমনটা, এমন হলেও হতো’ লেখতে গিয়ে যদি ‘এমন করবো’ বের হয়ে যায় তাহলেই আমার সব পরিকল্পনা শেষ। ছলে বলে তার কলম দিয়ে এটুকু বের হতে দিলাম ‘ক্ষমা করে দিও সবাই।’ 

কান্না দেখে পেট চেপে হাসি আসল। অবশেষে সে চেয়ারে দাড়াল। দৃঢ় হাতে ফাঁস বানাল। গলায় আটল। চেয়ার না ঠেলে স্থীর দাঁড়িয়ে রইল। তড় সইতে না পেরে লাথি দিলাম কোমরে। ফাঁসে পড়েছে দেখে আত্মপ্রকাশ করলাম তার সামনে।

হাসি চেপে বললাম, তোর হাতে সাত সেকেন্ড সময় আছে। জানিস আমি কে? সবাই বলে জগৎ বধির কিন্তু শুনে সবাই আমারটাই। অন্ধকার থেকে কালো আমি। অশুভ প্রাথণা, নিষিদ্ধ মন্ত্র, আমাকে পূজো দেয় নরকের ইন্দ্র। বিষও আমি। অমৃতও আমি। আমি সৃষ্টি। আমি ধ্বংস। লোকে বলে আমি কাউকে ছাড়ি না। এই খেলার একটাই নিয়ম, আমি যত ছলনাই দেখাই, আমার ধোঁকায় পা দিবি না। আর আমার থেকে বাঁচার একটাই পদ্ধতি, আমায় নিজের মাথায় স্থান দিবি না।

(এই সাত সেকেন্ডেই তার সাড়ে চার ইঞ্চি গলা সাত ইঞ্চি হয়ে গেল।)