জানুয়ারির এক তারিখেই এ,ডি.এম সাব রানিগঞ্জ এসে পরলেন।আগামি কাল থেকেই কোর্ট করবেন তিনি। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের স্ত্রী ডাক্তার মৌমিতা আসতে পারেননি। তিনি রতনপুর মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ছিলেন।এ,ডি,এম স্বাধীন ও তার স্ত্রী ডাক্তার মৌমিতা চাকরি জীবনে এক সাথে থাকতে পেরেছেন খুব কম সময়ই ।দুজন সরকারি অফিসার হলে ট্রান্সফার বিড়ম্বনায় ভিন্ন ভিন্ন কর্মস্থানে চাকরি করতে হ্য়। তাই স্বাধীন ও মৌমিতা দুজন দুজায়গায়তেই থেকেছেন যথারীথি চাকরির সুবাদে । অবিশ্যি তদবিরে ভাগ্য ফেরে অনেকের ।স্বাধীন তদবির পছান্দ করে না । তদবির শাব্দটাতে স্বাধীনের অস্বস্তি ,বিরক্তি ও ঘৃনা। ব্রিটিশ আমলের প্রচলিত শব্দ স্বার্থ স্বার্থ গন্ধ কয়। অবশ্য এ পদ্ধতি বহাল তবিওতে চলছে এখনো । বাংগালিরা বুদ্ধি খরচ করতে কৃপণ নয় । তবুও এবিষয়ে সবার মুখে কুলপ কেন তা বোধগম্য নয় । স্বাধীন এর আগে রহমতগঞ্জ কোটের এ,ডি,এম ছিল। এ বার তার প্রতি ভাগ্য দেবী সুপ্রসন্ন বলতে হবে ।তার শ্যালক ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে এসেছে । সে ছাত্রানেতা ছিল, এখন ইঞ্জিনিয়ারদের নেতা । সে তার আপাকে বলেছে, ‘আপু ,একটু চেষ্টা করে দেখি তোমাদের এক জায়গায় পোস্টিং করানো --যায় কিনা’
----পারলে কর, তোর দুলা ভাই যেন আমাকে না বকে
-----দুলা ভাই, তিনি তো সৎ অকর্মণ্য অফিসার ।
-----চুপ,সব অকর্মণ্যরাই সবাইকে অকর্মণ্য ভাবে ।
-----তিনি অফিসের কাজে জান প্রান দিয়ে দেন অথচ এত বড় অফিসার নিজের জন্য কিছুই করেন না । অফিসে তিনি সৎ ডাকসাইটে ও আদর্শ অফিসার এবং আত্মীয় স্বজনের কাছে তিনি অকর্মণ্য অফিসার নামে খ্যাত মানে, বিখ্যাত ।
---আমাকে তিনি কি বলেন জানিস?
---কি বলেন?
----বলেন, তুই আবার কিসের ইঞ্জিনিয়াররে, ইঞ্জিনিয়ারাতো কাজের পাহাড় সম বোঝার নিচে থাকেন ,আর তুই রাজনীতি করে বেড়াস ।
---দেখলি, আমার প্রতিভার প্রতি তার মূল্যায়ন?
--যার যার মূল্য তার তার কাছে। তোর দুলা ভাই তো তোকেই বেশি ভালোবাসে ।
---আচ্ছা আমি একটু দেখি না, চেষ্টা করতে দোষ কি?
---আচ্ছা দেখ, চেষ্টা কর।
ইঞ্জিনিয়ার আতিক খেটেখুঁটে আদেশটা করিয়েছে ,তাও এমাসে নয়,আগামি মাসের এক তারিখে রানিগঞ্জ আসছে তার স্ত্রী । স্বাধীন, ছেলে অভিনয় এবং মেয়ে আবৃত্তিকে নিয়ে বাসায় উঠেছে ।স্বাধীনের পিওন তার ছেলে মেয়েকে ভর্তি করাতে রানিগঞ্জ সরকারি হাই স্কুলে নিয়ে গিয়েছিল ।কিন্তু এ স্কুলে ভর্তির সময় ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের আসতে হয় ।সরকারি চাকুরেদের ছেলে মেয়েদের কত স্কুলে যে পড়তে হয় তা ভুক্তভোগীরা মাত্রই জানে। এ বয়সে বাবামারা ছেলে মেয়েদের নিজেদের কাছেই রাখতে চান । তাই এর ঝামেলা পোহাতেই হয়। পরদিন এ,ডি,এম সাব তার ছেলে মেয়েকে নিয়ে রানিগঞ্জ সরকারি হাই স্কুলে এলেন তাদের অ্যাডমিশানের জন্য ।ছেলে অভিনয় অষ্টম শ্রেনিতে এবং মেয়ে আবৃত্তি সপ্তম শ্রেনিতে ভর্তি হবে। স্কুলের পিওন তাদেরকে সহকারি প্রধান শিক্ষিকা আগমনী মেডামের রুমে নিয় গেলেন। তাদের বসতে বললেন ।পিওন কে চা বিস্কিট আনতে বলে বিদেয় করলেন। অপ্রত্যাশিত ,অচিন্তনীয় ,অকল্পনীয় এ অবস্থা দৃষ্টে বিস্ময়, বিমুঢ়,পলকহীন চোখে দুজনে দুজনের দিকে তাকিয়ে ব্জ্রাহতের মত ম্যাড্যামকে এ,ডি,এম বলল ,তুমি এখানে’!… ,’আমার ও তোঁ প্রশ্ন ‘তুমি এখানে!’…ম্যাডাম বললেন। তাদের দুজনেরই পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যেতে লাগলো । চোখের সামনে সব এলো মেলো জগাখিচুরি চিত্র ওলটপালট হতে থাকলো । পিওন চা- বিস্কিট টেবিলে রেখে চলে গেল ।
ও রা কে? মনি প্রশ্ন করলো
………আমার ছেলেমেয়ে। ছেলে অভিনয় অষ্টম শ্রেনীতে এবং মেয়ে আবৃত্তি সপ্তম শ্রেনীতে ভর্তি হবে। ----মনি স্বাধীন কে চা দিতে বলল ।নিজ হাতে অভিনয় আবৃত্তিকে বিস্কিট তুলে দিল।
আগমনীর সামনে অবিশ্বাস্য ভিন্ন এক পৃথিবী। হৃদয়ে ঘন ঘোর জমাট মেঘের অন্ধকার,মনের ঈশান কোনে কাল বৈশাখীর প্রস্তুতি পর্ব শেষ, ঝড় আরম্ভ হয় হয় ।নীরবতা ভেংগে স্বাধীন বলল ,’আমি এ ,ডি,এম, রাণীগঞ্জ বদলি হয়ে এসেছি।
আমি মহা খুশি ও আনন্দিত-ব্যাকুল, তুমি এ,ডি,এম এবং সবায়কে নিয়ে সুখে আছো ।আর রুচিযে পালটায়নি তা ওদের আশ্চর্য সুন্দর নাম শুনেই বুঝতে পারছি । অভিনয়-আবৃত্তির মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলো । কি সুন্দর নাম। উদ্ভাবনী ভাবনা মথিত হয়েই এ নাম দুটির সৃষ্টি। হ্রদপিনডের রক্তে নাওয়া নাম দুটি,অভিনয় ও আবৃত্তি।
আমি এ স্কুলের একজন শিক্ষিকা।স্কুলের শতশত ছাত্র-ছাত্রীরাই আমার সন্তান। স্বাধীন সাহস সঞ্চয় করে জিজ্ঞেস করলো সরাসরি,
---বিয়ে করনি?
বিয়ে করবো কাকে?
----চা বিস্কিট খাওয়ার সময় কেউ কাউকে কোন কিছু জিজ্ঞেস করলো না । হ্রদয়ের প্লাটফরম দুজনেরই ভীষন থম থমে ,কখন ঝড় ওঠে ,তুফান আসে বলা যায় না _হৃদয়ের পার ভেংগে যাচ্ছে দুজনেরই ।অতএব কানডারি ---হুশিয়ার।
অন্তরের পার ভাংগে চৌচির অনুভুতি রক্তস্নাত ,
বোবা কান্না কেদে যায় দুটি হৃদয় প্লাবী
আখি পল্লব শুকনো রাখি………’
…ঠিক আছে আমি ওদের ভর্তির বাবস্থা করছি. তুমি অফিসে গিয়ে বস । এই-ই নিয়ামত ,স্যারকে অফিসে নিয়ে যাও ,আমি আসছি ।
…অফিসে চা বিস্কিট খাওয়া হল ।দুজনই যার যার জীবন রিভাইস দিতে লাগলো ।কিন্তু এবার আর স্বাভাবিকতার বর্ডার কাটা তারের বেড়া মানছেনা, ছেলেমেয়ের ভর্তি শেষে। এ,ডি,এম সাব সবার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে গাড়িতে উঠলেন ,ভীষন ক্লান্ত পদবিক্ষেপে ।স্বাধীন হৃদয়টাকে হারিয়ে হারিয়ে খুজে পায় তার হারানো এক ঝগলসানো জীবন অধ্যায় থেকে। ড্রাইভার গাড়ি স্টারড দেয় । ক্লান্ত, অথর্ব, এক বিমর্ষ –অবসন্ন গাড়ি । আস্তে আস্তে গাড়ির অবসাদ্গ্রস্ত চাকা গুলো গতিময় হয়ে উঠতেঁ থাকে। সরু রাস্তা বিলি কেটে কেটে গাড়ির প্রতিটি চাকা স্বাধীনের বুকের পাঁজরের উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে ।বাস্তবতা যে কল্পনাকে হার মানায়, স্বাধীন সর্ব প্রথম আজ তা প্রত্যক্ষ করলো। গাড়ি তারই হৃদয়ের অংশকে ফেলে রেখে তারি বুকের ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছে। যাকে আড়াল করতে স্বাধীন জীবন থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ,আর কোনও দিন কোনওখনে যেন আগমনীর সাথে দেখা না হয় জীবনে এই পরিকল্পনা সামনে রেখেই জীবন রথ চালনা কর ছে সে ।আজ দীর্ঘ সতের বছর পর মালামালসহ জীবনরথ ধরা পড়লো হাতে নাথে। ১৭ বৎসর পর এমন পরিস্থিতিতেঁ এমন পরিবেশে দেখা, বড় করুন,বড় নির্মম, কতই না মরম ভেদি । এযে বুবুক্ষু হদয়ের নিশব্দ আকুল কান্না।আগমনী চলে যায় জীবনের অতীতে ,স্বাধীন চলে যায় জীবনের অতীতে। তারা দুজনেই শুধু অতীত জীবন অধ্যায়ের পাতাগুলো উল্টোয়---ভীষণ ভাবে খুজে বেড়ায় তন্ন তন্ন করে জীবনের আনাচ-কানাচ । কোথায় নেই আগমনী –স্বাধীন, স্বাধীন- আগমনী। বিরহী স্মৃতি গুলো কেদে লুটায় । স্কুল ছুটি হবার পর আগমনী ম্যাডামকে ক্যান্টিনে চা খেতে দেখা গেছে। হ্রদয়ের বাধ ভাংগা আবেগ সে সামাল দিতে পারছে না ।পৃথিবীটাকে ভীষণ অপরিচিত ,বেসামাল, হ-য-ব-র-ল ,আগছালো ও স্বার্থপর মনে হচ্ছে নিজেক্বে। চারদিকে যেন ঘন ধুঁয়া এবং কুয়াশা।অবিশ্বাসের জাল তাকে ঘিরে ধরছে । এ বিশ্ব সংসারে তাকে খুব নিরীহ ,অসহায় ,নিঃস্ব ও খাপছাড়া মনে হচ্ছে.।সে কোনও কাজে না-লাগা অপদার্থ ও অপ্রাস্ংগিক okএকজন ব্যক্তি । সে এক কাপ চা শেষ করে আরও এক কাপ চা খাওয়া আরম্ভ করলো। তাকে খুব বিষণ্ণ ও okওদাসীন লাগছিল ,আত্মমগ্ন মনে হচ্ছিল। সে নিজের মধ্যে ডুবে নিজেকে খুঁজছিল । পরপর দুকাপ চা খেয়ে টেবিলের ওপর দাম রেখে দিয়ে পা দুটো টানতে টানতে বাসার দিকে রওনা হল ।হোটেল বয়রা কানা-কানি করতে লাগলো,’ ম্যাডামের নিশ্চয়ই একটা কিছু ওইছে’ ।
আগমনী আজীবন কৃতিছাত্রী,রেসালট ওরিয়েন্টেড ,প্যারাগন বিউটি , চিটাগাং ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে অনার্সসহ মাস্টার্স করে রানীগ্ঞ্জ সরকারি হাই স্কুলে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ লাভ করে । পর বি ,এড,।এম,এড করে, দুটোটিতেই ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হয়। অতিশীঘ্রই সে প্রধান শিঙ্খিকা হতে যাচ্ছে। ছাত্রী জীবন থেকেই অনেক হাইফাই সম্বন্ধ আসে । কিন্তু তার এক কথা সে বিয়ে করবে না । আগমনী ম্যাডাম শিক্ষায় , ব্যক্তিত্বে ও রুচিতে ,চেহেরায়-ফিগারে ,হাসিতে ও গাম্ভীযে বরাবরই আকর্ষণীয়া ভীষণ, এবং অসাধারণ কৃতিশিক্ষিকা ।তার অভিজাত্য স্বভাব সুলভ। লিঙ্গ অভিন্নতার বিরুদ্ধে মারমুখি আন্দোলনকারি ছিলেন তিনি। নারীরা অধ্যাপিকা ,শিক্ষিকা, ও সভানেত্রীই হবেন, অধ্যাপক , শিক্ষক, সভাপতি নন কখনও।পুংলিঙ্গ লিখলেই তিনি পুরুষ হয়ে জান না কখনও । বরং এতে নারীর স্বাতন্ত্র্য ,মূল্যবোধ ,মর্যাদাবোধ ,প্রভৃতির প্রতি আঘাত হানে এবং ক্ষেত্র বিশেষে বিপদজনকও।স্বাধীনচেতা এবং ব্যতিক্রমি ব্যক্তিত্ব সম্পন্না এক মহিষী নারী সে। বাসায় আসে, সে ভীষণ ওদাসীন ভাবেই ।রাতে খাবার পর টিভিটিভি না দেখেই সরাসরি ঘুমোতে যায়, ঘুমোয় না সে, বরং সে চলে যায় জীবনের প্রত্যুষে, মধ্যানেহ, সায়ানেহ সে বর্তমানই। অপরিসীম বাগ্মী ও প্রশসংনীয় বিতার্কিত, অদ্যরাতে বিতার্কিত,বিচারক ও শ্রোতা সবই ।
আগমনী চিন্তার সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছ ,ডুবে যাচ্ছে কাত হয়ে,চিত হয়ে। সে চলে যাচ্ছে তার প্যান্ট পরা জীবন-প্রত্যুষে, যেখানে তার কচি কাচা বন্ধরা প্রফুল্ল, আনন্দে আত্মহারা ,দে ছুট, দে ছুট। স্মৃতির মুকরে অপরিপক্ক স্মৃতিরা ভিড় জমায়---তারা এখনও অমলিন-আনকোড়া , সদ্যধৃত পলিথিনে রাখা রুপালি ইলিশটির মত। তার নাকে চলে আসছে কুড়ি আমের টকঝাল গন্ধ । স্মৃতিতে ভাস্বর চুরি করা গাদাফুলের নির্মিত মাল্য বরন অনুষ্ঠানের সলজ্জ আমেজ। রাই সরিষার গায়ে জড়ানো মটর তনয়ার সহবাস উন্মুখ। তাদের খেলার ছুটা ছুটি সরিষার হলুদ বনে । গায়ে হলুদের আলপনা । ডুব সাতার কাটা, জলকেলি খেলা,মাছ, ধরা ,চঞ্চলের আনা তিল্ পাতা দিয়ে মাথা পরিষ্কার করা প্রভৃতি অসংখ্য ঘটনা সিনেমার পর্দার মত ভেসে আসছে । তার না-বালক না-বালিকা জীবনের চলচ্ছিত্র আঘাত খাছে বাস্তব জীবনের গাদ্যিক কানভাসে । কোথায় হারিয়ে গেল সবিতা,নিরুপমা, জহিরন, আকাশ ও চঞ্চলেরা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুতিকা ছিন্ন করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সর্ব কনিষ্ঠ ক্লাশের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যম সুরে ক্লাশে বসে পড়া তৈরির মহড়া ভেসে উঠছে মনের অঙ্গনে । সবচে বেশি মনে পরছে জামাইবউ খেলার কথা ,অমিত বর সাজত আর আমি কনে_হেভী রোম্যান্টিক জুটি ।আমার কি সারা জীবন ভরে স্মৃতি চারনকরেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে জামাই-বউ খেলার অবাস্তবতায় ?বাস্তব জীবনে কোন অমিতই এলো না বুবুক্ষু হৃদয়ের প্রাংগনে ভালবাসার প্রসাদ নিয়ে। আশচর্য, আস্তে আস্তে ছেলে ও মেয়ে নামের কার্ফুটা জবর দখল করে নিচ্ছে আমাদের অবাধ কিশোর–কিশোরী দিন গুলো ।আমাদের মধ্যে একটি দেয়াল তৈঁরি হচ্ছে এবং বুঘিয়ে দেয়া হচ্ছে’তোমরা নারী আর তোমরা পুরুষ’। ক্রমেই মনের জানলা দিয়ে প্রবেশ করছে একটি অপরিচিত অনুভবের দ্যুতি ।একটি মিষ্টি সুর ,একটি অস্ফুট –প্রায় রশ্মি ।শরীরে জাগৃতি অনুভুত হছে ,এক অবাঞ্ছিত ঝাকুনি ও শিহরন ।আগমনী একে পাত্তা দিচ্ছে না। বিছানায় বই গুলো রাখা আছে ।আগমনী কখনও সাহিত্য ,কখনও সমাজ বা ইতিহাস কখনও অংক বইয়ের পাতা উলটিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মন অমনোযোগিতায় আচ্ছন্ন, উদাসীন-প্রচ্ছন্ন। হাতে একের পর এক বই নিচ্ছে , পাতা উলটাচ্ছে, ছুড়ে মারছে, আবার নিচ্ছে ,বাস্তবের অংকের সাথে বইয়ের অংকের মিল খুচ্ছে ,কিন্তু কোন মিল পাচ্ছে না –ফল মিলছে না জীবনের যোগবিয়োগ–গুন-ভাগের । আবার মন হারিয়ে যাচ্ছে কোন এক অজানায় ,অনুভুতি আশ্রিত হচ্ছে। উকি মারছে জীবনের দরজায় জানালায়,যা নিয়ে যেতে চায় তাকে অন্যত্র কোথাও নির্লজ্জ বেপরোয়া অনুভুতি গুলো ।মাঝে মাঝে দেহে জাগে কম্পিত শিহরণ ।দেহে মনে আশ্রয় খুজছে অনুভূতি গুলো নিরাপদ ।সে বুঝতে পারছে না এটা আগমনীর নারী হয়ে উঠার নিমন্ত্রন ।দিন যাচ্ছে আর অনুভুতিরা ভিন্নরুপ ও চেহেরা নিচ্ছে, অনুভুতিগুলোর স্বাস্থ্য হচ্ছে, বল বৃদ্ধি পাচ্ছে ,বেপরোয়া ,অনিয়ন্ত্রিত ও ফেরার হচ্ছে। ইহা দেহ ও মনকে আচ্ছাদিত করে রাখছে। দেহ মাঝেমাঝে জেগে উঠছে মাদকটা নিয়ে, কোথায় যেন স্বস্তি ও তৃপ্তি খুচ্ছে ---যা তার দেহ ও মনের বাইরে ।আগমনী রাতের স্বপ্নাবিষ্টতা কাটে নি। চুপ চাপ আত্মমগ্ন হয়ে শ্রেণি কক্ষে বসে আছে । তার ক্লাশমেট সবিতা জিজ্ঞেস করছে _কিরে মনি , আগমন, প্রস্থানের দ্বার বন্ধ করে নিজের মধ্যে ডুবে আছিস যে? _
নিজের মধ্যে নয় তবে কার মধ্যে ডুবে থাকবো?
তা তুই জানিস আমি কি করে বলবো ,বড় চুপ চাপ ,তাই বলছি ।সবিতা বলল।
----আমি তোর মত ডান্স জানি না যে ডান্স করে বেড়াবো _
---তোকে ডান্স শিখতে না করছে কেউ?
----কে না করবে? আমি কি কাউর হ্যাঁ নার তোয়াকা করি?
----এই মোর আগমনী জেগে উঠেছে।জানিস যারা চুপ চাপ থাকে তারাই নিজের সাথে বেশি কথা বলে _---তুই তো দেখছি অনেক বড় হয়ে গেছিস, সার- মামদের মত লেকচার দিচ্ছিস _
-ছোটই বা কোথায় ,ক্লাশ এইটে পড়ি নে? বাইরের আলো হাওয়া না লাগালে মানুষ বাড়ে না, সবি বলল।
--- আমার অত সময় নেই।
---_তা থাকবেই বা কত ,আমরা তো তোর মত ফাস্ট-সেকন্ড গার্ল নই ,শুধু বই নিয়ে পরে থাকবো? ।--বাইরের আলো হাওয়া না লাগিয়ে বই পড়ে পড়ে শুধু মন বড় করিস নে,দেহ ও বাড়াস ,তা না হলে পরে দেহ ও মনের সাথে অ্যাডজাস্ট করতে পারবি নে।
----_আরে আমার সবি, আয় তোর পায়ের ধুলো নিয়ে ধন্য হই ।এত এত সোন্দর সোন্দর উপদেশ দিচ্ছিস না?
----ঠাট্টা আর কত করবি, ঠাট্টা করলে মন ভাল থাকে
----মনটা ভাল নারে ,সবি।
-----তাই, কেন রে মনি?
----চল, সবি ক্লাসের অনেক দেরি, তোকে আইস ক্রিম খাওয়াবো
--- Thanks,lets go’
………স্বাধীন তার ক্লাস মেট নাজমুল হাসান কে মোবাইলে কল দিল । ছেলে মেয়ের অ্যাডমিশান শেষ. খুব খারাপ লাগছে ,ভীষণ অস্থির ও কষ্ট লাগছে স্বাধীনের বাসায় এসে। নাজমুল তার ঘনিস্ট বন্ধু । তার এবং আগমনীর সম্পর্কের ইতিবৃত্ত হরিণ ডাঙ্গা কলেজের প্রিন্সিপ্যাল সুমুদ্র দত্ত ও নাজমুলই জানে শুধু ।তবুও প্রথম থেকে নয় ,যখন তার হৃদয় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে তখন।নাজমুল হাসান দর্শনে অনার্স-মাস্টার্স ।রানিগব্জের সোনালি ব্যাংকের মানেজার ।বেশ কয়েক বৎসর যাবতই রানিগঞ্জে আছে ।নাজমুল সরাসরি স্বাধীনের বাসায় চলে এল।নাস্তা করলো কাঁচাগোল্লা ,সন্দেশ ও চানাচুর দিয়ে । স্বাধীন বলল নাজমুল,এখানে নয়, বাইরে কোথাও চল। চা ও বাইরে যেয়ে খাব
---তবে চল ।
--- তারা রানিগঞ্জ স্কুলের ক্যান্টিনে এসে বসলো ।বয় দুটো চেয়ার বাইরে নির্জন স্থানে এনে দিল ।ছেলে মেয়ে সব বাসায়,ওঁদের সামনে এ গুলো বলা যাবে না, তাই আড়ালে এলাম।
---- তোর জীবনতাই তো এ রকম । আড়ালে আড়ালে হৃদয়ে রাবনের চিতা জ্বলল অথচ দেখল না কেউ।
_স্বাধীন স্কুলের যাবতীয় ঘটনা বলল,নাজমুল মনোযোগ দিয়ে সব শুনল ,তার কল্পনার চোখ দিয়ে স্বাধীনের ঝাঁঝরা হৃদয়ের অসংখ্য ক্ষত দেখল ।স্বাধীনের কলিজা চিরে রক্ত ঝরছে কালছে ধারায়।
---নাজমুল আমার কি মনে হয় জানিস?
----কি মনে হয়?
-----আমার কাছে পৃথিবী একটা বলের মত গতি নিয়ে চলছে, আমি যেন শূন্য দিয়ে হেটে চলছি,আমার পায়ের নিচে কোন মাটি নেই।আমি কোর্টে এজলাসে বসে কাগজে লিখছি বলে মনে হয় না। মনে হয় খাতাটা okশূন্যে ভাসছে । আমি শূন্যে রাখা খাতায় অর্ডার লিখছি ।
-- ঠিক আছে তুই সব বল । তুই এগুলো বাইরের কাউর কাছে শেয়ার করিস নে।
আগমনী সারা জীবন বিয়ে না করে তার প্রেমের মূল্য বুঝিয়ে দিয়ে গেল ।নিঃসন্দেহে এটা অত্যন্ত কঠিন কাজ ।কিন্তু কি দিয়ে বুঝাব আমার প্রেমের মূল্?আমি কি দিয়ে বুঝাব আমার পরিস্থিতির কথা? আগমনীর মন আছে,শরীর আছে ,মা ডাক শুনার ইছে আছে, পরিবার–পরিজন ,সংসার অর্থাৎ সবাইকে, সব কিছু কে পরিত্যাগ করে শুধু আমার জন্যে ,এক মাত্র আমার জন্য তীর্থের কাকের মত অপেক্ষায় আছে । আর আমি কত বড় বিশ্বাস ঘাতক, কত বড় খল, কত বড় পাষণ্ড, তার প্রেমের মূল্য দিতে পারলাম না,নাজমুল?
না,স্বাধীন, বিস্বাস ঘাতক,খল, পাষণ্ড এর কোন কিছুই তুই নস । এর জন্য দায়ী সময়, পরিস্থিতি, নিয়তি এবং ইত্যাদি ।তুই আর আমি প্রায় সারাটা জীবন এক সাথে কাট্যাঁলাম ,বরঞ্চ এর বিন্দু বিসর্গ পর্যন্ত জানালিনা আমাকে ,স্বাধীন? একটি নীরব যন্ত্রণা, নীরব কান্না, অন্ত্ররদাহে জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হচ্ছিস,আমার শুনতে অবাক লাগে ,এত বড় চিতা কেমনে তুই একা বহন করে চলেছিস? এমন একটা সময় আমাকে বললি ,যখন পুড়ে সব ছাই হয়ে গেছে _আমারা আর করবার কিছুই নেই। শোন, স্বাধীন, জীবন বড় সুন্দর ,বড়ই মধুর ,বড়ই স্বর্গীয় ।,
_কে বলল নাজমুল জীবন সুন্দর, জীবন মধুর,জীবন অমৃত?জীবন মানে অসহনীয় যন্ত্রণা ,কষ্ট ,অবহেলা ,ধুসর মরুভূমি ,কাল মুখের ভ্রুকুটি এবং অনেক নাভিস্বাসের সমষ্টি l
---_স্বাধীন,জীবনের পূর্ণ সংজ্ঞা কেউ দিতে পারে নি,পারা সম্ভব ন্য়।তবে আমার মতে জীবন তাই --যার কাছে যে ভাবে এসেছে।স্বাধীন তোর কাছে জীবন যে ভাবে এসেছে সেই অভিজ্ঞতাই তুই বলেছিস । তুই যা দেখেছিস তা জীবনের একটি খণ্ডাংশ মাত্র , পুরোটা ন্য়।
-----তবে আগমনীর কাছে কী সৌন্দর্য ও মাধুর্য নিয়ে জীবন এসেছে, যার পূজো করে সে সারাটা জীবন কাটিইয়ে দিল, আর আমি অন্তরে পঙ্গু ,অথর্ব হয়েও বাইরে দম্ভ দেখিয়ে একটি পুতুল হয়ে মানুষের ভালমন্দ ,ন্যায়–অন্যায়ের রায় লিখে যাচিছ । একজন সুখী স্বামীর ,যোগ্য পিতার অভিনয় করে যাচ্ছি ।জীবন বিচিত্র । আমরা প্রায় অধিকাংশ মানুষ হৃদয়ে চিতা জ্বেলে সুখি্ ,ক্ষমতাবান ও মর্যাদাবানের খোলস পরে নিজেদের পারঙ্গমতা জাহির করছি পৃথিবীর এ নাট্য মঞ্চে ।
----কিন্তু আগমনীর কোন খোলস নেই।
---- তা হলে তুই বলতে চাচ্ছিস আগমনী ভিখারিনীর রোল করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরষ্কার পাচ্ছে?
-----আমার বিচারে তোরা দুজনেই শ্রেষ্ঠ অভিনেতা শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী-_-নাজমুল বলল ।
----আমি এঁর কিছুই বুঝলাম না।
-----ঐযে মদ্যপ তারিখোর রাকিব আসছে, মদ খেয়ে মাতলামি করতে করতে ,ওঁর কাছে জীবনের সব মানে সহজ মানে পাওয়া য়ায়।
----কিরে রাকিব কেমন আছিস? নাজমুল প্রশ্ন করলো,
I’m always good. ঐ এ,ডি,এম স্বাধীন,তুই ব্যাংকার মিস্টার নাজমুল ,মিস্টার অমুক—মিসটার তমুক জীবনের সাথে প্রতারনা ,প্রবঞ্চনা ও জালিয়াতি করে যাচ্ছিস ,সুখ নাই,সুখ নাই, আর আমি মি।রাকিব মাতাল মহারাজ -- কোনই দুঃখ নাই । শুধু শান্তি ,আর শান্তি, দুঃখ আসলেই এক ঢোক খেয়ে কাছেই আসতে দেই না। “নাও ,এ ,ডি এম , ব্যাংকার এক ঢোক করে খাও, শান্তিতে ভইরা যইব অন্তর ‘
----_তোর মিসেস কেমন আসেন?
কোন মিসেস?পাসট মিসেস?না প্রেসেনট ? প্রেজেনট মিসেস কেমন আছেন, কোন মতলবে আছেন তা তিনিই ভাল জানেন ,আমি তাকে দু ঢোক খাওয়াইয়া আসছি। সুখে আছেন, শান্তিতে আছেন শেষ খবর পাওয়ার আগ পর্যন্ত । Past মিসেস ভাল আছেন ,মহা শান্তিতে আছেন ,তবে পরকীয়ার প্রেমিক চাইয়া বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছেন। ঐযে ,আলাল পাগলা আমারে ডাকছেন _____যাই ,দোস্ত ডাকলে না যাইয়া পারি? যাী, আর একদিন আসবো , গুডবাই।
----পেটে তারিটা একটু বেশী পড়েছে, নাজমুল বলল । স্বাধীন একটু রেস্টে থাক,ছুটি নিয়ে নে অফিস থেকে কয়েক দিনের।,আমাকে কল দিস । ভাবীও তোঁ তাড়াতাড়ি আসছে না
____সামনে মাসের এক তারখে । আর সে আসলেই কি আর না আসলেই কি?.
---কেয়ারিং তো পাচ্ছিস?
----তা পাচ্ছি, কিনতু শেয়ারিং তোঁ পাচ্ছি নে, এসব কি শেয়ার করা যায়?
----তা_যতটা পারিস কর ।
----শোন, নাজমুল তোরা তোঁ দর্শনের ছাত্র এসব সম্পর্কে তোরা অনেক কিছুই জানিস, স্ত্রী শুধু প্রয়োজনের জন্য । জীবনের এমন কিছু জিনিস থাকে তা স্ত্রী দিয়ে হয় না । আর স্ত্রী এত available বা সহজ লভ্য যে ,তার কাছে এগুলোর পুরো আকর্ষণও সৃষ্টি হয় না ।,
----আবার আমাকে বসতেই হবে। ঐ ছেলে আরও দুটো চা দে । স্ত্রী মানুষের জীবনে তিন ভাবে আসে। এক। দাসীরুপে ___দু অভিভাবকরুপে এবংতিন।বন্ধুরুপে । দাসী রুপে যিনি আসেন তিনি শুধু আদেশ পালন করেন । জীবনের ও জীবনের অলিগলি, আনাচ-কানাচের কোন কিছুরি খবর তিনি রাখেন না। আর প্রভুরুপে যিনি আসেন, তিনি সুধু আদেশ করেন ।স্বামীকে তিনি খাটিয়ে নেন শুধু।স্বামীকে তার নিজের এখতিয়ারের বাইরে যেতেই দেন না। সর্বোপরি ,যিনি বন্ধুরুপে আসেন ,স্ত্রীর তিনটি প্রকরনের প্রকাশই তার মধ্যে আছে ।বিপদের সময় তিনি ছাতার মত ছায়া দেন ।অর্থাৎ তিনি প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ,আদেশে-অনুরোধে-উপদেশে, লালনে পালনে সব কিছুতেই তিনি ছায়ার মত কাছে থাকেন।
------স্ত্রীর এ ভ্যালেন্স্র রুপে কোন পুরুষ পায় কোন নারীকে?
-----না শতকরা হিসেবে পাওয়া যায় না হাজারে দু একটা পাওয়া যায় ।তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জোড়াতালি দিয়ে চলতে হয়।
রানী গঞ্জের গার্লস হাই স্কুল ও হরিণ ডাঙ্গা কলেজে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার সিট পরেছে । স্বাধীন, আগমনী,প্রদীপ ও সুহানাসহ এগার জন রাণীগঞ্জ সরকারি হাই স্কুল থেকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে
তাদের সিট পরেছে রানী গঞ্জের গার্লস হাই স্কুল ও হরিণ ডাঙ্গা কলেজে । স্বাধীন ও আগমনীরা পাশাপাশি আত্মীয়ের বাসায় থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষাও ভাল হচ্ছে। দুজনের প্রেম, চূড়ান্ত ফ্রেম আকৃতি নিচ্ছে। ৭ন শ্রেনী থেকেই দুজনে দুজনের খুব কাছা কাছি এসে গেছে। যোগাযোগ মেডিয়া চোখা চোখি এবং দুজনের ধ্যান দুজনের ।আর কোন বহিঃপ্রকাশ সাধারণ্যে গোচরীভূত হয় নি । তারাও জানে না।তাদের মধ্যে কোন সম্পর্কের সংক্রমণ চলছে কিনা ।দুটি মন দোদুল্যমান । পরীক্ষা দিতে এসে এ সম্পর্কের ফাইনালীকরণ হচ্ছে এবং বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। স্বাধীনের অংক পরীক্ষা ভাল হয় নি ।তাই স্বাধীন ঐ বাসায় গিয়েছে, আগমনী যে বাসায় থাকে।
---_তোঁর অংক পরীক্ষা ভাল হয়েছে?
-----হা তোর?
----খারাপ, স্বাধীন বলল
----_ভাল হয়েছে ,আগমনী বলল স্বাধীনকে।
-----ভাল হয়েছে মানে,আমি তোঁ তোকে ভাল বন্ধু ভাবতাম ,আর তুই আমার পরীক্ষা খারাপ নিয়ে মজা করছিস ?
-----আরে গাধা মজা করিনি ।তুই বুঝতে পারিস নি
-----স্বাধীন কাঁদ কাঁদ স্বরে বলল,এতে বুঝার না বুঝার কি আছে ?
----- আছে রে গাধা আছে, আনেক বুঝবার আছে ।তা আমি কি তোর শুধু ভাল বন্ধু, স্বাধীন?_
-----তা নয় তোঁ কি?
-----এখনও বুঝিস নি?
----- এখানে আর বুঝার,না বুঝার ঘসা মাজার কি আছে?
-আসলে তোরা প্রত্যেক ভাল ছাত্রই একেকটি বলদ ,পড়া লেখার বাইরে কিচ্ছু বুছিস না, যারা অংকে ভাল করে তারাই জীবনের অংকে খারাপ করে বুঝলি? তুই অংকে খারপ করেছিস জীবনের অংকে ভাল করবি -----তুই এত বুঝিস?
-----বুঝতে হয় আমরা মেয়ে মানুষ না।
-----ও তুই সেভাবে বলিস নি,সরি, আমি ঠিকই বুঝতে পারিনি।
-----সরি-টিরি বলার দরকার নেই। এখন যে ক্য়টা সাবজেক্ট বাকি আছে, তুই যত পাবি বলে ধরেছিস তার সাথে প্রতি সাবজেক্টে পাচ করে যোগ করে নিবি ।আগমনি স্বাধীন কে বলল।
-----নেব
-----শুধু নেব মুখে বললেই হবে না পেতেই হবে । আমি বলছি তুই পাবিই ।আর নে ,এই কলম দিয়ে পরীক্ষা দিবি । এটাই তোর প্রতি আমার প্রথম ভালবাসা ।
----সত্যি সত্যিই তুই আমার খুব ভাল বন্ধু ।
----আবার শুধুই বন্ধু?
----স্বাধীন মনির ঠোঠে ,কপোলে চুমু খেল।
----আগমনীও স্বাধীনকে চুমু দিল ।এভাবেই তাদের প্রেমের প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হল।