Posts

গল্প

মিঃ ক্ষেত — পর্ব ৩

April 24, 2025

MD shak

Original Author : ইকবাল হোসেন

110
View

এক মুহূর্তও দাঁড়িয়ে না থেকে আমি সামনের দিকে এগোতে লাগলাম।

আর সামনে এগোতেই দেখি— আমার পাশে বসা নীলা নামের মেয়েটি ক্যাম্পাসের একেবারে প্রান্তে বসে আছে। আমি ওর দিকে এগিয়ে গেলাম।

— আ... চমকে... আপনি? (নীলা) — জী। তা আপনি এখানে কী করছেন? (আমি) — কিছু না... বসুন। (নীলা) — জী। (আমি)

চেয়ারে বসে বললাম—

— আপনি একা কেনো? আপনার কোনো বন্ধু-বান্ধব তো দেখছি না। (আমি)

আমি কথাটা বলতেই নীলার চেহারা নিমেষে কালো হয়ে গেলো। বুঝে নিলাম, ওর হয়তো কেউ নেই। আমি নিজের থেকে হাত বাড়িয়ে দিলাম।

নীলা ভয়ে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে রইল। আমি বললাম—

— আমি তো এখানে নতুন ভর্তি হয়েছি... আমি কি আপনার বন্ধু হতে পারি? (আমি)

আমার কথায় সে হা করে তাকিয়ে থাকল, তারপর একটু হাসি দিয়ে নিজের হাত বাড়িয়ে দিলো।

— কী হলো? (নীলা)

আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম, বন্ধুত্বের প্রস্তাব দিয়ে ফেলেছি। হুঁশ ফিরে বললাম—

— না না, কিছু না... তো... (আমি)

এইভাবে আমি আর নীলা বন্ধু হলাম। বন্ধুত্ব গ্রহণ করার পর বললাম—

— আচ্ছা, আপনাকে তো একা দেখছি। আপনার কোনো বন্ধু-বান্ধব নেই নাকি? (আমি)

— যেহেতু এখন আপনি আমার বন্ধু, তাহলে আপনাকে বলা যায়... আসলে আমার কোনো বন্ধু নেই। (নীলা)

— কেন? (আমি)

— এখানে যার টাকা আছে, তারই বন্ধু হয়। আমি গরিব ঘরের মেয়ে, তাই আমার কেউ নেই। (নীলা)

— আচ্ছা... আমিও তো গরিব ঘরের ছেলে। (আমি)

— তাতেও সমস্যা নেই। আচ্ছা, আপনার নামটা তো বলেননি। (নীলা)

— ঐ যে স্যারকে বলেছিলাম, সেইটা... মানে ইকবাল। (আমি)

— ও, মনে পড়েছে। ইকবাল! (নীলা) — জী। (আমি)

— আর আমার নাম নীলা। (নীলা)

— হ্যাঁ, একটু আগেই জানলাম। (আমি)

— কীভাবে? (নীলা)

— ঐ যে, যখন কয়েকজন মেয়ে আপনার সাথে কথা বলছিল, তখন শুনেছিলাম। (আমি)

— হা হা হা... আচ্ছা। (নীলা)

— আচ্ছা, আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি? (আমি)

— জী, বলুন। (নীলা)

— ঐ মেয়েরা আপনাকে অনেক কথা বলল, কিন্তু আপনি কিছু না বলে চলে এলেন কেন? (আমি)

— আপনি তাহলে সব শুনেছেন... (নীলা)

— হ্যাঁ, কিন্তু আপনি কেন কিছু বললেন না? (আমি)

— যদি আমি কিছু বলতাম, তাহলে আমার আব্বু-আম্মুর স্বপ্ন আর পূরণ হতো না। (নীলা)

— মানে? (আমি)

— নিপা নামের মেয়েটির আব্বু অনেক প্রভাবশালী। আমি যদি কিছু বলি, তাহলে ওর আব্বুর প্রভাবে আমাকে টিসি দিয়ে ভার্সিটি থেকে বের করে দিতে পারে। (নীলা)

— ও... এত ক্ষমতা! (আমি)

— হ্যাঁ। (নীলা)

— কিন্তু আপনার আব্বু-আম্মুর স্বপ্ন পূরণ না হওয়ার সাথে এর সম্পর্ক? (আমি)

— হ্যাঁ, আমার আব্বু-আম্মুর ইচ্ছে— আমি বড় হয়ে ডাক্তার হবো। তাই আমি এই ভার্সিটিতে ডাক্তারি পড়ছি, যেমনটা আপনি পড়ছেন। (নীলা)

— ও আচ্ছা, এবার বুঝতে পারলাম। (আমি)

— আমরা তো অনেকক্ষণ ধরে কথা বলছি, কিছু খাচ্ছি না। আপনি কিছু খাবেন? (নীলা)

— হ্যাঁ, আমি বলছি ওয়েটারকে। (আমি)

ওয়েটারের উদ্দেশে—

— আমাদের দুইটি বার্গার দিন তো। (আমি)

— জী। (ওয়েটার)

আমি অর্ডার দেওয়ার পর দেখি, নীলা আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

— কী ব্যাপার, আপনি এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? (আমি)

— না মানে... কিছু না। (নীলা)

ঠিক তখনই ওয়েটার বার্গার নিয়ে হাজির।

— এই নিন। (ওয়েটার)

বার্গার নিতে যাচ্ছি, দেখি নীলা যেন ব্যাগে কিছু খুঁজছে। আমি না দেখার ভান করে বার্গারটা রেখে দেই। খাওয়ার জন্য এগোতেই—

নিপা নামের মেয়েটিও সেখানে হাজির!

নিপাকে ক্যাম্পাসে দেখেও মনে মনে বললাম—

"আমি ওর এমন কী ক্ষতি করেছি, যে আমার পিছু ছাড়ছে না..."

আমি কিছু বলতে যাবো, ঠিক তখনই নিপা বলে উঠলো—

চলবে...

Comments

    Please login to post comment. Login