*
অযাচিত দুঃখদের অতিক্রম করে এসেছি, ছুঁতে আর পারে না এখন। অথবা ছোঁয়, কিন্তু তার আঁচ নিজের ভেতর হিম হয়ে থাকা হু হু পাখির হৃদয়ে মিশে যায়। সেই পাখি উড়তে চায়, ডানা নেই। কেবল শীতল, স্থবির এক অপেক্ষা তার— মহাকালের ভেতর আটকে থাকা দীর্ঘ নিঃশ্বাসের মতো।
আমাকে ছেড়ে যাওয়া মানুষের চোখের জল নীল। নীল—যে রঙে মিশে আছে সমুদ্রের ফেনা, আকাশের দূরত্ব কিংবা রুহানি কোনো সুর। আমি সেই নীল জলে ডুবি না, ভেসেও থাকি না। বরং মসৃণ হাসিমুখের মতো অকারণ জেগে থাকি পাশাপাশি, স্থির। কী এক অদ্ভুত, অবশ অনুভূতির সমীপে এইসব মার্সিয়া!
মনে হয়, বিষাদ আর আমি কোনো এক অলিখিত চুক্তিতে আবদ্ধ। দু'জন দু'জনকে এড়িয়ে চলি। অথচ কোথাও গভীরে, দুঃখ হয়তো আমার মধ্যে পাখির মতোই বেঁচে থাকে। সেই পাখি গান গায় না, কেবল তার ক্ষত ঢেকে রাখতে— নিজের পালক গুটিয়ে বসে থাকে।
কখনো ভাবি, আমার এই মসৃণ মুখোশের আড়ালে কেউ একজন পুড়ে যাচ্ছে। তবুও ফিরে দেখি না। হয়তো এটাই জীবনের আপাত রূপ—বুকে ভূমধ্যসাগর পুরে, অপ্রকাশ্য পাখির হৃদয়ে বাস করে যাওয়া।
তুমি কি কখনো এই অনুভূতির কাছে এসেছো? নিজেকে আবিষ্কার করেছো একখণ্ড পাথর আর ডানাভাঙা পাখির মিশ্রণে! আমি ঠিক সেই সুরের মধ্যে আছি—যেখানে নীল জলের গান কখনো শেষ হয় না।
১১|১|২৫