হারুকি মুরাকামি। বর্তমান বিশ্ব সাহিত্যে সুপরিচিত এক নাম। কিভাবে একজন জ্যাজ ক্লাবের মালিক কিংবদন্তি লেখকে পরিণত হলেন সেই গল্প-ই আছে তাঁর দেয়া সাক্ষাৎকার, বক্তৃতা ও স্মৃতিকথায়।
বইটি তিন অংশে বিভক্ত। সাক্ষাৎকার অংশটি বেশ বেশ উপভোগ্য। লেখালেখিতে তাঁর অভিষেক, মুরাকামির নিজস্ব রাইটিং ক্রাফ্ট এবং এর পিছনের দর্শন ছাড়াও আরো অনেক কিছুই সংক্ষেপে চলে এসেছে হারুকির তিনটি সাক্ষাৎকারে। যেমন: জ্যাজ মিউজিক, জগিং এবং বিড়ালের প্রতি তাঁর প্রীতি। তাছাড়া ইন্টারভিউ গুলো সচেতন পাঠকদের নিয়ে যাবে লেখকের পরাবাস্তবতা ও বাস্তবতার মিশেলে এক অদ্ভুত সুন্দর জগতে।
বক্তৃতায় প্রায় সমান পারঙ্গম যেন হারুকি মুরাকামি। পারমাণবিক শক্তির হাতে অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা এবং বর্তমানে দক্ষতা ও সুবিধার স্বার্থে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের প্রকৃতির প্রতি যে বিরুপ আচরণ তা বিভিন্ন ভঙ্গিমা, ইঙ্গিতের মাধ্যমে বলেছেন মুরাকামি। জেরুজালেম পুরস্কার গ্রহণের সময় সিস্টেম যাতে মানবজাতির ক্ষতি করতে না পারে সেই বিষয়ে মেটাফোর ব্যবহার করে সুন্দর বক্তব্য রেখেছেন লেখক।
স্মৃতিকথায় কিভাবে রান্নাঘরের টেবিলে বসে ফিকশন রাইটারের যাত্রা শুরু করেছিলেন তা অতি সুন্দরভাবে ব্যক্ত করেছেন লেখক। মুরাকামির লিজেন্ড বনে যাওয়াটায় যেন মুরাকামি নিজেই বিস্মিত এবং অপ্রস্তুত বোধ করেন। তাছাড়া জাপানিজ হওয়ার পরও নিজ দেশের ফিকশন ও লেখকদের সাথে তাঁর একধরণের বিচ্ছিন্নতা এবং হারুকির মুখচোরা স্বভাবের কথাও স্মৃতির পটে আঁকা হয়ে আছে। জ্যাক লন্ডনের প্রতি তাঁর ট্রিবিউট ভালো লেগেছে।
আলভী আহমেদের অনুবাদ বেশ ঝরঝরে। এরকম প্রাঞ্জল ভাষার প্রতি মুরাকামিরও বরাবরের মতই মনোযোগ ছিল, আছে। হারুকি মুরাকামির উপর এই গ্রন্থটি সংকলন, সম্পাদনা ও অনুবাদ কর্ম করতে গিয়ে আলভী প্রচুর পরিশ্রমের পাশাপাশি সহজবোধ্যতায় কিংবদন্তি এই লেখকের মনস্তত্ত্ব ও জীবন ফুটিয়ে তুলেছেন। আলভী আহমেদ পুনরুক্তি দোষে দূষ্ট যাতে গ্রন্থটি না হয় সেটিকে সতর্ক থেকেছেন সংকলনে। মিনিমালিস্ট এপ্রোচে সম্পাদনায় দুর্দান্ত কাজ করেছেন আলভী।
যারা হারুকি মুরাকামির বই পড়েছেন এবং যারা এখন পর্যন্ত তাঁর কোন বই পড়েননি ( এই যেমন আমি ) আমার মনে হয় দুটি পক্ষের জন্যই দারুন এক কাজ হয়েছে বইটিতে। বাতিঘরের সুন্দর প্রোডাকশন এবং চমকপ্রদ বুক টপিক সিলেকশন বরাবরের মতই ভালো লেগেছে।
বুক রিভিউ
হারুকি মুরাকামি : সাক্ষাৎকার, বক্তৃতা ও স্মৃতিকথা
সংকলন, সম্পাদনা ও অনুবাদ : আলভী আহমেদ
প্রথম প্রকাশ : অক্টোবর ২০২২
প্রকাশক : বাতিঘর
প্রচ্ছদ : আরাফাত করিম
রিভিউয়ার : ওয়াসিম হাসান মাহমুদ
বইটি তিন অংশে বিভক্ত। সাক্ষাৎকার অংশটি বেশ বেশ উপভোগ্য। লেখালেখিতে তাঁর অভিষেক, মুরাকামির নিজস্ব রাইটিং ক্রাফ্ট এবং এর পিছনের দর্শন ছাড়াও আরো অনেক কিছুই সংক্ষেপে চলে এসেছে হারুকির তিনটি সাক্ষাৎকারে। যেমন: জ্যাজ মিউজিক, জগিং এবং বিড়ালের প্রতি তাঁর প্রীতি। তাছাড়া ইন্টারভিউ গুলো সচেতন পাঠকদের নিয়ে যাবে লেখকের পরাবাস্তবতা ও বাস্তবতার মিশেলে এক অদ্ভুত সুন্দর জগতে।
বক্তৃতায় প্রায় সমান পারঙ্গম যেন হারুকি মুরাকামি। পারমাণবিক শক্তির হাতে অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা এবং বর্তমানে দক্ষতা ও সুবিধার স্বার্থে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের প্রকৃতির প্রতি যে বিরুপ আচরণ তা বিভিন্ন ভঙ্গিমা, ইঙ্গিতের মাধ্যমে বলেছেন মুরাকামি। জেরুজালেম পুরস্কার গ্রহণের সময় সিস্টেম যাতে মানবজাতির ক্ষতি করতে না পারে সেই বিষয়ে মেটাফোর ব্যবহার করে সুন্দর বক্তব্য রেখেছেন লেখক।
স্মৃতিকথায় কিভাবে রান্নাঘরের টেবিলে বসে ফিকশন রাইটারের যাত্রা শুরু করেছিলেন তা অতি সুন্দরভাবে ব্যক্ত করেছেন লেখক। মুরাকামির লিজেন্ড বনে যাওয়াটায় যেন মুরাকামি নিজেই বিস্মিত এবং অপ্রস্তুত বোধ করেন। তাছাড়া জাপানিজ হওয়ার পরও নিজ দেশের ফিকশন ও লেখকদের সাথে তাঁর একধরণের বিচ্ছিন্নতা এবং হারুকির মুখচোরা স্বভাবের কথাও স্মৃতির পটে আঁকা হয়ে আছে। জ্যাক লন্ডনের প্রতি তাঁর ট্রিবিউট ভালো লেগেছে।
আলভী আহমেদের অনুবাদ বেশ ঝরঝরে। এরকম প্রাঞ্জল ভাষার প্রতি মুরাকামিরও বরাবরের মতই মনোযোগ ছিল, আছে। হারুকি মুরাকামির উপর এই গ্রন্থটি সংকলন, সম্পাদনা ও অনুবাদ কর্ম করতে গিয়ে আলভী প্রচুর পরিশ্রমের পাশাপাশি সহজবোধ্যতায় কিংবদন্তি এই লেখকের মনস্তত্ত্ব ও জীবন ফুটিয়ে তুলেছেন। আলভী আহমেদ পুনরুক্তি দোষে দূষ্ট যাতে গ্রন্থটি না হয় সেটিকে সতর্ক থেকেছেন সংকলনে। মিনিমালিস্ট এপ্রোচে সম্পাদনায় দুর্দান্ত কাজ করেছেন আলভী।
যারা হারুকি মুরাকামির বই পড়েছেন এবং যারা এখন পর্যন্ত তাঁর কোন বই পড়েননি ( এই যেমন আমি ) আমার মনে হয় দুটি পক্ষের জন্যই দারুন এক কাজ হয়েছে বইটিতে। বাতিঘরের সুন্দর প্রোডাকশন এবং চমকপ্রদ বুক টপিক সিলেকশন বরাবরের মতই ভালো লেগেছে।
বুক রিভিউ
হারুকি মুরাকামি : সাক্ষাৎকার, বক্তৃতা ও স্মৃতিকথা
সংকলন, সম্পাদনা ও অনুবাদ : আলভী আহমেদ
প্রথম প্রকাশ : অক্টোবর ২০২২
প্রকাশক : বাতিঘর
প্রচ্ছদ : আরাফাত করিম
রিভিউয়ার : ওয়াসিম হাসান মাহমুদ