Posts

গল্প

অন্ধকারের চোখ: নির্জন ট্রেইলের ভয়ংকর রাত

December 26, 2024

Abdullah Al Siam

53
View
অন্ধকারের চোখ: নির্জন ট্রেইলের ভয়ংকর রাত

একজন পর্বতারোহী সিদ্ধান্ত নিলেন একা একদিনের জন্য ট্রেকিংয়ে যাবেন। এটি ছিল তার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। সারা দিনটাই ছিল স্বাভাবিক। চারপাশে ছিল গাছ আর ঝোপঝাড়ের সমাহার। পাহাড়ি প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে বেশ উপভোগ করছিলেন তিনি। সবকিছুই স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল, যতক্ষণ না তিনি তার গাড়ির দিকে ফেরার পথে কিছু অদ্ভুত বিষয় লক্ষ্য করলেন। আট ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রা শেষে ফেরার পথে তিনি টের পেলেন যে, ট্রেইলটি তার চেনা মনে হচ্ছে না। অচেনা পরিবেশে হঠাৎ করে আতঙ্ক ভর করল তার মনে।

এতক্ষণে রাত নেমে এসেছে, আর তার কাছে ছিল কেবল একটি টর্চলাইট। তবে কোন পথে ফিরবেন, তার কোনো ধারণা নেই। বুঝতে পারলেন যে, এই গভীর অরণ্যের ভেতর রাতটা কেটে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আশ্রয়ের চিন্তায় যখন দিশেহারা, তখন হঠাৎ করেই তিনি একটি পরিত্যক্ত কুঁড়েঘরের খোঁজ পেলেন। ঘরটি বছরের পর বছর ধরে অযত্নে পড়ে আছে বলে মনে হলো। অন্ধকারাচ্ছন্ন এই ঘরটিই এখন তার রাত কাটানোর একমাত্র আশ্রয়।

দরজায় কয়েকবার ধাক্কা দেওয়ার পরও কোনো সাড়া পেলেন না, তাই বাধ্য হয়ে নিজেই ঢুকে গেলেন। ঘরের ভেতরে ঢুকে তার চোখে পড়ল একটি একক বিছানা, যেন কারও জন্যই প্রস্তুত। তিনি ভাবলেন, ঘরের মালিক যদি ফিরে আসেন, তবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন। মনে হলো হয়তো মালিক আর বেঁচে নেই। ঘরের মালিককে চিন্তা না করে তিনি ক্লান্ত শরীরে বিছানায় শুয়ে পড়লেন।

কিন্তু ঘুমানোর আগে, তার চোখে পড়ল ঘরের দেয়ালজুড়ে সাজানো অদ্ভুত সব পোর্ট্রেট। প্রতিটি চিত্রে এক অদ্ভুত হাসি আর চাহনি যা তার মেরুদণ্ড বেয়ে ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দিল। তিনি নিজেকে বোঝালেন, এগুলো নিছকই পেইন্টিং। শারীরিক ক্লান্তি তাকে এই অস্বস্তি ভুলিয়ে দিল। তিনি গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলেন।

পরদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে তিনি এক বিস্ময়কর দৃশ্য দেখলেন। ঘরের দেয়ালে কোনো পেইন্টিং নেই। এগুলো আসলে জানালা ছিল—আর সেই জানালাগুলো দিয়ে গভীর জঙ্গলের ভেতর থেকে অনেক চোখ তাকে দেখছিল...

Comments

    Please login to post comment. Login