পোস্টস

বাংলা সাহিত্য

‘রৌজা’ গীতিকবিতা পর্ব (৭)

২৫ মে ২০২৪

আযাহা সুলতান

মূল লেখক আযাহা সুলতান

৩১ 

‘কপাল’ ‘কপাল’ করে সান্ত্বনা 

কপালে বিধি লিখেননি অজ্ঞতা, 

‘ভাগ্যে যা আছে ঘটবে ঘটনা’ 

         বদলায় না অমন বিধিলেখা। 

 

         বরাতের পরে নির্ভর করে 

         বসে থাকলে হবে কি ঘরে? 

চেষ্টা যদি হয় না অত তা 

         খণ্ডে কি কখনো দুঃখরেখা?। 

 

আদরের বন্ধন যত শক্ত হবে 

ততই বাড়বে মায়ার পিছুটান, 

দয়াপরবশের আদতে ধাবলে 

         কঠিন দলদল থেকে উত্থান। 

 

         সুলভে যদি পাওয়া যায় কিছু 

         ফেলনা তা—কদর নেই এতটু! 

অতি কষ্টে অর্জন না হলে হাঁ 

         বোঝা যায় না শ্রমের মর্যাদা॥ 

                  ১৭ ভাদ্র, ১৪২৪—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

৩২ 

দয়াময়, 

         পৃথ্বী শান্তির আবাস কর সুখময় 

হিংস্রমন হোক অহিংস অমিয়ময়—

                  দয়াময়! 

 

আজকে যে চারি দিকে দ্বন্দ্ববিগ্রহ 

         আজকে যে জাতিতে জাতিতে নিগ্রহ! 

পুড়ছে হিংসার দাবানলে জগন্ময় 

         তা হলে কি বুঝব কি দুষ্টের জয়? 

                  দয়াময়!। 

 

হৃদয়বান, 

         নিষ্ঠুরে নেই তোমার আদানপ্রদান 

তবে কেন ফুটছে অনিষ্টের কামান? 

                  হৃদয়বান! 

 

যেদিকে দেখি আজ ভালো দেখছি নে 

         যেদিকে দেখছি চলছে মন্দের প্রভাবনে! 

হত্যায় নেমেছে হত্যা যাদের কাম্য নয় 

         তা হলে কীসে অহিংস পরম ধর্ম হয়? 

                  দয়াময়!। 

                  ১৯ ভাদ্র, ১৪২৪—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

৩৩ 

আমি বুঝি না কোনটে আবেদ 

         কোথা প্রভেদ 

ঈশ্বর প্রভু আল্লাহ খোদা গড ভগবান। 

         আমি জানি না উঁচুনিচু কী ভেদ 

                  জাতীয় বিভেদ 

হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ ইহুদ খ্রিস্টান॥ 

 

         আমি জানি শুধু এটুকু 

                  বুঝি শুধু কান্না আর দুঃখ 

         মানি তিনিই একক—তিনিই পৃথক 

সকল জাতি ও সর্বনামের এক স্থান—

         হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ ইহুদ খ্রিস্টান॥ 

 

ওই তারা কত গোপনে খুঁজিছে 

         নীরবে ডাকিছে 

সেখানেও বলছে তিনি—আছি আছি। 

         এই এরা কী সাড়ম্বরে স্মরিছে 

                   প্রার্থনা করিছে 

এখানেও হাতছানি সেই—আমি আছি॥ 

 

         কোথা নেই তাঁর উপস্থিতি? 

                  কীসে নেই তাঁর প্রণয়প্রীতি? 

         বোঝাই কারে সুনীতি—কে শুনে সুকথা 

সবখানে তিনি ও সমান্তরালে অবস্থান—

         ঈশ্বর প্রভু আল্লাহ খোদা গড ভগবান॥ 

                  ২২ ভাদ্র, ১৪২৪—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

৩৪ 

ঘুমোতে পারি না বিন্দুমাত্রেক 

         ঘুমিয়ে গেছ কি বিশ্ববিবেক? 

দুনিয়া চলছে বিধ্বস্ত হতে 

মানুষে মানুষের যুদ্ধসংঘাতে॥ 

 

কী হবে নাজানি দুনিয়াতে আর 

         প্রলয় স্পষ্ট নিকটে দেখা যার! 

মানুষই উন্নতি মানুষই পতনেক 

মানুষই ধ্বংস মানুষই হিতেক॥ 

 

কত হবে আর পৃথিবীতে অশান্তি? 

         কত থাকব আর দুষ্টকরে জিম্মি? 

তুমি যদি চাও মুখ তুলে বারেক 

সৃষ্টি হতে পারে শান্তিভূ আরেক॥ 

                  ২৪ ভাদ্র, ১৪২৪—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

৩৫ 

কারে জানাব অভিযোগ 

         কারে বলি মনের দুখ 

কে আছে শোনার লোক 

                  কে দেবে সান্ত্বনাসুখ। 

 

মনে রইল মনের দরদ 

         প্রকাশি পাই নে পথ 

বয় না স্রোত মরানদ 

                  কীসে পাই সজলমুখ॥ 

 

দিলের জ্বালা বড় জ্বালা 

         গাঁথব কী প্রেমের মালা 

গাইব কী গান সুরেলা 

                  দুঃখে দুঃখে কণ্ঠ মূক। 

 

চৌদিকে ব্যথার কোলাহল 

         কোথা পাই সেই মনোবল 

ঘুমে শুনি কান্নার রোল 

                  অসহায়-শোকে ভাঙে বুক॥ 

                  ২৫ ভাদ্র, ১৪২৪—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম