অদ্য যাকে দেখছি,
মনের খাঁচায় পুষছি,
এ কী ঢঙের নূতন খোলসের
রুক্ষ আচ্ছাদন তার!
সদ্য উন্মোচিত কুসুমের ন্যায়
যার স্নিগ্ধতা আলোড়িত হতো
অকূল প্রফুল্লতায়,
ধরিত্রী'র কোন অভিশাপে,
কোন প্রলয়ঙ্কারী ধূলিঝড়ে,
করল সে শামুকের খোলস বরণ?
অবারিত প্রান্তরের দুরন্ত বাতাসে,
নবীন তৃণদলে নাচত যে চরণ,
সময় তো হারায়নি সে আয়োজন,
তবে আজ এ কেমন তার প্রাণের ধরন?
চিরচেনা চঞ্চলা উজ্জ্বল মুখপানে
যার বয়ে চলত হাসির ঝর্নাধারা,
নির্মল ললাটে তার সংশয়ের ভাঁজ
অনিশ্চয়তায় কাতর ও জর্জরিত সে আজ।
করব উপেক্ষা? থাকব ভুলে?
এতে যে নেই কোনো প্রতিকার।
সামান্য ধূলার আক্রমণে রত্ন
ছুঁড়ে ফেলবার সাধ্য কার?
শত রজনী সাক্ষ্য দেবে,
সে যে বাল্যসখা আমার!
কৈশোরের আদি হতে
নিশীথ আমি জেগেছি বহু,
তবু কল্পলোকের কাঞ্চনযানে
সে বিনা কেউ চড়েনি কভু।
দিবাস্বপ্নের সে প্রণয়কামনা,
ভবিষ্যৎ যত বাসনা,
আজ ধরল এ কেমন রূপ;
ভাবলে তাকে শিউরে উঠি,
দিগ্বিদিক স্বনিমন্ত্রণে মেতে ওঠে
যন্ত্রণায় চিরঅন্ধকার শত কূপ!
আবারও দেখতে পাব কি তার
সে স্বচ্ছ সরলা সংস্করণ?
উদার শরতের নির্মলতা ছেঁড়ে
আজ এ কেমন তার প্রাণের ধরন!
অন্তরে রোপণ করি অনন্ত প্রতীক্ষা,
জাগুক হৃদয়ে হারানো আলোক শিখা,
মুছে যাক মনের বিষাদ আঁধার।
ফিরে আসুক সে উচ্ছ্বাসের গান,
গুড়িয়ে যাক তার শুষ্ক খোলস,
মুক্ত হোক সে পাথুরে প্রাণ।
পাক পুনর্জন্ম সেই চিরপরিচিতা দীপ্তি,
এই মোর ব্যাকুলতা, এই মোর আর্তি।