ক্ষণপ্রভার বড় পিসি জয়া তার বাবা পলাশ বাবুকে বলছে , পলাশ তা বলছি ছেলে কি করে আর খোঁজ নিয়েছিস তো ঠিক করে? হ্যাঁ, খুব ভালো করে খোঁজ নিয়েছি। ছেলে এগ্রিকালচার একটা কোম্পানিতে জব করে। আমি সেখানেও খোঁজ নিয়েছি, ছেলের কোনো খারাপ দিক পাইনি। তারপরও ওনারা আসুক। ওনাদের সাথে কথা বলি আমাদের মেয়ে ওনারা দেখুক আমরাও ছেলেকে সামনা সামনি দেখি। পরেরটা দেখা যাবে। তা তুই একা কেন এসেছিস সত্যজিৎ কোথায়? ও না একটু কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, আসতে চেয়েছিলো। ওওওও, তাহলে মৃদুকে তো আনতে পারতি। মৃদু ওর কথা আর বলো না, বলেছিলাম আমি একা যাবো চল। কিন্তু, কে শুনে কার কথা। আরেকটা কথা, প্রভাটাকে একটু গিয়ে দেখ কি করছে। যাচ্ছি, তোকে এসব নিয়ে ভাবতে হবে না। এর মধ্যেই কলিং বেল বেজে উঠলো। হে রে পলাশ দেখ ওনারা হয়তো চলে এসেছে। হুম দেখছি, তুই ঐ দিকটা দেখ। পলাশ বাবু গিয়ে দরজা খুলতেই দেখলেন ওনারা চলে এসেছে। আরে আপনারা যে, আসোন ভিতরে আসুন। পলাশ বাবু পথ দেখিয়ে স্বযত্নে নিয়ে গেলেন সবাইকে। বসুন না, দাড়িয়ে আছেন কেন? আপনাদের আসতে কোনো সমস্যা হয়নি তো? বসতে বসতে পার্বতী দেবী বললেন, আরে দাদা এতো ব্যস্ত হবেন না।আমাদের আসতে কোনো সমস্যা হয়নি। কি যে বলেন, দিদি তা বলছি কেমন আছেন? বাবা অনুনয় ভালো আছো? জি আংকেল ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন। হ্যাঁ, বাবা ভালো। দিদি বলছিলাম আপনাকে তো আগে থেকেই চিনি, ওনারা তাদের তো চিনি না। আমি বিশ্বনাথ পার্বতীর ভাই আর কল্পনা দেবীর দিকে তাকিয়ে বললেন এটা হচ্ছে আমার মিসেস কল্পনা। রোশার দিকে তাকিয়ে বললেন ও হচ্ছে আমার একমাত্র মেয়ে রোশা। রোশা মামনি ভালো আছো? জি আংকেল ভালো। কল্পনা দিদি আপনি ভালো আছেন? হ্যাঁ, দাদা ভালো। আপনারা একটু বসেন আমি আসছি, পলাশ বাবু উঠে রুমে গেলেন বলছি চারু ওনারা যে চলে এসেছেন সে খেয়াল কি তোমার আছে? ককি বলো চলে এসেছেন। তুমি যাও আমি এখনি আসছি। হ্যাঁ, তাড়াতাড়ি এসো।তারপর পলাশ বাবু আবার বসার ঘরে চলে গেলেন। চারু দেবী জল খাবার নিয়ে বসার ঘরে গেলেন। খাবার টে টা টেবিলে রাখতে রাখতে বললেন, কেমন আছেন আপনারা? কল্পনা দেবী বললেন, ভালো দিদি।পলাশ বাবু বললেন চারু বসো, এই হচ্ছে মেয়ের মা, চারুলতা। বলছি, আপনারা তো কিছুই নিচ্ছেন না,বললেন চারু দেবী। পার্বতী দেবী একটা শরবতের গ্লাস হাতে নিতে নিতে বললেন, আপনারাও নিন। কিছুক্ষণ পর পার্বতী দেবী বললেন, বলছি এবার যদি মেয়েকে নিয়ে আসতেন। হ্যাঁ,অবশ্যই। চারু দাও তো প্রভাকে নিয়ে এসো। চারুদেবী উঠে গেলেন ক্ষণপ্রভার রুমে। বাহ! আমার মেয়েকে তো একদম পরীর মতো লাগছে। চল এবার যেতে হবে। মা, আমার অনেক ভয় লাগছে। জয়া দেবী বললেন, দুর পাগলী এতো ভয় পাওয়ার কি আছে চল। পিসি, আমার তবুও ভয় লাগছে। একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নে আর চল। ক্ষণপ্রভা একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে সাথে অনেক সাহস জুগিয়ে চা হাতে পাত্র পক্ষের সামনে হাজির হলো। সে মনে মনে আবোল তাবোল করছিলো। এটা তো তার ছোটবেলাকার অভ্যাস একা একা বকবক করা। একাএকা বললে ভুল হবে সে তো সারাক্ষণ ভগবানের সঙ্গে কথা বলে। যত অভিযোগ, যত মন খারাপ সব তো সে এই একজনকেই মন খোলে বলতে পারে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পাত্র পক্ষের সামনে বসে আছে ক্ষণপ্রভা। আর এদিকে অনুনয় যে কি না এখন পর্যন্ত একটি বারের জন্য তাকায়নি তার দিকে। অনুনয়ের মা জিজ্ঞেস করলো মা তোমার নাম কি? ক্ষণপ্রভা ছোট করে উত্তর দিলো ' ক্ষণপ্রভা চ্যাটার্জি '। ক্ষণপ্রভাও একটিবারের জন্য অনুনয়ের দিকে তাকায়নি।অনুনয় তার কান অবধি তো ক্ষণপ্রভার কথা পৌঁছালোই না। সে তো মগ্ন অন্য চিন্তায়, তার কানে এসব যে কিছুই পৌঁছাতে পারছে না। অনুনয় তো সে এখনই বিয়ে করবে না, আর এভাবে তো একদমই না..........