গর্ভাবস্থার প্রথম ১-৩ মাস (প্রথম ত্রৈমাসিক) মায়ের এবং অনাগত শিশুর বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কিছু বিশেষ যত্ন এবং করণীয় রয়েছে:
১. সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা
প্রথম তিন মাসে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি:
- ফলেট (ফোলিক অ্যাসিড): এটি শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শাকসবজি, ডাল, কমলা, এবং ফোলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট খাওয়া প্রয়োজন।
- প্রচুর পানি পান: প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা।
- পর্যাপ্ত প্রোটিন: ডিম, মাছ, মুরগির মাংস এবং ডাল জাতীয় খাবার।
- আয়রন এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার: লাল মাংস, সবুজ শাকসবজি, এবং দুধ জাতীয় খাবার।
২. চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা
- গর্ভাবস্থার নিশ্চিত হওয়ার পরপরই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
- প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা (আল্ট্রাসনোগ্রাফি, রক্ত পরীক্ষা ইত্যাদি) করান।
- ফোলিক অ্যাসিড এবং প্রয়োজনীয় প্রেগন্যান্সি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন।
৩. শারীরিক সক্রিয়তা এবং বিশ্রাম
- অতিরিক্ত ক্লান্তি এড়িয়ে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
- হালকা হাঁটাহাঁটি বা হালকা যোগব্যায়াম করলে উপকার পাওয়া যায় (চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে)।
৪. প্রাথমিক অস্বস্তি সামলানো
প্রথম ত্রৈমাসিকে বমিভাব, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি ইত্যাদি সাধারণ সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব সামলাতে:
- একবারে বেশি খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খান।
- তেল-চর্বিযুক্ত ও মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
- আদা বা লেবু চা খেলে বমিভাব কমতে পারে।
৫. ক্ষতিকর অভ্যাস থেকে দূরে থাকা
- ধূমপান এবং অ্যালকোহল একেবারেই বন্ধ করতে হবে।
- কাঁচা বা আধাপাকা খাবার এবং রাস্তার খাবার এড়িয়ে চলুন।
৬. মানসিক যত্ন
- নিজেকে মানসিকভাবে শান্ত রাখুন।
- পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান এবং ইতিবাচক চিন্তা করুন।
৭. চিকিৎসকের সতর্কবার্তা মেনে চলা
- যদি পেটে ব্যথা, রক্তপাত বা অন্য কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দেয়, দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
এই সময় মায়ের শরীর এবং মানসিক অবস্থার প্রতি যত্নশীল হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।