আমার নাম আমেরিগো। আমার বয়স ১৩ বছর এবং আমি একা একা রাস্তায় বসবাস করি। বাবার সাথে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া আমার মা আমাকে চান না। তিনি আমাকে চলে যেতে বলেন….. তিনি এখন অন্য একজনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। আমার বাবা অনেক দূরে থাকেন। আমি তার কাছে যেতে চাই, কিন্তু তিনিও আমাকে গ্রহণ করবেন না। আমি তাকে কিছু টাকা পাঠাতে অনুরোধ করেছিলাম যাতে আমি বাসের টিকেট কিনতে পারি। আমি এখনও অপেক্ষা করছি। তিনি কোনো উত্তর দেননি।
এখন রাস্তাই আমার বাড়ি। মাঝে মাঝে আমি কাজ পাই। আমি আবর্জনা থেকে জিনিসপত্র সংগ্রহ করে একজন হকারের কাছে বিক্রি করতাম। একটি মারাত্মক ঘাঁ হওয়ার পর আমি তা করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম এবং একজন ডাক্তার আমাকে ময়লা-আর্বজনা থেকে দূরে থাকতে বলেছিলেন। এক সময় আমি একজন আইসক্রিম দোকানে মালিকের অধীনে কাজ করতাম এবং সৈকতে আইসক্রিম বিক্রি করতাম। কিন্তু বিনিময়ে আমি কোনো টাকা পাইনি। দোকান মালিক আমাকে সামান্য কিছু খেতে দিতেন এবং যন্ত্রণাদায়ক ছিল।
আইসক্রিম বক্স পূর্ণ থাকলে তা খুবই ভারি হয়ে যায়। ক্রেতাদের কাছে আইসক্রিম বিক্রির জন্য আমাকে ঘন্টার পর ঘন্টা হাঁটতে হতো। এমন দিনও ছিল যেদিন আমি একটা আইসক্রিমও বিক্রি করতে পারিনি।
একদিক থেকে, আমি ভাগ্যবান কারণ আমি বেঁচে আছি। আমার বন্ধুরা, যারা আবর্জনা বাছাইয়ের কাজ করে, তারা প্রায়ই মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়। তাদের একজন কিছুদিন আগে আবর্জনা স্তূপের খোলা গর্তে পড়ে মারা গিয়েছে। আমরা অনেকেই দিন ১০ থেকে ১২ ঘন্টা কাজ করি এবং এর বিনিময়ে খুব সামান্য টাকা পাই যা দিয়ে আমরা খাবারও কিনতে পারি না।
পথশিশুদের মাঝে জুতা পলিশ করার কাজটি বেশ প্রচলিত। আমার কিছু বন্ধু কারখানা ও ওয়ার্কশপে (কর্মশালা) কাজ করে। আমার পরিচিত একটি ছেলে একটি কাচের কারখানায় কাজ করত, সেখানে একটি গরম গ্লাসখন্ড চোখে পড়ে তার একটি চোখ হারিয়েছে। মালিক চিকিৎসা খরচ দিতে রাজি হয়নি এবং তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছিল সে।
অন্যান্য সব পথশিশুদের মতো আমার জন্যও এটা খুবই কষ্টকর। আমি সব সময় ক্ষুধার্ত থাকি এবং আমি জানি না পরবর্তী রাতে আমি কোথায় ঘুমাবো। আমার নিজের বাড়িতে থাকতে এবং শান্তিতে ঘুমাতে ইচ্ছা হয়। শীতকালের রাতগুলো প্রচন্ড ঠান্ডা হয়। তুমি রাস্তায় শীতে মারাও যেতে পারো।