পোস্টস

পোস্ট

কায়রোর নীলচিঠি ও অন্যান্য .৫

২৯ নভেম্বর ২০২৪

মুয়ায আবদুল্লাহ

কিভাবে কিভাবে একটা বছর কেটে গেলো—ভাবলে শুধু অসহায় বৃদ্ধ লাগতে থাকে নিজেকে।‌ জ্বরগ্রস্ত ভীষণ কোনো রোগী মনে হয়, যার সমস্ত আয়ুরেখা মন্থর হয়ে গেছে। অথচ বইতে হচ্ছে ঝাপসা, জগদ্দল সব পাথর প্রলাপ।

 

আজ আমার কতো কী মনে পড়ছে! ফেলে আসা গোটা এক যৌবন, বালকবেলা। মোহাম্মদপুরের চিরচেনা হাওয়া ও স্মৃতির গল্প। আমি কি জানতাম—মানুষের সঙ্গ আমার এতোটা জরুরি!

 

নভেম্বর মাসটা সেইবার দ্রুত ফুরাচ্ছিলো, কমে আসছিলো অজানা সন্ধ্যার দূরত্ব। বুঝতে পারছিলাম—কী হারিয়ে ফেলছি। এক জীবনে সেইসব মুহূর্ত আর যে ফিরে পাবো না—এই অনুভূতিটা ভোঁতা হয়ে গিয়েছিলো। হয়তো সেটাই ছিলো প্রবল ভাঙন-পূর্ববর্তী থমথমে আবহাওয়া!

 

শেকড় উপড়ানো, বিধ্বস্ত একটা আমাকে আবিষ্কার করলাম প্রত্নতাত্ত্বিক এই শহরে। প্রচুর ঘুরলাম, প্রাচীন সভ্যতার গলিপথ মাড়ালাম—কাউকে বলতে পারলাম না চোখ পোড়ানোর কথা। কতোটা নিঃশব্দে লীন হলাম—চেপে গেলাম সেই সংবাদটাও। অনুভুতিহীন একটা জীবনের সঙ্গে সহজ হয়ে উঠলাম। প্রতিদিন গৎবাঁধা বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে সময়, অসহায় চোখে তাই-ই দেখি।

 

মায়ের হাতে খাওয়ার শিশুসুলভতা থেকে বের না হতেই অকুল এক দুনিয়ায় এসে পড়লাম—যেখানে গৃহস্থালি শিখতে হলো, শিখতে হলো অবোধগম্য সব নিয়মরীতি। বিশ্বখ্যাত একটা ভার্সিটির অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বশীলদের বর্ণবাদী আচরণ আর অহেতুক হয়রানি—ক্লান্ত করে দিলো। কে বুঝবে আমার সংবেদনশীল হৃদয়ের পাঠ পরিক্রমা!

 

ঠগবাজের মহোৎসবে আজকাল পৃথিবীটা অনেক ভারী মনে হয়। চূড়ান্ত ক্রাউডি আর বিকৃত একটা ভাষার বর্ষণে ক্লান্ত লাগে খুব। আমি মুক্তি চাই—ফুলেল অভ্যর্থনার এই কারাগার থেকে। ফিরতে চাই মা, মাটি আর প্রেমিকার রাইসুন্দরে।