সাজু ভালোবাসা
কলেজে আজ রনির প্রথম দিন , কলেজ ছিলো তার স্বপ্ন। নিতান্ত এক গরিব ঘরের ছেলের জন্য কলেজে পড়া বড় কঠিন বেপার। কিন্তু আজ তার স্বপ্নপূরনের দিন ,আজ বেশ খুশি রনি। নিজের জিবনের সব থেকে বড় ইচ্ছে পূরন হলে কার না আনন্দ লাগবে না। কিন্তু কলেজে এসে বেশিক্ষণ খুশি থাকতেপারেনি রনি ,মনে পড়ছে পুরাতন বন্ধু কিংবা সহপাঠীদের। এত বড় কলজে কেউ নেই তার সঙ্গী একা ,স্বপ্ন পুরন হলে অতীত এর জন্য ছিলো এক বিশেষটান। কলেজের প্রথম দিনটা এভাবে কাটালেন রনি। কলেজ শেষ বাড়ি আসবে আশার পড়ে পুরাতন সহপাঠী মিম এর সাথে দেখা। মিম তার স্কুল জিবনেরসহপাঠী ,কিন্তু মিমের পাশে ছিলো নতুন আরো ২ টা মেয়ে। তারা মিম এর নতুন বান্ধবী। তাদের সাথে পরিচয় হয় রনির। একি এলাকার বাসিন্দা তারা তাইখুব তাড়াতাড়ি মিশে গেলো তারা। যাওয়ার পথে অনেক গল্প গুজব হয়। তাদের মাঝ থেকে একটা মেয়ের কথা বিশেষ আকষন করে রনিকে। মেয়েটার নাম(সাজু) ,সাজু দেখতে অপরুপা সুন্দরী ,তাকে দেখে যে কেউ তার প্রেমে পড়বে। কিন্তু রনি সেদিগে লক্ষ করে নাই মুগ্ধ হয়েছে সাজু কথা। সাধারণ মেয়েটা,সাধরন চলাফেরা আর সাধারণ কথাবার্তা রনির মনে একটা অনুভব তৈরি করে। কিন্তু রনি বিষয়টা এডিয়ে গেলেন। অনেক দিন কেটে গেলো রনি সাজুদেখা হয় না। রনিও ভুলে গেছে সাজুর কথা। কিন্তু একদিন একটা মেয়ে তার সোশ্যাল মিডিয়ায় একাউন্টে এড করে রনিকে। প্রথমে রনি মেয়েটাকে চিনতেপারে নাই , পরে মেয়েটা পরিচয় দিলে চিনতে পারে। মেয়েটা ছিলো সাজু ,সাজু তাকে পড়া শুনার খবর নিতে এড করে। কিন্তু তারা একটু একটু কথা বলতেবলতে তাদের মধ্যে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু টা বন্ধুতের সম্পর্ক। সাজু রনিকে মাঝে মাঝে জিগ্যেস করতো ,(তোমার কি মনের মানুষ আছে? ) রনি বিষয়টা এডিয়ে চলতো। তার নিজের ও জানা ছিলো না যে সে কি কাউকে আদো ভালোবাসে কিনা। তাই এ বিষয় সে সব সময় এডিয়ে চলতো। তাদেরমাঝে একটা ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়। একদিন রনি নেট আসে নাই সারা দিন ,রাতে যখন রনি রাতে খাবার খাচ্ছে তখন দেখে একটা অপরিচিত নাম্বারথেকে কল আসে। রনি কলটা ধরতে ই চেনা একটা কন্ঠ শুনতে পায় ,সে বুঝতে পারে এটা সাজু। এটা ছিলো প্রথম রনি আর সাজুর প্রথম ফোন আলাপ।সাজু রনিকে সারাদিন নেট না আসার কারন জিগ্যেস করে। এভাবে কথা বলতে বলতে তারা রাত ২ টা পযন্ত কথা বলে। এর মাঝে প্রতিদিন এর মতোসেদিন ও সাজু রনিকে জিজ্ঞেস করে রনির মনের মানুষ কে। রনি বলতে চায় নি প্রতিদিন এর মত সেদিন এডিয়ে যেতে চাইলে ও সাজু অনেক চাপ দিচ্ছেরনিকে। এক প্রকার বাধ্য হয়ে বলে তুমি আমার মনের মানুষ। রনি কথাটা মজা করে বলে ,,কিন্তু বলার পর ফেরত ও নিতে পারে নাহ ,কেন জানি মনে হচ্ছেসত্যি সাজুকে রনি ভালোবাসে। কিন্তু রনি ভাবে এটা না বুঝি আমার বন্ধুত্ব না ভেঙ্গে দেয়। তাই রনি বলে আজকের পর হয় তো তুমি আমার থেকে দূরেথাকবা ,আমার সাথে কথা বলবা না। তখন সাজু বলে আজকের পর আমি আরো বেশি কথা বলমু। আর এভাবে তাদের সম্পর্ক গভীর হতে লাগলো।একের পর এক স্বপ্ন দেখতে লাগলো। রনি ছিলো সাজুর জন্য একদম পাগল। সেউপর নিচ বুঝতো না বুঝতো শুধু সাজু। নিজের হাতে আগলে রাখতোসাজুকে।নিজের থেকে বেশি সাজুকে নিয়ে ভাবতো। সাজুর ভালো লাগা খারাপ লাগা সব কিছুতে গুরুত্ব দিতো। সাজু এমন মানুষ প্রত্যাশা করতো। যেতাকে গুরুত্ব দিবে যে তাকে সম্মান করবে কেয়ার করবে। আর এসব কিছু রনির মধ্যে ছিলো। রনি একটু বেশি পাগলাটে ছিলো সাজুর জন্য। সাজুকে নাদেখে রনি ঘুমাতে পারতো না। প্রতিদিন ভিডিও কল এ দেখে তারপর ঘুমাতো। কলজে গিয়ে রনি ক্লাস নাহ করে সাজুর ক্লাসের জানালায় দাড়িয়ে থাকতো,সাজএকে মন ভরে দেখতে। বাংলা ক্লাস এক সাথে হতো সাজুর পাশে বসতো কাছ থেকে সাজুকে দেখবে বলে। সাজু সাথে তার ভাব প্রকাশ করবে বলে।কলেজ শেষে কলেজ রোড় আড্ডা আর বেল পুরি দিলো তাদের নৃত্যদিনের সঙ্গী। কত সত আবেক ময় ২ টা বছর কাটালো তারা। একদিন সাজু রনিকেবলে,সে ঢাকা যাবে তারা চাচা আসবে দেশে। তার চাচাকে নিতে ঢাকা এয়ারপোর্টে যাবে। আর আগে কখনো সাজু ঢাকা যায় নি তাই সে খুব ই আনন্দিতছিলো। তার এ খুশির খবর রনিকে বলে, কিন্তু রনি তার ই সিদ্ধান্ত মত দেয়নি। জিবনের প্রথম কোন সিদ্ধান্ত তারা একে অপরের বিপরীত। কিন্তু রনি কিকরবে ভাবলে ভালোবাসা মানুষ খুশি হবে তার খুশি নষ্ট করে আমি ভালো থাকতে পারবো নাহ। রনি বুকে পাথর বেদে তার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। আর এসিদ্ধান্ত টা রনি সাজুর জিবনে কাল হয়ে দাড়িয়েছে। সাজু ঢাকা যায় পর তার মোবাইল টা কেউ চিন্তায় করে নিয়ে যায়। যার ফলস্বরূপ রনি সাজুরযোগাযোগ অপ হয়ে যায়। এ দিগে রনি সাজু দেখা ছাড়া ঘুমাতে পারে নাহ। এমন করে বেশ কিছু কাটার পর একটা সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কিনে সাজু। যেমোবাইল টা দিয়ে মোটামুটি যোগাযোগ করা গেলেও মন মতো কথা বলা যেতো না। তার পর ও তারা মানিয়ে মিয়েছে কিছু দিন সুখে ছিলো। কিন্তু কথায়আছে সুখ বেশিদিন সয় নাহ তাই তাদের সুখ আর বেশি থাকে নাই। হটাৎ সাজু মা ,সাজুর বিয়ের কথা বলছে অন্য জায়গায়। তখন তারা বাধ্য হয়ে তারফ্যামিলিকে সব খুলে বলে কিন্তু ,তার পরিবার কোন মতে রাজি হয় নাই। কারন রনি ছিলো গরিব আর বেকার ,একজ। বেকার ছেলেকে কে তার মায়ে দিবে।রনি প্রায় পাগলের মতো হয়ে যায়। নিজের ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার জন সে এদিগ সেদিগ চাকরির জন্য খুজে। অনেক কষ্টে বিকাশ এর মার্কেটিংডিপার্টমেন্ট এ ছোট একটা চাকরি নেয়। চাকরি পেয়ে রনি সাজুকে বলে ,সাজু ও খুশি ছিলো। সাজু তার মাকে জানাতে বলে, কিন্তু তার মা না করে দেয়তাদের সরকারি চাকরি জীবী লাগবে। রনি অনেক চেষ্টা করেছে একরা সরকারি চাকরি জন্য। কিন্তু তখন রনি ইন্টারমেডিয়েট পাস ও কের নাই কিছু দিন পরএচ এস সি পরিক্ষা। মাথায় অনেক চাপ নিয়ে ও সাজুকে ছাড়ে নেই রনি সাজুকে। সাজু ও কথা দিয়ে ছিলো শেষ পযন্ত পাশে থাকবে।
কিন্তু তাদের মধ্যে সব সময় ঝগড়া ঝামেলা চলতে থাকে। কারন ভয় ,সাজুকে হারনো ভয় রনি আদ পাগল হয়ে গেছে। রনি সাজুকে পালিয়ে নতুন জিবনশুরুর কথা বলে। কিছু সাজু রাজি না ,সাজু যায় পরিবার মেনে নিক। আর সেই চেষ্টা করতে বলে ,,কিন্তু রনি চেষ্টার কমতি রাখেনি। সাজুকে পাওয়ার একটাপদ সেটা হলো পালিয়ে যাওয়া। এমন পেসার নিয়ে রনি এক্সাম দেয় আর সেই ইন্টারমিডিয়েট ফেল করে। কিন্তু সাজু পাস করে এগিয়ে যায় ,সাজু সব আশাহারায় ফেলছে। সাজু বুঝে গেছে কোন লাভ নেই রনিকে পাওয়া আর সম্ভব হবে না। তাই সাজু নিজেকে গুছাতে শুরু করে ,রনি অবহেলা করতে শুরু করেরনি এগুলো নিতে নাহ পরে একদিন নিজেকে শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়। রনি বিষ পান করে কিন্ত ভাগ্যবশত বার বন্ধু সাথে থাকায় আল্লাহর রহমতে রনিবেচে ফিরেন। সাজুর শেষ পযন্ত থাকার কথা থাকলে সে থাকতে চায় না আর রনির সাথে। সব অস্বীকার করতে লাগে। রনি যেনে এক নতুন সাজুকেচিনতে শুরু করে। এগুলো দেখে রনি আর ভয়ে পাগল হয়ে যায়
বাধ্য হয়ে একদিন সাজুর ভাইয়ের কাছে সাজুকে ভিক্ষা চাইতে যায়। রনি ভাবে সব সত্যি বললে হয়তো তার ভাই তাদেরকে মনে নিবে। তাই রনি আরসাজুর এক সত্যকে প্রকাশ করে রনি। আসলে রনি সাজুকে বিয়ে করে ,বিয়েটা কোন সাধারণ ভাবে ছিলো নাহ ,রনি একদিন সাজুকে বিয়ে করার জন্য চাপদেয় কারন সে বুঝতে পারে যেগুলো করছে সব ই ইসলামে দৃষ্টিতে জেনা। তাই তারা জেনা থেকে বাচতে রনি সাজুকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সাজুপরিবারের অজান্তে বিয়ে করতে চায়নি। রনি অনেক বুঝিয়ে একটা সময় তাকে রাজি করায়। আর এই সত্যি টা শুধু রনি আর সাজু ছাড়া কেউ জানতোনাহ। আর এ সত্যি টা রনি সাজুর ভাইকে বলে। যেটার উচিল্লা ধরে সাজু সব কিছু কে ভেঙে রনিকে ছেড়ে দেয়। কখন খরব নেয়নি কেমন আছে রনি।অন্যদিগে রনি সাজুকে হারানো বেদনায় দিনের পর দিন র্নিঘুম কাটায়। বিড়ি ,সিগারেট আর নেশায় আষ্কত হয়ে পড়ে। রনি নিজে তিলে তিলে শেষকরতারছে। অন্য দিগে সাজু তার নতুন সংসার সাজাতে ব্যাস্ত। সব ওয়াদা ,প্রতিশ্রুতি ভেঙে দিয়ে সাজু আজ সুখের খুজে। অন্য দিগে মৃত্যু নিয়ে খেলাকরতে রনি। রনি হয়তো সাজুকে ক্ষমা করে দিবে ,কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কি ছেড়ে দিবে। তবে এখনো রনি সাজুকে ভালোবাসে। রনি চায় সাজু সুখে থাক। কিন্তুঅন্যকে কষ্ট দিয়ে কি নিজেকে সুখে রাখা যায়। জিবনের কোন না সময় মানুষ তার কর্মফল ভোগ করতে হবে। সৃষ্টি কর্তা ছেড়ে দেয় কি ছাড় দেন না। একটাছেলের সুন্দর ভবিষ্যৎ নষ্ট করে নিজেকে কয়দিন সুখে রাখবে সাজু। এমন হাজারো রনি পৃথিবীতে আছে যাদের কে এমন সাজুরা শেষ করে দিয়ে যায়। র্নিষয়করে দেয়। ভালো থাকু তারপর ও সকল সাজু ,সুখে থাকুক ভালো থাকুক।।।।