নিশিথের নীল আকাশে এক ফালি চাঁদ ঝুলে ছিল। সেই রাতে গ্রামের ছেলেটি, আরিফ, বাড়ির পাশে নদীর ধারে বসে ছিল। তার চোখে কৌতূহল আর মনে একরাশ প্রশ্ন। সে একদিন চেয়েছিল বিশ্বজয় করতে। কিন্তু জীবনের কঠিন বাস্তবতা তাকে গ্রামেই বেঁধে রেখেছে।
আরিফের মা চুপচাপ রান্নাঘরে কাজ করছিলেন। বাবা দিনমজুরের কাজ সেরে ক্লান্ত শরীরে বসে ছিলেন বারান্দায়। আরিফ নিজের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে মনের মধ্যে লড়াই করছিল।
“আরিফ, বাবা, তোমার লেখাপড়ার কি হলো? এত মন খারাপ কেন?” মায়ের কণ্ঠে চিন্তার ছাপ।
“মা, আমার ইচ্ছে ছিল বড় শহরে গিয়ে পড়াশোনা করবো। কিন্তু এই গ্রামে পড়ে আছি। আর কতদিন এভাবে চলবে?” আরিফের গলায় হতাশা।
মা হাসিমুখে বললেন, “বাবা, জীবন তো নদীর মতো। কখনো সোজা, কখনো বাঁক। বাঁধা এলে থেমে গেলে চলবে না। নদী যেমন সমুদ্র খুঁজে নেয়, তেমনি তুমিও তোমার স্বপ্ন খুঁজে পাবে।”
মায়ের কথা শুনে আরিফের মনে সাহস এলো। সে ভাবলো, “হ্যাঁ, আমি যদি এখানে থেকে পড়াশোনা করি এবং মনোযোগ দিই, তাহলে সফলতা নিজে থেকেই আসবে।”
সেই রাতে আরিফ তার বই নিয়ে বসে পড়লো। প্রতিজ্ঞা করলো, ছোট্ট এই গ্রাম থেকেই সে একদিন বিশ্বজয় করবে। কারণ স্বপ্ন দেখার কোনো বাঁধা নেই।
পরের দিন ভোরে, নদীর ধারে বসে আরিফ আবারও চাঁদের দিকে তাকাল। চাঁদ তাকে যেন বলছে, “তোমার আলো ছড়াও, ঠিক যেমন আমি ছড়াই।”