রাকিব মারিয়াকে ভালবেসে বিয়ে করে ।রাকিব আই।এ। এবং মারিয়া এস,এস ,সি ।পাশ ।সংসারে টানাপড়েন ,অভাব-অভিযোগ লেগেই থাকতো । রাকিব তার পিতৃপ্রদত্ত সামান্য সম্পত্তি হতে কিছু বিক্রি করে সৌদি আরব যায় এবং চাকরি করে ।সৌদি আরবে তখন প্রচুর টাকা পয়সার সুবিধা ছিল ।রাকিব প্রথম দশ বৎসর পুরো সুযোগ সুবিধা পেয়েছিল এবং বেশ টাকাপয়সা করেছিল ।তিন বৎসর পরপর বাড়ি আসতো , মাস ছয়েক বাড়ি থেকে আবার সৌদি চলে যেত । সে দুই ছেলে-এক মেয়ের জনক ।বাড়িতে মা ,ছোটবোন রাহেলা এবং তার স্ত্রী –সন্তান ।রাহেলাকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে।এখন সৌদিতে বেতন কমেছে । তাই আর পাঁচ বৎসর থেকে সে দেশে চলে আসবে।দেশে কৃষি ও ব্যবসায় করবে রাকিব। _রাকিবের বউ সুন্দরি ,ফিগার –টিগার ভাল ,যৌন আবেদনময়ী, প্রবাসির স্ত্রী শুঁটকি মাছের মত পরে থাকে। পাশের বাড়ির সাজ্জাদ ইনটারমেডিয়েট পাশ ,চাকরি বাকরি নেই ,বাড়িতে বসে থাকে ।বিয়ে-টিয়ে করে নি, বউ ভাত দিবে কোত্থেকে বিয়ে করবে? ।সাজ্জাদ রাকিবের বাড়ি আসে,রাকিবের বউ মারিয়ার সাথে হাঁসি –ঠাঠটা করে, চোখা-চোথি হয় ইত্যাদি ইত্যাদি ।
----_মারিয়া বলে ,সজ্জাদ ভাই পান খান।
----পান খাওয়ার তোঁ অভ্যাস নাই,তা দেন ,একটু খাই।
----মারিয়া পান দেয়।
----,সাজ্জাদ অনভস্তের মত পান খায়।
----পান খাওয়া একটা অভ্যাস, এক সপ্তাহ খান , দেখবেন অভ্যাস হইয়া গেছে ,তখন না খাইলে থাকতে পারবেন না ।
----_তা ঠিক ,সব অভ্যাসের ক্ষেত্রেই তাই।
-----আমি তোঁ বিয়ের পর থেকেই পান খাই। লিংকন ও লিংকন?
----- কি মা এই যে টাকা নেও, দোকান থেক্কা চা-বিস্কিট আইনা দেও তোমার কাক্কার লাইগা। ________না ভাবী চাটা লাগবে না ।আমি আসি ,আপনার সাথে কথা বললে ভাল লাগে তাই । তাই।
---- তা আসবেন ,লিংকন চা-বিস্কিট নিয়ে এল ।
-----কেমন আছ লিংকন? তোমার আর ভাই বোন কেমন আছে?
-----ভাল আছি আংকেল, ওরাও ভাল আছে।
----আপনি কেমন আছেন?
----হা ভাল
----পড়াশুনা ঠিকমত করছ তোঁ?
----ভাই, চা নেন ,এই বিস্কিট ।
-----আপনার ছেলে খুব স্মার্ট। রাকিব ভাই ঠিক মত ফোন দেয়, চিঠি পত্র লেখে?
-----হা ফোন দিয়ে কথা বলে ,চিঠি পত্র লেখার রেওয়াজ তোঁ এখন উঠে গেছে।
----_টাকা পয়সা ঠিক মত পাঠায়?
----তা পাঠায়।
---ok-সাজ্জাদ ভাই ,আর একটু পান নেন?
-----ভাবী দেখছি পান খাওয়ার অভ্যাস বানাইয়াই ছাড়বেন .দজনের চোখাচোখি হয়।
-----ক্ষতি কি?
----লাভিইবা কি?
----এত লাভক্ষতির হিসাব নিকাশ কি, বউ নাই সন্তান নাই।
-----বউ সন্তানের ভাগ্য আছে আমাদের? বাড়িতে যাই ভাবী।_
-----কেন আর একটু বসেন. ভাত টাত খাইয়া যান।
----না ভাবী ধন্যবাদ,আবার দৃষ্টি বিনিময় ।
----আবার আইসেন।
ঠিক আছে।
মারিয়াকে খুব আন্তরিক মনে হল সাজ্জাদের ।রাতে বারবার মনে পরতে লাগলো মারিয়া ভাবীকে । মারিয়ার চাহনি ,চোখের কোনের হাঁসি ,বুক,ফিগার প্রভৃতি তার রাতের ঘুম কেড়ে নিছে ।তার ব্লাউজের ফাকে শুভ্র উকিঝুকি, উরুসন্ধি ,বাঙময় চোখের ভ্রু, মুক্তোঝরানো হাঁসি সিনেমার পর্দার মত ভেসে উঠছে তার নির্ঘুম শর্বরীতে ।অন্য দিকে সাজ্জাদের প্রশস্ত বুক, বলিষ্ঠ বাহু , বিস্তৃত ললাট ,সজীব শশ্রু ,ধারালো দৃষ্টি তাকে রোমাঞ্চিত ও শিহরিত করছে ।সাজ্জাদ নিয়মিত আসা যাওয়া করে রাকিবদের বাড়িতে। তার ছেলে মেয়েদের খুব আদর করে। এটা মারিয়ার মন জয় করার কৌশল। সন্তানদের আদর করলে মায়ের মনে তার জন্যে একটি সফট কর্নার সৃষ্টি হয় ।
----ভাবী পান আছে?
---- আছে আইসা বসেন। মারিয়া আগের মত চা-বিস্কিট-চানাচুর আনাল ।
---- ভাবীকে দেখলে কষ্ট লাগে
----কেন?।
----রাকিব ভাই প্রবাসে, একা একা কিভাবে সময় কাটে আপনার –তাই ভেবে।
----কি করবো ভাই,প্রবাসীর বউ বলে কথা ,টাকা পয়সারও দরকার।
----হা টাকা তোঁ অবশ্যই দরকার । তীর্থের কাকের মত মুখিয়ে থাকে বাড়ির সবায়।
----চাতকীর মত চেয়ে থাকে তার প্রিয়া এক ফোঁটা বৃষ্টির আশায়। সজ্জাদের রোমাঞ্চ মেশানো উক্তি।
---- আপনি তোঁ সাহিত্যিক কিভাবে এত সুন্দর কইরা কথা বলেন?
----আপনি এত কষ্টে ভোগেন আর আমি কথা দিয়াও প্রকাশ করতে পারবো না?
লিঙ্কন চাবিস্কিট নিয়ে এল ।
----হে লিংকন, স্মার্টবয়, কেমন আছ?
---ভাল
---আপনি?
----এই আছি এক রকম।
----কাক্কা, তুমি তোঁ আমার জন্য চা–বিস্কিট–চানাচুর নিয়ে এলে ,তোমার জন্য কি এনেছ ?
---আমার জন্য কিছুই লাগবে না
----তাই কি হ্য়? এ-ই নাও পঞ্চাশ টাকা,তোমার বিশ টাকা ,রনি-রাফেজার ত্রিশ টাকা, তুমি ওদের দিয়ে দিও।
ঠিক আছে?জী দিয়ে দিব।
----তোমার দাদি কোথায়?
----দাদি ঘুমায়, বলে দৌড়ে চলে যায় খেলতে ।
----সাজ্জাদ ভাই এই পান লন।
---- সাজ্জাদ এদিক –ওদিক তাকিয়ে বলে, ‘শুধু পান খাইলেই কি পেট ভরে ?দুজনে অর্থপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় দুজনের দিকে।
-----_তবে বসেন ভাত তরকারি রান্না অইতাছে খাইয়া যাইবেন ।
-----ভাত তোঁ প্রতিদিনই খাই। লালন মরল জল পিপাসায়রে কাছে থাকতে নদী মেঘনা ------------ আপনার কথার মাথা মণ্ড আমি কিচছুবুঝিনা।
----বাড়িতে দোয়াল গাই নাই, দুধ খাইতে পারি না।
----বসেন গাই পানাই দুধ খাওয়ামুনি ।
----গাই পানাইতে অইব কেন আপনার কি দুধ কম আছে? বলে সে দুষ্টু চোখে ভাবীর চোখ ও বুকের দিকে তাকায় । ব্লাউজের ফাঁকে শুভ্র এলাকা দেখে তার শরীরে বিদ্যুৎ খেলে যায় মারিয়াও নিজেকে মেলে ধরে। -সাজ্জাদ ক্ষুধার্ত গরুর মত তাকে গ্রাস করতে থাকে,ভক্ষনে তার যেন দিক বিদিক জ্ঞান নেই।
-----আমার এক চাচাতো বোন আছে, আইনা দেই, সুন্দরি বউও পাইবেন, দুয়াল গাইও।
----না ভাবী চাকরি নাই বাকরি নাই বিয়া কইরা খাওয়ামু কি?
----বিদেশ যাওয়ার টাকা পয়সা আইনা দেই । মাস ছয়েক দুধ খাইয়া পুস্টি বাড়ান, তার পর বিদেশ যাইবেন ।
-----না ভাবী বউ বাড়িতে রাইখা বিদেশ গেলে বউ ভাল থাকে না।
-----কি যে বলেন? আমরা কি খারাপ অইয়া গেছি?
----আপনি তোঁ ভাল মানুষ, জোয়ান দেবর এত কাছে থাকতেও দুধ খাওয়ান না।
----ইহ, ইরকম কথা কইলে পিটাইয়া হাড় গুঁড়া কইরা দিমু, চোখে নিমন্ত্রনের ভাষা ।
----আজকের মত উঠি ভাবী। তারপর থেকে চলে রেগুলার অবাধ দেহ সম্ভোগ ।সাজ্জাদ ভাবে আমি নারীর মন চাই। শরীর চাই ,টাকা চাই ও প্রতিষ্ঠা চাই। আমার শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে আমি আমার সংকল্প থেকে বিচ্যুত হবো না । কি সে সংকল্প?
মারিয়ার শাশুড়ি বলে ,সাজ্জাদ তোঁ লিংকনগো খুব ভালভাসে ,তোমার সাথেও ভাল খাতির ,একটু কওনা লিংকনগো বাসায় আইসা প্রাইভেট পড়াইতে, যা বেতন অয় আমরা দিয়া দিমু। ওগো পড়ার কথা রাকিব কত কইরা কয় ।রাকিব কয় ওগো ভালভাবে পড়াইও ,দরকার অইলে লিংকনগো প্রাইভেট মাস্টার রাইখা দিও ।
-----‘আম্মা খুব সুন্দর কথা কইছেন্, তা আমি বউ মানুষ আমি কওয়ার চেয়ে আপনে কইলে ভাল হয়। তারপর থেকে রাতে নিয়মিত প্রাইভেট পড়ায়, আর সবই ঠিক মত চলে, শেয়ালের সান্নিধ্যে মুরগি অবস্থা যেমন।
সাজ্জাদ তার বন্ধু লোকমানকে বলেছে, অনেক দিন এভাবে পার হল ।মারিয়া ও আমি দুজনেই খুব সাবধানী ,তাই কোন কিছুই প্রকাশ পেতো না ।মারিয়ার ছেলেমেয়েরা আগের চেয়ে পড়া শুনায় অনেক ভাল করতে লাগলো । সুতরাং ফ্যামিলিতে আমার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেড়ে যাচ্ছিল।
-----হ্যা, বড় চোরেরা ছোট চুরি না করে গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়,লোকমান বলল। -------আরে শোন না লোকমান, আমরা দুজনেই পূর্ণ পরিতৃপ্ত বুঝেছিস লোকমান? আমি এই ফাঁকে একটি কথা বলে নেই। আমরা সাধারন ভাবে যে সমস্ত দাম্পত্য জীবন দেখতে পাই তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যৌনভাবে বা sexually পরিতৃপ্ত নয়। তাদের দৈহিক ও মানুসিক উভয় ক্ষেত্রেই পরিতৃপ্তি প্রয়োজন,Full satisfection.
----ভুতের মুখে রামনাম ।একদম প্রফেসরের মত লেকচার দিচ্ছিস ,গরলে অমৃত ।কর্তৃপক্ষ চাইছে তোদের মত বদমাইশদের নিয়ে এ বিষয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করতে।
-----তা যাইই বলিস, যে যে বিষয়ে বিচরণ করে তাকে কিন্তু অনেক কিছু বিশেষ করে ঐ বিষয়ে দক্ষ হতে হয় ।
----যেমন বদমাইশিতে তোরা দক্ষ ।
----বিদেশে বিশেষ করে উন্নত দেশে যৌন বিষয় তাদের পাঠ্যসূচিতে রয়েছে ।
------আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যৌন বিষয় অন্তরভুক্ত করার আবশ্যকতা সম্পর্কে পণ্ডিতেরা ভবেন না তা কিন্তু নয়। অনেকে বিবাহ বহির্ভূত যৌনতা ঘৃণ্য বলে মনে করেন ,অনেকে কিন্তু অনেকের কথায় আমল দেন না, তাই বলে বিষয়টি অগুরুত্বপূর্ণ নয়। যেমন তুই আমার কথায় মোটেই মূল্য বা গুরুত্ব দেসনা।
----- ঘৃন্য জিনিস আমার কাছে সব সময়ই ঘৃন্যই থেকে যাবে, লোকমান বলল।
----কিন্তু এসব বিষয়ের অজ্ঞতার কারনে সংশ্লিষ্টরা অপরিতৃপ্ত থাকে বা দাম্পত্য জীবন ভেঙ্গে যায়, তখন বিষয়টি আর অগুরুত্বপূর্ণ থাকে না ,চিন্তার মুল ধারায় চলে আসে। আমাদের সামাজিক ও ধর্মান্ধতার কারনে অনেক মাঙ্গলিক চিন্তা গ্রহণযোগ্যতা পায় না বরং বিরুপ সমালোচিত হয়। তাই নিজের ভাত খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে যায় না কেউ।
--- থাম থাম, চোঁরের মার বড় গলা আর শুনতে চাই না ।
----আর একটি কথা বলি, শোন।
----দরকার নেই থাম।
----।ল্যাট্রিনে গোলাপ ফুল এবং গোবরে পদ্ম ফুল ফোটলেও
কিন্তু ল্যাট্রিন কিংবা গোবরের গন্ধ আসে না, ফুলের গন্ধই আসে ।
-----তুই এসব বলে কি বুঝাতে চাস তা আমি জানি।
----- তবে আমি বলছি, এসব বাদ দিয়ে ভাল পথে চলে আয় ,দেখে শুনে একটি বিয়ে করে সংসারী হ।
আজাহার এসে বলল,’সাজ্জাদ কাকা, দাদি আপনেরে ডাকে।
---লোকমান আজ হল না,আবার একদিন কথা হবে---এ ব্যাপারে। উঠি।
রাকিব ভালবাসে মারিয়াকে ।তার স্মৃতি ,হাসি,দুষটু চোখের চাহনি, সোহাগ মাখা থাপ্পর ,রেশমি চুড়ির রিনিঝিনি আরও অপ্রকাশ্য অনেক কিছু। এগুলো প্রবাস জীবনের সম্পত্তি ।কল্পনা হলেও নিঃসঙ্গ রাতে এগুলো আনন্দ দেয় । ঘূমহীন রাতের স্বজন সংলগ্নতা স্মৃতির রাজ্যে লম্বা সফর ,মায়ের আদর, বোনের সোহাগ ,স্ত্রীর মিষটি ভ্রুকুতি, চুম্বন সিক্ততা ,সন্তানের মুখচ্ছবি নয়ন যুগলে আনে আনন্দাশ্রু, রাকিবের এক রাতেও গুম আসে না আবার ভবিষ্যতের রঙ্গিন ছবি আঁকে ।স্মৃতির বাসরে ব্যস্ত আনন্দ ঢেউ জাগে। ছোট একটি ঘর করেছে রাকিব ছিমছাম। একটি আধুনিক বাড়ি বানাবে সে। এটা হবে এলাকার ব্জতিক্রমি আবাস, রাকিব ও মারিয়ার নিত্য অভিসার স্পট । প্রায় তের বৎসর যাবত বিদেশে থাকে সে। মারিয়ার নামে একটি এফ,ডি,আর খুলে দিয়েছে। একটি সঞ্চয়ী হিসাবও খুলে দিয়েছে যাতে খুচরা খরচের জন্য এফ,ডি, আর-এ হাত না পরে । কিছু স্থায়ী সম্পদ থাকা দরকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য । কয়েক বিঘা ইরির জমি কিনবে যাতে খাওয়া পরার কোন চিন্তাই করতে না হয়। একটা দোকান করবে রাকিব। বিদেশ থাকে মানুষ স্বদেশে নিজের অবস্থা সমৃদ্ধ ও সুন্দর করবার জন্য । সে চেয়ারমানশীপ ইলেকশন করবে । চেয়ারমানীতে দাঁড়ালে উঠবেও সে। তাকে লোকে চেয়ারম্যানসাব বলবে । আর মারিয়াকে চেয়ারমানের বউ বলে ডাকবে । এসব রঙ্গিন চিন্তার জাল বুনতে বুনতে কখন যে ঘুমিয়ে যায় সে নিজেও জানে না।