শুরুর কথা
২১ মে ২০২৪
আরিফ রহমান
আলাপটা শুরু হওয়া উচিত ছিলো গৌতম বুদ্ধের কাছ থেকে। কারণ আজকে এইখানে দাঁড়িয়ে আসলে আমি নতুন করে নিজের জীবনদর্শনকে খোঁজ করতে আসি নাই। আমি মূলত প্রচণ্ড দুঃখে ছিলাম।আলাপটা শুরু হওয়া উচিত ছিলো গৌতম বুদ্ধের কাছ থেকে। কারণ আজকে এইখানে দাঁড়িয়ে আসলে আমি নতুন করে নিজের জীবনদর্শনকে খোঁজ করতে আসি নাই। আমি মূলত প্রচণ্ড দুঃখে ছিলাম। এতো বেশি দুঃখ- যে আমার মনে হচ্ছিলো এই দুঃখ থেকে মুক্তি পেতে যা করা লাগে আমি করবো। জীবনকে শেষ করে দিয়েও যদি এই দুঃখ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তাও আমি করে দেখতে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলাম!
এই টালমাটাল যখন আমার একমাত্র জীবনের অবস্থা তখন আমার সাথে ‘সেই অর্থে’ পরিচয় হয় গৌতম বুদ্ধের সাথে। সেই অর্থে বললাম কারণ বুদ্ধকে আমি আগেও চিনতাম। বুদ্ধকে কে না চেনে? চেনে সবাই। কিন্তু বুদ্ধকে জানতে পেরেছেন খুব অল্প মানুষই। খুব বেশি লিবার্টি নিয়ে কথাটা বলতে পারছি এ কারণে যে- বুদ্ধকে জানলে পৃথিবীতে এতো বিবাদ থাকে না, থাকে না এতো বিষাদ।
বুদ্ধ তো কোন স্পিরিচুয়াল গুরু নন। বুদ্ধ মূলত একজন কার্যকরণপন্থী বিজ্ঞানী, আবার একজন দার্শনিক। আমার মনে হয়েছে দর্শন আর বিজ্ঞানকে উনি সমতায় গেঁথেছেন। আর বুদ্ধের সব দর্শন কিংবা বিজ্ঞানের মূল খোঁজাখুজিটা দুঃখকে দূর করার চেষ্টার ভেতরে নিহিত। এই বইয়ের পাতায় পাতায় তাই বুদ্ধ ফিরে ফিরে আসবেন।
তবে দর্শনের প্রস্তুতিপর্বের ছাত্র হিসেবে আপনার আমার একটা জিনিস খুব ভালোভাবে খেয়াল রাখা জরুরী। আপনি-আমি মোহমুক্ত থাকছি তো? মানুষের প্রবণতাই হচ্ছে তার পছন্দের চিন্তাকে সে পূজো করতে চায়। সেই চাহিদা থেকেই বোধয় বুদ্ধও পূজিত হন অনেক স্থানে। কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য তো পূজো নয়। আজকে আমাদের উদ্দেশ্য কেবল সত্যকে বোঝা। যেই সত্য আমাদের দুঃখকে মেটাবে।
কিন্তু আদৌ দুঃখ থেকে কি মুক্তি আছে?