একদিন এক ছোট্ট গ্রামে, যেখানে সবুজে ঘেরা পাহাড় আর ঝর্ণার শব্দ ছিল, সেখানে এক বাচ্চা ছেলে নাম ছিল আরাফ। আরাফ সবসময় পাহাড়ের মধ্যে ঘুরে বেড়াত এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করত। তার প্রিয় ছিল পাখিদের গান। ছোটবেলা থেকেই সে জানত, পাখিরা প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ, আর তাদের গান ছিল জীবনের অঙ্গ।
কিন্তু একদিন, আরাফ লক্ষ্য করল, পাখিরা আর আগের মতো গান গাইছে না। অদ্ভুত নীরবতা ছিল চারপাশে। আরাফ তার দাদার কাছে গেল, যিনি গ্রামটির প্রবীণ ব্যক্তি ছিলেন। দাদা বললেন, "এই পৃথিবী যতটা সুন্দর, ততটাই ক্ষতিকরও হতে পারে। পাখির বিলুপ্তির কারণ মানুষের অযত্ন, বৃক্ষ কাটা, বনভূমি ধ্বংস আর দূষণ।"
আরাফ জানতে চাইল, "কিন্তু, দাদা, প্রকৃতিতে পাখির অভাব কেন আমাদের প্রভাবিত করবে?"
দাদা একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বললেন, "পাখিরা শুধু গাইতো না, তারা প্রকৃতির সুরক্ষিত রক্ষক ছিল। তারা বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করত, ফুলের পরাগায়ন করত, এবং খাদ্য শৃঙ্খলার অঙ্গ ছিল। পাখিদের অভাব মানে, প্রকৃতিতে এক বিরাট ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হচ্ছে।"
আরাফ মনে মনে ভাবল, কীভাবে মানুষ নিজেদের উন্নতির জন্য প্রকৃতিকে ধ্বংস করছে। সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করল যে, সে নিজে বন ও পরিবেশ রক্ষা করার চেষ্টা করবে, এবং অন্যদেরও সচেতন করবে।
কিছু বছর পর, আরাফের গ্রামে আবার পাখিরা ফিরে এল। সে জানত, এটি একটুকু প্রচেষ্টার ফল। মানুষ যখন প্রকৃতিকে রক্ষা করবে, তখন প্রকৃতি নিজেই তার ক্ষতি পূর্ণ করবে।