পর্ব ২
মাত্রই তো তুমি আমায় বকেছো। আমি মাত্রই তকে বকেছি। এটাকে কি কেউ বকা বলে? ততা নয়তে কি। বাদ দাও এবার বলো কেন ভার্সিটি যাব না। আসলে মা আজ তকে দেখতে আসছে, তাই। ক্ষণপ্রভা ভ্রুকুঞ্চন করে বললো, দেখতে আসছে মানে, মা? হ্যাঁরে আজ তকে দেখতে আসছে। দেখ মা তুই অনেক বারন করেছিস এবার আর না করিস না। তোর বাবা কিন্তু এবার অনেক সিরিয়াস। ছেলেটা অনেক ভালো।ময়মনসিংহ এগ্রিকালচার থেকে পড়াশোনা করেছে, এখন ভালো একটা কোম্পানিতে জব করছে। তোর বাবা ভালো করে খোঁজ নিয়েছে। সব দিক দিয়ে ঠিক মনে হয়েছে, তাই ওনাদের আসতে বলেছে। তুই কিন্তু কোনো বাড়াবাড়ি করবি না। তোর বাবা কিন্তু রেগে যাবে। কিন্তু, মা আমার একটা কথা আছে। কি কথা? ছেলেকে যদি আমার পছন্দ না হয় আমি কিন্তু বিয়ে করবো না, বলে দিলাম। তুমি বাবাকে গিয়ে বলে দাও।পাগলী মেয়ে তোর পছন্দ ছাড়া কি আমরা তোকে বিয়ে দিয়ে দিবো। আমি যাচ্ছি, অনেক রান্না করতে হবে। আমিও আসবো কি? কোনো সাহায্য করতে হবে না। না, তোকে কোনো কাজ করতে হবে না। তুই তোর রুমটা গুছিয়ে রাখ আর রুম থেকে একদম বের হবি না। সাহায্যের জন্য তোর বড় পিসি আসছে আর তোর মামী আসছে। সত্যি, বড় পিসি আসছে আবার মামীও। শুধু ওরা না আরও অনেকেই আসছে। মা,এবার তাহলে আমাকে বিয়েটা দিয়েই দিবে তোমরা। যা দেখতে পারছি আর আমার এবাড়িতে থাকা হবে না। এতো কথা বলিস কেন? চুপচাপ রুমে বসে থাক, আমি যাচ্ছি।
কিরে বাবা তোর হলো? আমরা তো এবার বের হবো।হয়ে গেছে। মা, শুধু কি তুমি আর আমি যাবো? না,তোর মামা মামী আর রোশাও যাচ্ছে। ওওও তাই বলো। আমি ভাবলাম শুধু আমি আর তুমি যাবো। মা, দেখতো সব ঠিক আছে কিনা? বাহ! আমার ছেলেটাকে একদম রাজপুত্রের মতো লাগছে। বলছো? হ্যাঁ, সত্যি। তুই তো বিয়েই করতে চাস না, এখন আবার এতো সাজার কি আছে। বিয়ে করতে চাইছি না বলে কি একদম দেবদাস সেজে চলে যাবো নাকি। আমার কোনো ইমেজ নেই। ঠিক আছে চল বুঝতে পেরেছি। হুম, যাও তুমি আমি আসছি। অনুনয়ের মা বসার ঘরে যেতেই কলিং বেল বেজে উঠলো। রিমির মা দেখতো কে এসেছে। দেখতাছি, দিদি। দরজা খুলতেই দেখলো অনুনয়ের মামা- মামী আর রোশা এসেছে। কে এসেছে রে। দিদি, ভাই আর বউদি আইছে। আইয়েন ভাইজান। ভিতরে আইয়েন। তারপর ওরা ভিতরে আসলো। ভাই তুই কেমন আছিস? বউদি কেমন আছো? রোশা, এভাবে পিসিকে ভুলে গিয়েছিস? ভুলবি এই তো এখন বড় হয়ে গেছিস। আগে তো পিসিকে ছাড়া এক পাও চলতে পারতি না। আরে পিসি ভুলিনি তোমাকে। জানি সব ভুলিসনি। বোন, আগে বল তুই কেমন আছিস? হ্যাঁ, ভাই ভালো আছি। অনেক কষ্টে তোমার ভাগ্নটাকে রাজি করিয়েছি। তা ফুলদি মেয়েদের বাড়ি কোথায় গো? ময়মনসিংহ। হে গো মিরপুর থেকে ময়মনসিংহ যেতে কতক্ষণ লাগবে? কতক্ষণ আর লাগবে এই ধর তিন ঘন্টা। তোমার ছেলে কোথায় ফুলদি? কখন বের হবে? এখনি বের হবো বউদি। এই তো অনুনয় চলে এসেছে। চল বাবা এবার বের হতে হবে দেরি হয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ, চলো। আমি গাড়ি বের করছি। রোশা অনুনয়ের পিছন পিছন যাচ্ছে আর কল্পনা দেবী, পার্বতী দেবী আর বিশ্বনাথ বাবু ওনারা নিজেদের মধ্যে এটা সেটা টুকটাক কথা বলছেন। হটাৎ এই রোশা অনুনয়কে ডাক দিলো, দাদা তোমাকে তো ভারি হেন্ডসাম লাগছে। আমাকে হেন্ডসাম লাগছে। লাগবেই তো কিন্তু কি জানিস রোশা তোকে কিন্তু একদম গেছো ইদুঁরদের রানীর মতো লাগছে। কি বললে তুমি আমাকে গেছো ইদুঁরের মতো লাগছে। আরে বাবা তুই রেগে যাচ্ছিস কেন? একবার তোকে আমি রানীর সাথে তুলনা করেছি। রাণী না ছাই। আজাইরা, তোমাকে একটুও হেন্ডসাম লাগছে না, তোমাকে তো ঐ ঐ। ঐ ঐ কি করছিস যা বলবি বলে ফেল। মনে তো করতে দিবে আমি তো তোমার এতো নয় যে সাথে সাথেই বলে দিবো। আমাকে তো চিন্তা করতে হবে। তখনই বিশ্বনাথ বাবু বলে উঠলেন কি চিন্তা করতে হবে রে। বাবা দেখো না, দাদা আমাকে কি সব বলছে। কল্পনা দেবী বললেন রোশা ঝগড়া বাদ দাও আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ, মামী আমি তো এটাই বলছিলাম। সবাই গাড়িতে উঠো। সবাই গাড়িতে উঠার পর গাড়ি চলা শুরু করলো।
কি গো শুনছো ওরা কি রণা দিলো। আসতে কতক্ষণ লাগবে, বললেন ক্ষণপ্রভার মা চারুলতা। হ্যাঁ, চারু ওনারা কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে। সবকিছু ঠিকঠাক করে গুছিয়ে রাখো আর তোমার মেয়েকে বলো যেন তৈরি হয়ে থাকে। তোমাকে চিন্তা করতে হবে না ও তৈরি হয়ে থাকবে। হুম, তাই যেন হয়………..