আমি রক্ত মেখে জন্মােছি,
তবু কোনো হিংস্র গর্জন নেই আমার,
আমি কেবলই এক অনির্বাণ শপথ—
সময়ের কপালে লেখা এক দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।
আমি নদীর বুকে বাঁধা প্রথম সূর্যরশ্মি,
পাহাড়ের শৃঙ্গে জেগে থাকা নীল শপথ।
আমার শিরায় প্রবাহিত হয় এক অমোঘ প্রতিরোধ,
যেখানে বজ্র থমকে দাঁড়ায়,
যেখানে ঝড় নতজানু হয়।
আমাকে স্পর্শ করলে বাজ পড়বে আকাশে,
আমার শিকড় টান দিলে ফেটে যাবে মাটির বুক।
আমি সেই বৃক্ষ, যার ছায়া ভাঙলে
একদিন রৌদ্রে পুড়ে যাবে একটি জনপদ।

আমি জোনাকির আলো নষ্ট করিনি কখনও,
পাথরে ঢিল ছুঁড়ে নদীর সুর থামাইনি,
অভিমানে ঝরা পাতাকে দলিনি।
আমি জানি, প্রতিটি শব্দের গভীরে লুকিয়ে থাকে
একটি পৃথিবীর কান্না,
প্রতিটি নদীর বুকে বয়ে যায়
অতীতের কোনো যুদ্ধের ছায়া।
তবু, যদি কেউ আমার মাটির শেকড় ছিঁড়ে ফেলে,
আমার উঠোনে আগুন ধরায়,
শিশিরমাখা ভোরের স্বপ্ন চুরমার করে দেয়—
তবে আমি হবো বজ্রের শিখা।
হবো সমুদ্রের গর্জন,
বিষন্ন সন্ধ্যার বুকে জেগে থাকা
এক অনির্বাণ দীপশিখা।
আমার প্রতিরোধ শঙ্খের মতো পবিত্র,
গীতের মতো স্নিগ্ধ,
কলমের কালিতে অঙ্কিত এক নিঃশব্দ বিদ্রোহ।
না ছোরা, না বন্দুক, না বল্লম—
কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই,
আমি নিজেই এক অদৃশ্য ঢাল,
আমি অস্ত্র নই, আমি বাংলাদেশ!