আবদুর রাজ্জাক সাপাহারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। লক্ষ্য একটিই। তাঁর বস বদরুদ্দীন মন্ডলের দ্বিতীয় বিবাহের ব্যবস্থা করা। পাঁচু ময়রার দেয়া পত্রিকায় 'পাত্র চাই' বিজ্ঞাপন রাজ্জাককে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে টেনে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে বিভিন্ন বিপাক এবং বিভ্রান্তিতে জড়িয়ে পড়ে আবদুর রাজ্জাক। আবার তাকে উদ্ধার করতে ঢাকা থেকে সাপাহার যাত্রা করেন মালিনী।
এদিকে কার সেন্টারের মালিক মন্ডলের মনে এখনো রয়ে গেছেন প্রাক্তন স্ত্রী নাতাশা। স্মার্ট নাতাশা আপাত দৃষ্টিতে একটু ক্ষ্যাত বদরুদ্দীন মন্ডলকে ত্যাগ করে চলে গেছেন কেভিন কস্টনারের কাছে।
বড় অদ্ভুত এক উপন্যাস পড়া শেষ হল আমার। যৌথভাবে লিখিত এই উপাখ্যানে আছে অনেক চরিত্র। ঘটু ভাই আছেন, আছেন করুণানিধি ও এমাবাদী। মালিনীর মত ইন্টারেস্টিং চরিত্রও আছে। দুই প্রজন্মের এবং দুই মেরুর দু'জন লেখক মিলে লিখেছেন এই নভেল। উক্ত উপন্যাসে দুই রাইটারের মধ্যেই মনে হয়েছে যোগাযোগের সমস্যা আছে। অনেকটা ইচ্ছেকৃত মনে হয়।
ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম উপন্যাসের বড় অংশটি লিখেছেন। আরেকদিকে প্রতিষ্ঠানবিরোধী ভাবমূর্তির অধিকারি ব্রাত্য রাইসু জায়গায় জায়গায় সারপ্রাইজ এনট্রি দিয়েছেন। দু'জনে মিলে সুখপাঠ্য একটি বই রচনা করেছেন। এক যুগেরও আগের লিখা এই উপন্যাসে রাইসুর প্রমিত ভাষায় কিছু লেখা দেখা যাবে। তবে উপন্যাস যতই অগ্রসর হয়েছে বর্তমানে ব্রাত্য যে ভাষায় লিখেন অনেকটা সেরকমের দিকে ধাবিত হয়েছে তার লেখনী।
আধুনিক মানুষের অন্যতম প্রধান সমস্যা গুলোর একটি মনে হয় যোগাযোগের সমস্যা। এবং এটি গভীর। পুরো উপন্যাসে উক্ত প্রব্লেমটি বারবার এসে দেখা দিয়েছে। চরিত্রগুলোর পারস্পরিক ডায়নামিক্স ভালো লেগেছে। মফস্বলের মানুষের জীবন, ঢাকা, মডার্ণ লোকজনের চিন্তাভাবনার সাথে বাস্তব জীবনে প্রয়োগের প্যারাডক্স সুন্দরভাবে লিখেছেন সৈয়দ সাহেব এবং ব্রাত্য রাইসু্। মজার বিষয় হল এই উপন্যাসে তারা দু'জনও আছেন। পাঠকের সাথে যোগাযোগের একটা নিরীক্ষাধর্মী প্রচেষ্টা বরাবরের মতই ছিল দুই লেখকের মাঝেই। সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের বিখ্যাত কারো কারো উল্লেখ এবং উপস্থিতি পাঠক পেতে পারেন এই নৈরাজ্যকর কিন্তু সুখ-দুঃখ-যাপন এবং স্থানে স্থানে ডার্ক হিউমার থাকা উপন্যাসটিতে। বইয়ের ফ্ল্যাপে রাইসুর ভিন্নরকম এক পরিচয় পাওয়া যায় যা বর্তমান অনেক ফেসবুক ইউজার হয়তো জানেন না।
যেকোন বইয়ে বা কথায় শ্রোতা-পাঠকের সাথে যোগাযোগের সমস্যা থাকতেই পারে। টেক্সট এমন একটি বিষয় যা এক এক জনের কাছে ভিন্ন ভিন্ন রূপে ধরা দেয়। সেটি লেখক, বইয়ের চরিত্র, পাঠক, আমি-আপনি সবার মধ্যেই হতে পারে এই গভীর সমস্যার সৃষ্টি। দিনশেষে আমরা সবাই কয়েকজন একা একা লোক-ই।
বই রিভিউ
যোগাযোগের গভীর সমস্যা নিয়ে কয়েকজন একা একা লোক
লেখক : সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও ব্রাত্য রাইসু
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০১০
প্রকাশনা : সন্দেশ
প্রচ্ছদ : ব্রাত্য রাইসু
জঁরা : উপন্যাস
রিভিউয়ার : ওয়াসিম হাসান মাহমুদ
এদিকে কার সেন্টারের মালিক মন্ডলের মনে এখনো রয়ে গেছেন প্রাক্তন স্ত্রী নাতাশা। স্মার্ট নাতাশা আপাত দৃষ্টিতে একটু ক্ষ্যাত বদরুদ্দীন মন্ডলকে ত্যাগ করে চলে গেছেন কেভিন কস্টনারের কাছে।
বড় অদ্ভুত এক উপন্যাস পড়া শেষ হল আমার। যৌথভাবে লিখিত এই উপাখ্যানে আছে অনেক চরিত্র। ঘটু ভাই আছেন, আছেন করুণানিধি ও এমাবাদী। মালিনীর মত ইন্টারেস্টিং চরিত্রও আছে। দুই প্রজন্মের এবং দুই মেরুর দু'জন লেখক মিলে লিখেছেন এই নভেল। উক্ত উপন্যাসে দুই রাইটারের মধ্যেই মনে হয়েছে যোগাযোগের সমস্যা আছে। অনেকটা ইচ্ছেকৃত মনে হয়।
ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম উপন্যাসের বড় অংশটি লিখেছেন। আরেকদিকে প্রতিষ্ঠানবিরোধী ভাবমূর্তির অধিকারি ব্রাত্য রাইসু জায়গায় জায়গায় সারপ্রাইজ এনট্রি দিয়েছেন। দু'জনে মিলে সুখপাঠ্য একটি বই রচনা করেছেন। এক যুগেরও আগের লিখা এই উপন্যাসে রাইসুর প্রমিত ভাষায় কিছু লেখা দেখা যাবে। তবে উপন্যাস যতই অগ্রসর হয়েছে বর্তমানে ব্রাত্য যে ভাষায় লিখেন অনেকটা সেরকমের দিকে ধাবিত হয়েছে তার লেখনী।
আধুনিক মানুষের অন্যতম প্রধান সমস্যা গুলোর একটি মনে হয় যোগাযোগের সমস্যা। এবং এটি গভীর। পুরো উপন্যাসে উক্ত প্রব্লেমটি বারবার এসে দেখা দিয়েছে। চরিত্রগুলোর পারস্পরিক ডায়নামিক্স ভালো লেগেছে। মফস্বলের মানুষের জীবন, ঢাকা, মডার্ণ লোকজনের চিন্তাভাবনার সাথে বাস্তব জীবনে প্রয়োগের প্যারাডক্স সুন্দরভাবে লিখেছেন সৈয়দ সাহেব এবং ব্রাত্য রাইসু্। মজার বিষয় হল এই উপন্যাসে তারা দু'জনও আছেন। পাঠকের সাথে যোগাযোগের একটা নিরীক্ষাধর্মী প্রচেষ্টা বরাবরের মতই ছিল দুই লেখকের মাঝেই। সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের বিখ্যাত কারো কারো উল্লেখ এবং উপস্থিতি পাঠক পেতে পারেন এই নৈরাজ্যকর কিন্তু সুখ-দুঃখ-যাপন এবং স্থানে স্থানে ডার্ক হিউমার থাকা উপন্যাসটিতে। বইয়ের ফ্ল্যাপে রাইসুর ভিন্নরকম এক পরিচয় পাওয়া যায় যা বর্তমান অনেক ফেসবুক ইউজার হয়তো জানেন না।
যেকোন বইয়ে বা কথায় শ্রোতা-পাঠকের সাথে যোগাযোগের সমস্যা থাকতেই পারে। টেক্সট এমন একটি বিষয় যা এক এক জনের কাছে ভিন্ন ভিন্ন রূপে ধরা দেয়। সেটি লেখক, বইয়ের চরিত্র, পাঠক, আমি-আপনি সবার মধ্যেই হতে পারে এই গভীর সমস্যার সৃষ্টি। দিনশেষে আমরা সবাই কয়েকজন একা একা লোক-ই।
বই রিভিউ
যোগাযোগের গভীর সমস্যা নিয়ে কয়েকজন একা একা লোক
লেখক : সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও ব্রাত্য রাইসু
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০১০
প্রকাশনা : সন্দেশ
প্রচ্ছদ : ব্রাত্য রাইসু
জঁরা : উপন্যাস
রিভিউয়ার : ওয়াসিম হাসান মাহমুদ