পর্ব ১
সকালের মিষ্টি রোদের আলো চোখে পড়তেই চোখ পিটপিট করে তাকালো অনুনয়। চোখ মেলতেই দেখতে পেলো তার মাকে। বাবা অনুনয় অনেক বেলা হয়ে গেছে উঠ এবার। আজ অফিস নেই বলে এতো ঘুমানো যাবে না। আরেকটা কাজ আছে বাবা বিশেষ কাজ। ঘুমঘুম চোখে অনুনয় বলতে শুরু করলো এতো সকালে কিসের বিশেষ কাজ মা? একটু ঘুমাতে দাও, ঘুম থেকে উঠে করে দিবো। বাবা নয়টা বাজে উঠ আর বিশেষ কাজটা হলো আজ তোর জন্য মেয়ে দেখতে যাবো। আমাদের অনেকটা পথ যেতে হবে উঠে পর বাবা আমার। এ কথা শুনে অনুনয় এক লাফে শুয়া থেকে বিছানায় উঠে বসলো।কি বললে মা, মেয়ে দেখতে যাবে মানে। এসবের মানে কি!! আমি কোনো মেয়ে দেখতে যাবো না বলে দিচ্ছি। আমি এখন বিয়ে করবো না। বিয়ে করবি না মানে। আমি সবে মাত্র চাকরিটা পেয়েছি, কিছুদিন যেতে দাও। কি বললি তুই সবে মাত্র চাকরিটা পেয়েছিস। দুবছর যাবত আমি একি কথা শুনে যাচ্ছি সবে মাত্র চাকরিটা পেয়েছি। তোর বয়সি সব ছেলেমেয়েরা বিয়ে করে ফেলেছে। তাদের ছেলেমেয়েও হয়ে গেছে। আর এদিকে তোকে তো বিয়ের জন্য রাজি এই করতে পারি না। বিয়ে অবধি তো কল্পনাই করতে পারি না। দেখবি হঠাৎ একদিন মরে যাবো, তখন বুঝবি। মা তুমি এসব কি বলছো। পাগল হয়ে গেছো। মুখে যা আসছে তাই বলে যাচ্ছো। কি বলছি যা বলছি সব ঠিক বলছি। তরা কিভাবে বুঝবি আমার দুঃখ। আমার ইচ্ছের তদের কাছে কোনো মূল্য আছে। আমারও তো ইচ্ছে করে কারো সঙ্গে দুটো কথা বলতে। তুই সারাদিন থাকিস অফিসে। আমি সারাদিন বাসায় কিভাবে সময় কাটায় সে খবর তুই রাখিস। সেটা রেখে কি হবে। ভালো ভালো খাবার ভালো ভালো পোষাক এগুলো দিচ্ছিস আর ভাবছিস মা তো এগুলোতেই খুশি। আমার খুশির খবর কাউকে রাখতে হবে না। আজ তোর বাবা বেচে থাকলে হয়তো আমাকে এভাবে একা অনুভব করতে হতো না। ঠিক আছে বাদ, কোথাও যেতে হবে না। আমি ওদের না বলে দিচ্ছি। তুই বরং ঘুমা। মা, শুনো এদিকে তাকাও। কি হয়েছে, কফি লাগবে পাটিয়ে দিচ্ছি রিমির মাকে দিয়ে। না মা কফি লাগবে না, এদিকে আসো বসো। কি বলবি বল।বলছি মা আমি মেয়ে দেখতে যাবো তবে আমার একটা শর্ত আছে। সত্যি যাবি। কি শর্ত। যেই মেয়েকে এ বাড়িতে নিয়ে আসবে তুমি আর সে মেয়ে কখনো ঝগড়া করতে পারবে না। যদি ঝগড়া করো এর পরের দিনই আমি ওই মেয়েকে তার বাবার বাড়িতে দিয়ে আসবো। ঝগড়া কেন করবো আমি তোর বউকে আমার মেয়ের মতো রাখবো। তুমি মেয়ের মতো রাখতে চাইলে কি হবে ওই মেয়ে যদি ভালো না হয়। ভালো হবে না কেন। ভালো মেয়ে দেখেই তো আনবো। আর তাছাড়া তকে এসব নিয়ে কে ভাবতে বলেছে। বিয়েটা আমি করবো মা তাই এগুলো তো আমাকেই ভাবতে হবে। বুঝতে পেরেছি তকে বিয়ে করতে হবে না। আরে মা তুমি রাগ করছো কেন আমি একটু মজা করছিলাম। ঠিক আছে যাও যাবো। এবার তোমার কোলে একটু মাথা রাখতে দাও তো আর মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দাও। এই তো লক্ষী ছেলের মতো কথা। আর অন্য দিকে ক্ষণপ্রভা সবে মাত্র ভার্সিটির জন্য তৈরি হচ্ছিলো। তার মা এসে বললো শুন ক্ষণপ্রভা আজ ভার্সিটি যেতে হবে না মা। ক্ষণপ্রভা চোখ বড় বড় করে মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো আজ ভার্সিটি যাবো না কিন্তু কেন। এতো কেন কেন করিস কেন? বিশেষ প্রয়োজন আছে তাই বলছি যেতে হবে না। বিশেষ প্রয়োজনটা কি সেটাই তো জানতে চাইছি মা। বকছো কেন? তকে আমি আবার কখন বকলাম?……………